মালদ্বীপে কী করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা?
কলম্বো থেকে যখন মালদ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা হই, তখন প্লেন ভর্তি বাংলাদেশি দেখে একটু অবাক হয়েছিলাম। তাদের দেখে অন্তত এতটুকু বুঝেছিলাম, এরা পর্যটক নয়।
যাই হোক, বিষয়টা বুঝলাম যখন মালদ্বীপ বিমানবন্দরে পৌঁছে দেখলাম আমাদের ফ্লাইট পৌঁছানোর আগে থেকেইে সেখানে আরও কয়েকশ’ বাংলাদেশি লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিদিনই নাকি এমন অনেক বাংলাদেশি হাজির হয় মালদ্বীপে। বুঝলাম না, এইটুকু দেশে এতো বাংলাদেশি কী করে! এরা কাজ পাবে তো!
হোটেলে পৌঁছে দেখলাম, হোটেলের কর্মীরা সবাই বাংলাদেশি। রাতে রাস্তায় হাঁটছিলাম, সবগুলো দোকানি বাংলাদিশি! অবাক থেকে অবাক হচ্ছে। মালদ্বীপের জনসংখ্যা মাত্র সাড়ে ৩ লাখ। খোঁজ নিয়ে জানলাম, ৯০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি কাজ করে এখানে। এরপরের দিনগুলো মালদ্বীপের যেখানেই গিয়েছি, অবশ্যই বাংলাদেশি পেয়েছি। আমাদের জন্য তাদের সেবায় কোনো কার্পণ্য ছিলো না।
মালদ্বীপের মানুষগুলো বাংলাদেশিদের ভালোবাসে। কোথাও তাদের ছোট করে কথা বলতে শুনিনি। আমাদরে ছয় দিনের সফরে মাত্র দুইজন বাংলাদেশি ট্যুরিস্ট দেখেছিলাম। শুনলাম, খুব বেশি বাংলাদেশি মালদ্বীপে বেড়াতে যায় না। মধ্যপ্রাচ্য, রাশিয়া, ইউরোপ আর চীনের কাছে ভ্রমণের জন্য খুবই আর্কষণীয় দেশ মালদ্বীপ। তাই পর্যটকনির্ভর এ দেশের আয় খুব ভালো।
মালদ্বীপে আমাদের বাংলাদেশি মানুষগুলো মাসে ক্ষেত্রবিশেষে দুইশ’ থেকে আটশ’ ডলার র্পযন্ত দেশে পাঠাতে পারে। যতগুলো বাংলাদেশির সাথে কথা বললাম, সবাই এক কথায় বলল- “কনে যাবো বাংলাদেশে? ভালোই তো আছি।” কেউ বলে- “আমরা এখানে এসে শিক্ষিত হয়েছি।” ঘটনা সত্য।
পর্যটকনির্ভর এই দেশে দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষ আসে, তাদের কল্যাণে আমাদের মানুষগুলোও শিক্ষিত হয়ে যায়। শিখতে পারে নতুন নতুন ভাষা আর আচার-ব্যবহার। একবারও কোন মালদ্বীপের মানুষকে কোনো বাংলাদেশির বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে শুনলাম না।
আরও মজার ব্যাপার, মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশি আর বাংলাদেশে থাকা বাংলাদেশিদের আচার-ব্যবহারের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য! পারিপার্শ্বিক অবস্থা মানুষের জীবনে কী ভূমিকা রাখে, বুঝতে বাকি থাকলো না।
পরিশেষে সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, মালদ্বীপের সাথে বাংলাদেশের কোন জনশক্তি রপ্তানির চুক্তি নেই। যদিও আমরা র্সাকভুক্ত দেশ, তবুও ওখানে বসবাসরত মানুষদের থেকে জানলাম, মালদ্বীপের সাথে আমাদের কূটনৈতিক সর্ম্পক যে খুব ভালো- তাও নয়। তাই ওখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা খুবই প্রশ্নবিদ্ধ এবং কখনো কোন সমস্যা হলে স্বাভাবিকভাবেই তারা দূতাবাসের সহযোগিতা পায় না।
মালদ্বীপের নিজস্ব কোনো উৎপাদন নেই। ৭০ শতাংশ পণ্য আমদানি হয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে, বাকিটা ভারত থেকে। বাংলাদেশ এই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারে। আসলে আমাদের উৎপাদন কিংবা রপ্তানি করার চেয়ে প্রতিবেশি দেশ থেকে আমদানিতেই যেন মনোযোগ বেশি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
যে কারনে যুক্তরাজ্য বিএনপির সম্মেলন স্থগিত
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে মাত্র এক সপ্তাহের নোটিশে যুক্তরাজ্য বিএনপিরবিস্তারিত পড়ুন
ইউরোপ থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে বাড়ছে চাপ !
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যভুক্ত বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে থাকা বাংলাদেশিদের ফিরিয়েবিস্তারিত পড়ুন
বাংলাদেশ থেকে তিন হাজার শ্রমিক নেবে সৌদি আরব
চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পেশার প্রায় ৩ হাজারবিস্তারিত পড়ুন