মাশরাফিদের প্রতি কেলি বারলোর অকৃত্রিম ভালোবাসা
মাঠের খেলায় জাতীয় ক্রিকেট দল সাফল্য পেলে উৎসবে মাতে গোটা বাংলাদেশ; আনন্দে ভাসেন কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী বাংলাদেশি। টাইগারদের সেই সাফল্য কোটি কোটি মাইল দূরে আরও একজনকে ঠিক একই রকম আনন্দে ভাসায়। মাশরাফি বিন মর্তুজার দলের জন্য সব সময় শুভ কামনা করেন সেই মানুষটি। তিনি কেলি বারলো। ওয়েলসের একজন সম্মানিত নারী। এরচেয়েও তার বড় পরিচয়টি হলো তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক কোচ এডি বারলোর বিধবা স্ত্রী। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রতি যার অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রমাণ মিলল সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপেও।
১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচিং ডিরেক্টর হিসেবেই যোগ দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক তারকা ক্রিকেটার এডি বারলো। বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তার। এ ছাড়া পিতৃসুলভ ব্যক্তিত্বের কারণে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কাছেও তিনি ছিলেন জনপ্রিয়। তার অধীনে বেশ ভালোই উন্নতি দেখিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু হঠাৎ করেই ভাগ্যের বিমাতাসুলভ আচরণ! ২০০০ সালে (বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার বছর) স্ট্রোকে আক্রন্ত হন এডি। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা শেষে তার আশ্রয় হয় হুইল চেয়ারে। এ সময় তাই বাংলাদেশ ছেড়ে ওয়েলসে চলে যেতে হয়েছিল তাকে। শেষ অব্দি ২০০৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে ৬৫ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে যেতে হয় এডি বারলোকে।
তবে এডি বারলোকে মনে রেখেছে বাংলাদেশ। মনে রেখেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজারাও। আর কেলি বারলোও মনে রেখেছেন বাংলাদেশকে; বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের। তাই তো এশিয়াকে বাংলাদেশ ফাইনালের ছাড়পত্র পাওয়ার পর যারপরনাই খুশি হয়েছিলেন কেলি। পুরো ম্যাচটি দেখেছেন গভীর উৎসাহে। সেখানে ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশ শিরোপা জিততে না পারলেও মাশরাফিদের উন্নতিতে দারুণ খুশি তিনি। কেলির বিশ্বাস তার প্রয়াত স্বামী এডি বারলোও স্বর্গ থেকে বসে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলা উপভোগ করেন। মাশরাফিদের সাফল্যে তিনিও পরপার থেকেই আনন্দে ভাসেন।
এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচটি শেষে কিছু মিডিয়াকর্মীকে কেলি বারলো বলেছেন, ‘বাংলাদেশ এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে তা দেখে আমি দারুণ খুশি। আমার বিশ্বাস এডিও স্বর্গ থেকে এটা দেখে খুশি হয়েছে। মাঝে লাঞ্চের জন্য কিছু সময় আমাকে বাইরে যেতে হয়েছিল। কিন্তু ম্যাচটি যাতে মিস না হয় তাই আইপ্যাডটি সঙ্গেই নিয়েছিলাম।’
কেলি বারলো আরও বলেছেন, ‘সেই ১৯৯৯ সাল থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের খেলাগুলো দেখে আসছি আমি। দুঃখজনকভাবে এডির স্ট্রোকের পর বাংলাদেশ থেকে চলে আসতে হয়েছিল আমাদের। কিন্তু বাংলাদেশে আসতে পারলে আমারও দারুণ অনুভূতি হয়। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও দেখেছি এডিকে মনে রেখেছে।’
এশিয়া কাপের ফাইনাল সম্পর্কে কেলি বারলোর মত হচ্ছে, ‘বাংলাদেশ দারুণ খেলেছে। ১২০ রান ম্যাচ জেতার মতো যথেষ্টই ছিল। তবে বোলিংয়ে বিশেষ করে সাকিব আল হাসান ও আবু হায়দার রনির ওভারে ম্যাচটি বাংলাদেশের কাছ থেকে বের করে নিয়েছে ভারত। এরপরও বাংলাদেশের পারফরম্যান্স প্রশংসার পাওয়ার মতোই।’
কেলি বারলো ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন ফাইনালে বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড় ছিলেন সাব্বির রহমান। কেননা, তিনি উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রেখে বাকি ব্যাটসম্যানদের (বিশেষ করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে) আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করার উপলক্ষ্য তৈরি করে দিয়েছিলেন।’
দিন-তারিখ নির্ধারিত না হলেও ইংল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে। কেলি বারলো অপেক্ষায় রয়েছেন ওই সিরিজটির জন্য। সেই সময় তিনি বাংলাদেশ সফরে আসতে চান; স্টেডিয়ামে বসেই উপভোগ করতে চান বাংলাদেশের খেলা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন