‘মাশরাফি ফুরিয়ে গেছেন’
মানুষের মন বড় অদ্ভুত। যে বিরাট কোহলি কিছুদিন আগে রানের বন্যা বইয়ে দিচ্ছিলেন, তখন তার প্রশংসায় সবাই পঞ্চমুখ। সেই কোহলি যখন খারাপ সময় পার করছেন, তাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করল! বিরাট কোহলি একটা উদাহারণ। উদাহারণটা দেওয়ার উদ্দেশ্য বাংলাদেশ জাতীয় ওয়ানডে দলের ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নিয়ে কিছু কথা বলা।
একটি কথা সকলেই জানেন, মাশরাফি ক্রিকেটারের চাইতেও একজন অনুপ্রেরণাদায়ী মানুষ হিসেবে দারুণ সমাদৃত। ইনজুরিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বার বার ঘুরে দাঁড়ানো যার স্বভাব। এই মাশরাফির অসাধারণ, অনন্য নেতৃত্বগুণে দেশের মাটিতে টানা ৬ সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। কেবল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটা জিততে জিততে হেরে গেছে। তারপর আসল নিউজিল্যান্ড সফর। তিন ফরম্যাটে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার সেই দুঃসহ স্মৃতি। সাথে সাথেই শুরু হয়ে গেল মাশরাফির খুত বের করা। না, মাশরাফি নির্ভূল কোনো ব্যক্তি নন। এমন কোনো মানুষ নেই যার ভুল না হয়। কিন্তু তাই বলে কি একটা সিরিজ কিংবা তিনটি ম্যাচ দিয়ে তার যোগ্যতা নির্ণয় করা উচিত?
নিউজিল্যান্ডে যে কন্ডিশনে খেলেছিল বাংলাদেশ; এখন আয়ারল্যান্ডে তার চেয়ে খারাপ কন্ডিশনে খেলছে। কিউইদের দ্বিতীয় সারির দলটার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জিততে পারেনি। যথারীতি শুরু হয়ে গেল মাশরাফিকে নিয়ে প্রশ্ন। অথচ উপমহাদেশের কন্ডিশনে শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে যখন তিন ফরম্যাটেই সিরিজ ড্র করল বাংলাদেশ; তখন প্রশংসার অন্ত ছিল না। ম্যাশ টি-টোয়েন্টি থেকে আকস্মিক অবসরের ঘোষণা দেওয়ার পর ভক্তদের প্রতিবাদ ও ভালোবাসা প্রকাশের অন্ত ছিল না। কিন্তু কয়েকটি দিনের ব্যবধানে আমরা কীভাবে সবকিছু ভুলে যাই?? বড় অদ্ভুত লাগে!
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, যখন বলা হয় বোলার মাশরাফি ফুরিয়ে গেছেন! দলে নাকি তিনি কেবল অধিনায়ক হিসেবেই দায়িত্ব পালন করেন! বিশেষ করে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউজিল্যন্ডের কাছে গত বুধবার পরজয়ের পর ক্রিকেট বিশ্লেষক থেকে শুরু করে অনেক ক্রিকেটপ্রেমীরাই এ কথা বলছেন। এই লেখাটি এই কারণেই লেখা। বিতর্কে না গিয়ে কিছু পরিসংখ্যান দেওয়া যাক। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফরে ৩ ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছেন ম্যাশ। ইকনোমি রেট ছিল যথাক্রমে ৫.০০, ৫.৫০ এবং ৬.৫০।
চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজে এখন পর্যন্ত দুই ম্যাচে বল করার সুযোগ পেয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খরুচে ছিলেন। দলও হেরেছে। সেটা কি তার একার ব্যর্থতা নাকি দলগত ব্যর্থতা? বিচারের দায়িত্ব পাঠকদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হলো। তবে গতকাল শুক্রবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৬.৩ ওভার বল করে ১ মেডেনসহ ১৮ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। মুস্তাফিজের কাটার জাদুর কাছে হয়তো এটা ঢাকা পড়ে গেছে। কিন্তু মাশরাফি ফুরিয়ে যাননি। প্রমাণ চান?
পায়ে ৭টা অপারেশনের পর ওয়ানডে ফরম্যাটে মাশরাফিই এখন বাংলাদেশের সর্বাধিক উইকেট শিকারী। ১৭২ ম্যাচে তার উইকেট ২২৭ টি। ক্যারিয়ারে মেডেন নিয়েছেন ১১২টি। একজন পেসার হিসেবে গড় ২৯.৮০ এবং ইকনোমি ৪.৭২। ২ ম্যাচ কম খেলে ২২২ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন স্পিনার কাম বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। মেডেন নিয়েছেন ৭৬টি। গড় ২৮.৮১ এবং ইকনোমি ৪.৭৩। এরপরও কি বলা যায়, ক্যাপ্টেন মাশরাফি ফুরিয়ে গেছেন? মাশরাফির সবচেয়ে বড় শত্রুও বোধহয় বলবে না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন