মাড়ি থেকে রক্ত পড়ছে?
ডা. আহমাদ বুলবুল :
দাঁতের গোড়া বা মাড়ি থেকে রক্ত পড়া এ সমস্যা প্রায়ই শোনা যায়। রোগী সাধারণত দাঁত ব্রাশ করার সময় বুঝতে পারেন তার মাড়ি থেকে রক্ত বের হচ্ছে। এই রক্ত বের হওয়া খুব সাধারণভাবে নেওয়া উচিত নয়। কারণ রক্ত বের হওয়া একটা লক্ষণ মাত্র। মাড়ির রোগ যথা জিনজিভাইটিস ও পেরিওডোন্টাইটিস’র ঝুঁকি থেকেই যায়। এছাড়াও কোনো জটিল রোগে আক্রান্ত যেমন লিউকেমিয়া, প্লাটিলেট ডিজঅর্ডার, ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রেও রোগীদের মাড়ি থেকে রক্ত পড়তে পারে।
মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার কারণ: মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার প্রধান কারণ হিসেবে প্লাগকে (খাদ্যকণা ও ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে এক প্রকার আঠালো দ্রব্য) দায়ী করা হয়। প্লাগ মাড়ির মার্জিন করার আঠালোভাবে লেগে থাকে এবং এক পর্যায়ে তা কঠিন পাথরে রূপধারণ করে যা পরবর্তী সময়ে মাড়ি প্রদাহ রোগ জিনজিভাইটিস রূপ নেয়। এবং এ পর্যায়ে দাঁত থেকে রক্ত পড়তে থাকে। যদি চিকিৎসা না করানো হয় তাহলে এর ব্যাপ্তি বেড়ে যায় তখন মাড়ি এবং Jaw bone (দাঁত যে হাড়ের সঙ্গে লেগে থাকে) আক্রান্ত হয় তখন একে পেরিওডোন্টাইটিস বলে।
এই রোগ হলে রোগীরা দাঁতের গোড়ায় পাথর (calculus) দেখতে পায়। মাড়ি ফুলে যায়, ব্যথা হয় এবং সামান্য আঘাতেই মাড়ি থেকে রক্ত পড়তে থাকে। এই অবস্থা অনেক দিন চলতে থাকলে বা চিকিৎসার কোনোপ্রকার উদ্যোগ না নিলে Jaw bone হাড় ক্ষয় হয় এবং দাঁত নড়তে থাকে, এক পর্যায়ে দাঁত পড়ে যায়।
মাড়ি থেকে রক্তপড়ার অন্যান্য কারণ
১. রক্ত সম্পর্কিত কোনো রোগ থাকা।
২. সফ্ট টুথব্রাশ ব্যবহার না করা।
৩. হরমোনের তারতম্য হওয়া গর্ভকালীন সময়ে।
৪. আইডো পেডিক ব্রাম্ব সাইটি কপার পুরা।
৫. দাঁত অথবা মাড়ি সংক্রান্ত রোগ।
৬. স্কার্ভি ভিটামিন-সিডেফিসিয়েনন্সি।
৭. ভিটামিন-কেডেফিসিয়েনন্সি।
৮. এসপিরিন জাতীয় ওষুধ সেবন করা।
৯. অনেক সময় আঘাতজনিত কারণে মুখ বা মাড়ি থেকে এ ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসা পদ্ধতি: এই রোগের লক্ষণ দেখার পরপরই ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। স্কেলিংয়ের মাধ্যমে দাঁতের গোড়া থেকে ক্যালকুলাস ফেলে দিতে হবে। প্রয়োজন মতো metronidazal (৪০০, ২০০) কিনে ৩ বার করে ৫ দিন সেবন করা যেতে পারে। এছাড়া আরো সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য CBC এবং এক্স-রে করা যেতে পারে।
প্রতিকারের উপায়: আমরা সম্পূর্ণ প্রতিকার করতে না পারলেও কমাতে পারি।
তামাক জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে।
যে স্থান থেকে রক্ত বের হচ্ছে এ রকম স্থানে গজ কাপড়ের সাহায্যে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চাপ দিতে হবে।
-যদি ভিটামিনের অভাবজনিত লক্ষণ থাকে তাহলে অতিরিক্ত ভিটামিন অথবা সি সেবন করতে হবে।
-ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এসপিরিয়ন জাতীয় ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।
-প্রয়োজন মতো মাড়ি মেসেজ করতে হবে।
– সফ্ট টুথব্রাশ ব্যবহার করতে হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
রেড মিট খাওয়ার আগে কিছু পরামর্শ জেনে নিন
কোরবানি ঈদে বেশ কয়েকদিন টানা খাওয়া হয় গরু বা খাসিরবিস্তারিত পড়ুন
জাপান ও ইউরোপে বিরল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ
জাপানে, একটি বিরল “মাংস খাওয়া ব্যাকটেরিয়া” এর কারণে এক রোগবিস্তারিত পড়ুন