শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

‘মা, আমি মরে গেলে তুই কি কান্দবি?’

cats

কিশোরী সম্পা আর বর্ণার মধ্যে ভীষণ সখ্য। একই গ্রামে বাড়ি। ছাত্রী তারা একই স্কুলের, একসঙ্গে স্কুলে যেতো, বেঞ্চে বসতোও পাশাপাশি, তাদের রোল নম্বরও আগে পরে। সম্পার ২৪ আর বর্র্ণার ২৫। এতো মিল দুই জনের। এমনকি জীবনটাও তারা দিয়ে দিলো একসঙ্গে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সম্পার ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে তারা দুজনই।

ওই দুই কিশোরীর বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ শাহাপুর এলাকায়। বর্ণার বাড়ি থেকে ৮-১০টি বাড়ি পরই সম্পার বাড়ি। তারা পার্শ্ববর্তী বেলঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়তো।

এক কিশোরী মৃত্যুর আগে তার মাকে বলেছিলো, সে মারা গেলে তার মা কাঁদবে কি না। এই কথাটি বলে ওই নারীকে বিলাপ করতে দেখা গেলো তার বাড়িতে গিয়ে।

উচ্ছ্বল আর প্রাণবন্ত কিশোরী দুটি কেন জীবনের ওপর উৎসাহ হারালো- তাদের চলে যাওয়ার পর থেকেই জবাব খোঁজার চেষ্টা করছেন স্বজন আর পরিচিতজনরা। আর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, একজন পৃথিবী ছেড়েছে উত্ত্যক্তের শিকার হয়ে, আর অন্যতম প্রেমে ব্যর্থতার হতাশা থেকে।

প্রেম করে ব্যর্থ হয়েছিল উম্মে মারিয়া সম্পা। আর স্থানীয় এক বখাটের উত্যক্তে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল তামিমা খাতুন বর্ণা। তাই তারা দুজনই ‘সুইসাইড নোট’ লিখে গেছে।

প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার হতাশা থেকে আত্মহত্যা

image-7901

বুধবার বেলা ১২টার দিকে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তখনও ময়নাতদন্ত শেষে দুই কিশোরীর লাশ গ্রামে ফেরেনি। পুরো এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অসংখ্য নারী-পুরুষ জড়ো হয়ে বসে দুই কিশোরীর মৃত্যু নিয়ে কথা বলছেন। আর দুই বাড়ি থেকে ভেসে আসছে কান্নার রোল।

সম্পার মা শরিফা বেগম জানান, এক বছর আগে শাহাপুর পশ্চিমপাড়ার এক যুবকের সঙ্গে তার মেয়ের ভালোবাবাসর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বয়স কম হওয়ায় তিনি মেয়েকে বোঝাতেন। মন দিয়ে পড়াশোনা করতে বলতেন। কিন্ত ওই যুবকের জন্য মেয়েটি ছিল উতলা।

শরিফা বেগম ভাবতেন, বয়স বাড়লে মেয়ে ভালমন্দ বুঝতে শিখবে। তখন মাথা থেকে ‘প্রেমের ভূত’ এমনিতেই নেমে যাবে।

শরিফা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কয়েকদিন আগে সম্পার সঙ্গে সম্পর্ক অস্বীকার করে ওই যুবক। আমাকে বলেছিল কলেজে পড়া একটা মেয়ের সঙ্গে সে নতুন করে প্রেম করছে। তখন থেকেই সে আনমনা ছিল।’

সম্পার মা জানান, তার মেয়েটি কিছুদিন আগেই মৃত্যুর ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছিল। মেয়েটি তাকে বলেছিল, ‘মা, আমি মরে গেলে কী তুই কান্দবি? আমি মরে গেলে মা … (ওই যুবককে) জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়বি।’

এলাকার বাসিন্দারা জানালেন, ওই যুবকের সঙ্গে মেয়েটির সম্পর্কের বিষয়টি সবাই জানেন। রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজে অর্থনীতিতে প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করেন তিনি। পাশাপাশি সম্পার স্কুলের সামনের একটি কিন্ডার গার্টেনে শিক্ষকতা করেন। ঘটনার পর থেকে তাকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না।

উত্ত্যক্তের শিকার বর্ণা
df

বর্ণার বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার মা সাবিনা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, বেলঘরিয়া এলাকার কিশোর মুন্না তার মেয়েকে বিরক্ত করত। রাস্তা-ঘাটে বন্ধুদের নিয়ে পথ আটকে প্রেমের প্রস্তাব দিত। কয়েকদিন আগে এলাকার এক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে মুন্না পরপর তিনদিন তাদের বাড়িতে যায়। তিনদিন তিন রকম অজুহাত নিয়ে সে বাড়িতে যায়। কিন্তু বর্ণা তার সঙ্গে দেখাও করেনি, কথাও বলেনি।

বর্ণার স্কুলেই পড়াশোনা করতো মুন্না। এ বছর এএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফেল করেছে সে। তবে ওই স্কুলের সামনেই বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিত। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে বর্ণার পিছু নিত সে। এ নিয়ে এলাকার লোকজনও তাকে নিষেধ করেছিল কয়েকবার। কিন্তু সে বর্ণাকে বিরক্ত করেই যেত। বর্ণা-সম্পার আত্মহত্যার পর এই মুন্নাও লাপাত্তা।

প্রতিবেশীরা জানান, বর্ণা ও সম্পার মরদেহ উদ্ধারের সময় পুলিশ ঘর থেকে দুটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার করে। সম্পার সুইসাইড নোটে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকা যুবকের নাম আছে। আর বর্ণারটিতে আছে মুন্নার নাম। এছাড়া সম্পার হাতের তালুতেও কলম দিয়ে ওই যুবকের নাম লেখা ছিল।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার সাদাত নান্নু ও ইউসুফপুর ইউনিয়নের সদস্য নাজিম উদ্দিন জানান, যে দুই যুবকের নাম এসেছে তারা খুব দুষ্ট প্রকৃতির। তাদের নামে এলাকায় মেয়েদের উত্যক্ত করার অনেক অভিযোগ আছে। দুই কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পর তারা গা-ঢাকা দিয়েছে।

বর্ণা ও সম্পার স্কুলের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরুল হক বলেন, অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির মেয়ে দুটি খুবই ঘনিষ্ঠ ছিল। যা করতো, একসঙ্গে করতো। তিনি বলেন, তারা আত্মহত্যা করার পর সম্পার প্রেম ও বখাটেদের বিষয়টি তিনি শুনছেন। তবে এর আগে তিনি কিছুই শোনেননি। আগে জানলে তিনিই অনেক কিছু করতে পারতেন।

12
নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, উদ্ধার করা ‘সুইসাইড নোট’ দুটির তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তবে সেগুলোতে কী লেখা আছে তা তদন্তের স্বার্থে জানাতে চাননি তিনি।

দুই কিশোরীর আত্মহত্যার ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। এ ঘটনায় কাউকে আটকও করা হয়নি। তবে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন

আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন

নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন

নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন

  • কুড়িগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী
  • সিলেটে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
  • চালু হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত হাট
  • রায়পুরায়  বিএনপির প্রায় ১০০ নেতা কর্মী আ’লীগে যোগদান
  • সিলেটে ৯ ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
  • সকাল থেকে ঢাকায় বৃষ্টি
  • রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুই নারীর আত্মহত্যা
  • ছুটি শেষে কর্মচঞ্চল আখাউড়া স্থলবন্দর
  • নোয়াখালীতে অস্ত্র ঠেকিয়ে কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ
  • নান্দাইলে চাচাতো ভাইয়ের হাতে চাচাতো ভাই খুন
  • সিলেট বিভাগের বন্যা ভয়ঙ্কর রুপ নিচ্ছে
  • সবুজবাগে পরিবেশমন্ত্রীর সেলাই মেশিন বিতরণ