বিবিসি বাংলার খবর
‘মা ইলিশ রক্ষার জন্য যুদ্ধ চলছে’

বাংলাদেশে মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য বেশ জোরেশোরে নেমেছে মৎস্য অধিদপ্তর।
এখন ইলিশ মাছ ধরার উপর যে নিষেধাজ্ঞা চলছে সেটিকে তারা বেশ কঠোরভাবেই প্রয়োগ করছেন।
মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জাহিদ হাবিবের বর্ণনায় মা ইলিশ রক্ষার জন্য এখন এক ধরনের ‘যুদ্ধ চলছে’।
তিন সপ্তাহের এ নিষেধাজ্ঞার দু’সপ্তাহ পার হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার দায়ে প্রায় ৯০০ জেলেকে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।
চলতি বছর বাজারে ইলিশ মাছের দাম বিগত বছরগুলোর তুলনায় খানিকটা সস্তা হওয়ায় এ নিয়ে মানুষের উৎসাহ এবং আগ্রহ বেড়েছে।
মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, ইলিশ মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্যই সরকার বেশ জোরালোভাবে এ অভিযান পরিচালনা করছে।
মি: হাবিব বলেন, “বরিশাল অঞ্চলে দেখবেন ওখানে যুদ্ধ চলছে। মা ইলিশ রক্ষার জন্য আটটি সংস্থা কাজ করছে। নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড, র্যাব, পুলিশ, নৌ-পুলিশ – সবাই কাজ করছে।”
সবগুলো সংস্থা দিন-রাত মিলিয়ে পালাক্রমে নদীতে টহল দিচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মি: হাবিব বলেন যাদের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে তারা নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে অবগত ছিলেন।
কিন্তু তারপরেও তারা মাছ ধরতে নদীতে নেমেছিল। যারা নদীতে মাছ ধরার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে তাদের কারাদণ্ড বা জরিমানা করা হচ্ছে।
তিনি দাবী করেন, যাদের জেল-জরিমানা করা হয়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ পেশাদার মৎস্যজীবী নয়।
তবে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার জেলেদের সচেতনতা বেড়েছে বলে মনে করেন কর্মকর্তারা।
কারণ এবার যত জেলেকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে, পূর্বের বছরগুলোতে সে সংখ্যা আরো অনেক বেশি ছিল।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের ইলিশ মাছ বিষয়ে গবেষক ড: আনিসুর রহমান জানালেন, মা ইলিশ যাতে ডিম ছাড়তে পারে সেজন্য প্রতি বছর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে প্রায় তিন সপ্তাহ দেশের সাত হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে।
তিনি বলেন, “একটি ইলিশ একবারে গড়ে দশ থেকে বারো লক্ষ ডিম ছাড়ে। ভেবে দেখুন এটা কত বড় একটা বিষয়”।
ছোট ইলিশ মাছ যাতে বড় হতে পারে সেজন্য প্রতি বছর মার্চ-মে মাস পর্যন্ত ইলিশ মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকে।
এছাড়া ইলিশ মাছ যাতে ডিম ছাড়তে পারে সেজন্য অক্টোবর মাসে তিন সপ্তাহের জন্য নিষেধাজ্ঞা থাকে।
প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন অতীতে বিভিন্ন সময়ে এসব নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে প্রয়োগ করা না হলেও এখন হচ্ছে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মণ্ডল জানালেন, জেলেরা যাতে নিষেধাজ্ঞা মেনে চলে সেজন্য সেখানে প্রায় ৪২ হাজার জেলে পরিবারকে প্রতি বছর মার্চ-মে মাস পর্যন্ত প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে চাল দেয়া হয়।
এছাড়া অক্টোবর মাসে তিন সপ্তাহের জন্য প্রতিটি জেলে পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে।
কিন্তু সরকারের এ ধরনের সহায়তা পর্যাপ্ত নয় বলে উল্লেখ করছেন জেলেরা ।
বরিশালের একজন মৎস্যজীবী বাবুল হাওলাদার বলেন, মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকার সময়ে প্রতি জেলে পরিবারকে মাসে ৬০ কেজি চাল এবং নগদ দুই হাজার টাকা দেবার দাবি করা হয়েছিল।
জেল-জরিমানার আশঙ্কায় বেশিরভাগ জেলে নদীতে না নামলেও কেউ-কেউ সেটি উপেক্ষা করছেন।
মি: হাওলাদার বলেন, “অসহায় হইয়া তারা নদীতে জাল ফেলায়। দুই-একটা টুকিটাকি ঘটনা ঘটে”।
মা ইলিশ এবং জাটকা রক্ষার জন্য বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইলিশের উৎপাদন ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানালেন মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
এ ধারা অব্যাহত থাকলে ইলিশের উৎপাদন আরো বাড়বে বলে তারা মনে করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ব্যাংকক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদবিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকবির ম্যুরাল থেকে কালি মুছে দিল উপজেলা প্রশাসন
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরালে কালি দিয়ে মুখবিস্তারিত পড়ুন

ফখরুল: ইউনূস–মোদির বৈঠক আশার আলো দেখাচ্ছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন