মা-বাবার বয়সের সঙ্গে যুক্ত সন্তানের অটিজম
কিশোরী অবস্থায় মা হলে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের ব্যবধান বেশি হলে কিংবা বেশি বয়সে মা-বাবা হলে সন্তানের অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাঁচটি দেশে ৫৭ লাখ শিশুর ওপর পরিচালিত বিশাল এক গবেষণা থেকে সম্প্রতি অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (এএসডি) সম্পর্কে এই তথ্য উঠে এসেছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে আইএএনএস। এই গবেষণায় বলা হয়েছে যে, বেশি বয়সে মা-বাবা হয়েছেন এমন দম্পতিদের সন্তানের এএসডি-তে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। এএসডি বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হলে শিশুদের মধ্যে যোগাযোগ অক্ষমতা, বারবার একই রকম আচরণ করতে থাকা এবং সামাজিক মেলামেশায় অনীহা তৈরি হয়।
এএসডি সংক্রান্ত বিশাল পরিসরের এই গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী মলিকিউলার সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত হয়। ওই গবেষণাপত্রের অন্যতম রচয়িতা স্নায়ু-মনোবিজ্ঞানী আব্রাহাম রাইখেনবার্গ। নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাইয়ে আইকান স্কুল অব মেডিসিনের এপিডেমিওলোজিস্ট হিসেবে দায়িত্বরত তিনি। আব্রাহাম রাইখেনবার্গ বলেন,‘এই গবেষণায় আমরা প্রথমবারের মতো দেখিয়েছি যে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের ব্যবধান বেশি থাকার সঙ্গে সন্তানের অটিজমের ঝুঁকি জড়িয়ে আছে।’
বিশ বছর বয়সে বাবা হয়েছেন এমন পুরুষদের তুলনায় পঞ্চাশের দিকে যাঁরা বাবা হয়েছেন এমন পুরুষদের সন্তানের মধ্যে অটিজমের হার প্রায় ৬৬ শতাংশ বেশি। আর বিশের তুলনায় চল্লিশের দিকে বাবা হওয়া পুরুষদের সন্তানের ক্ষেত্রে এই হার ২৮ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে, বিশ বছরে মা হওয়া নারীদের তুলনায় চল্লিশে মা হওয়া নারীদের সন্তানের মধ্যে অটিজমের হার প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। আবার বিশে মা হওয়া নারীর তুলনায় কিশোরী অবস্থাতেই মা হওয়া নারীদের সন্তানের ক্ষেত্রে অটিজমের হার ১৮ শতাংশ বেশি।
মা ও বাবা দুজনেরই বয়স বেশি হলেও সন্তানের মধ্যে অটিজমের ঝুঁকি আরও বেড়ে যেতে পারে। কেননা, এ ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ উভয়ের দিক থেকেই এই ঝুঁকির আশঙ্কা বাড়ছে। আবার স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বয়সের ব্যবধান বেশি হলেও সন্তানের অটিজমের ঝুঁকি বাড়তে পারে। বিশেষত স্বামীর বয়স ৩৫ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে এবং স্ত্রী তার চেয়ে ১০ বছরেরও বেশি ছোট হলে তাদের সন্তানের অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
এসব তথ্য হাজির করে গবেষকেরা বলছেন যে,‘এই ফলাফল থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, মা-বাবার বয়সের সঙ্গে সন্তানের অটিজমের ঝুঁকির অনেকগুলো কার্যকারণ সম্পর্ক থাকতে পারে। ভবিষ্যৎ গবেষণাগুলোতে হয়তো সেই সব কার্যকারণগুলো আবিষ্কার করা সম্ভব হতে পারে। ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেন, ইসরায়েল ও অস্ট্রেলিয়ার ৫৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৯৪ শিশুর স্বাস্থ্য তথ্য ও তাদের মা-বাবার বয়সসহ আনুষঙ্গিক তথ্য-উপাত্ত নেওয়া হয় এই গবেষণায়। ১৯৮৫ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে জন্ম নিয়েছে এই শিশুরা। দেশগুলোর জাতীয় স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তাদের স্বাস্থ্য-নথি এবং অটিজম নির্ণয় সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করেন গবেষকেরা। দেখা গেছে দেশগুলোর এই শিশুদের মধ্যে ৩০ হাজারেরও বেশি এএসডি-তে আক্রান্ত।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন