মিষ্টি-ফুলে ভরপুর মিরাজের বাড়ি
মিরপুরে ইংল্যান্ডকে হারানোর পরপরই বিভিন্ন স্তরের মানুষ ছুটছে খুলনার খালিশপুরের একটি বাড়িতে। কেউ ফুল, কেউবা মিষ্টি হাতে হাজির। লোকের ভিড় সামলাতে বাড়ির বাইরে পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। বাড়িতে এত লোকের আনাগোনার কারণ হলো বাড়িটি ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজের।
আজ মিরপুরে ১০৮ রানে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ ম্যাচে ১২ উইকেট পেয়েছে। চট্টগ্রামেও অভিষিক্ত টেস্টে পেয়েছে ৭ উইকেট।
জয়ের পর বাড়িতে অনেক লোক আসতে থাকায় মিরাজের বাড়ির বাইরে রাস্তার পাশে কিছু চেয়ার দিয়ে করা হয়েছে বসার ব্যবস্থা। মানুষ আসছে আর সেখানেই তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন মিরাজের বাবা। আর মিরাজের মা ও ছোট বোন বাড়ির ভেতরে। তবে উৎসুক মনগুলোকে ঘরে থাকতে দিচ্ছে না। তাই মাঝেমধ্যেই বাইরে চলে আসছেন তাঁরা। হবেই বা না কেন! এত মানুষের ভিড় তো আর কখনো দেখেননি তাঁরা। তবে এ মানুষের যন্ত্রণাকে তাঁরা নিয়েছেন ভালোবাসা হিসেবে। এ ভালোবাসা মিরাজের প্রতি এলাকাবাসীর। এ ভালোবাসা মিরাজের বাবার প্রতি সাধারণ মানুষের।
মেহেদী হাসান মিরাজ আজ বাংলাদেশের গর্ব। অভিষেক টেস্টেই ভেলকি দেখিয়েছেন ব্রিটিশদের। তাঁর হাত ধরেই এসেছে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট জয়। হয়েছেন ম্যাচ ও সিরিজ সেরা।
মিরাজের বাবা মো. জালাল হোসেন অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, মিরাজের কৃতির অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। শুধু যাঁর বাবা এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন, তিনিই জানেন। মিরাজ আজ শুধু খুলনার নয়, সারা বাংলাদেশের গর্ব। তিনি আশা করেন, মিরাজ একসময় আরও ভালো খেলোয়াড় হবে। দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।
খুলনায় মিরাজ খেলেন কাশীপুর ক্রিকেট একাডেমিতে। ওই একাডেমির সভাপতি শেখ খালিদ হাসানকে পাওয়া গেল সেখানেই। তিনি বলেন, ২০০৭ সালে খুলনা জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৩ খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথম পুরস্কার ওঠে মিরাজের হাতে। বর্তমানে ওই একাডেমির ক্রিকেট প্রশিক্ষক ও দলের ক্যাপ্টেন মিরাজ। মিরাজের প্রতিভা আছে। সুযোগ পেলে সে একসময় আরও ভালো খেলোয়াড় হয়ে উঠবে।
যাঁর হাত ধরে মিরাজের খেলা শুরু, সেই কাশীপুর ক্রিকেট একাডেমির প্রশিক্ষক মো. আল মাহমুদ আছেন ঢাকায়। সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে যখন মোবাইলে কথা হয়, তখন তিনি ট্রেনে খুলনায় ফিরছেন। অনুভূতি ব্যক্ত করতে তিনি বলেন, মিরাজ এখন শুধু খুলনার নয়, সারা বাংলাদেশের। ছোট একটি পরিসর থেকে সে সম্পূর্ণ তাঁর মেধা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে উঠে এসেছে।
মিরাজের বাড়িতে মিষ্টি নিয়ে এসেছেন খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. কামরুল ইসলাম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিরাজ মাঠে নামার আগে আমার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে দোয়া চেয়েছিল। বর্তমানে মিরাজের কৃতিতে খুশি সারা বাংলাদেশ। আর আনন্দ ভাসছে খুলনার মানুষ। এভাবেই যেন সে বারবার দেশের মানুষকে আনন্দে ভাসাতে পারে, সে দোয়া করেন তিনি। খুলনা বিভাগীয় নৌপরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মিরাজ দেশের জন্য যা করেছে, তাতে খুলনার মানুষ হিসেবে আমি গর্বিত। মিরাজ ভবিষ্যতে আরও বড় খেলোয়াড় হোক।’
রাস্তার ওপর কেন মিরাজের বাবা চেয়ার নিয়ে বসেছেন, এর কারণ জানা গেল মিরাজদের বাড়িতে ঢোকার পর। যে গলি দিয়ে রিকশা যেতে পারে না, এমন একটি গলির মধ্য দিয়ে ঢুকতে হয় বাড়িতে। ভাড়া নেওয়া টিনের চালার ওই বাড়িতে ঘর মাত্র দুটি। বাঁশের চাটাই দিয়ে বারান্দার একটি অংশ ঢেকে দিয়ে তৈরি করা হয়েছে আরেকটি ঘর। একটি ঘরে দেখা গেল মিরাজের পাওয়া সারি সারি সাজানো মেডেল।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন