মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ আলী এখন ভিক্ষুক
ভিক্ষে করে দিন চলে মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ আলীর। দারিদ্র্যের কশাঘাতে তিনি এপথ বেছে নিয়েছেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল জানিয়েছে, দেশ স্বাধীন করতে জীবন বাজি রেখেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ আলী। অথচ আবেদন করেও মুক্তিযুদ্ধের পরিচয়পত্র বা গেজেটে নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ আলীর। সে কারণে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পান না তিনি। তাই শেষ বয়সে ভিক্ষা করেই জীবন চলে দেশের এই সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ আলীর।
জেলার মিরপুর উপজেলা শহর থেকে দুই মাইল দক্ষিণে অঞ্জনগাছি গ্রামের বাসিন্দা মুরাদ আলী। সকালেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভিক্ষা করতে যাওয়ায় তার দেখা মিলল গ্রামের এক বাঁশবাগানে। তিনি জানালেন, বয়সের কারণে আর আগের মতো দূরদূরান্তে ভিক্ষার থলি কাঁধে ঝুলিয়ে যেতে পারেন না। একটু হাঁটতেই হাঁপিয়ে ওঠেন। পাঁচ বাড়িতে ভিক্ষার পর একটু জিরিয়ে নিচ্ছেন বাঁশবাগানে। বর্তমানে তিনি প্যারালাইসিসে আক্রান্ত, দৃষ্টিশক্তিও কমেছে।
মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ আলী জানান, একাত্তরে দেশমাতৃকার টানে যুদ্ধে যোগ দেন। কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে সম্মুখযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নেন তিনি। নিজের জীবন বাজি রেখে তিনি দেশকে হায়েনামুক্ত করতে পারলেও যুদ্ধ-পরবর্তী জীবনযুদ্ধে পরাজিত হয়েছেন।
সরেজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি মাত্র ছোট্ট ভাঙা কুঁড়েঘর। পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রতিদিন তাকে বের হতে হয় ভিক্ষার থলি নিয়ে। ৬৮ বছর বয়সেও মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পাততে হয় দুমুঠো ভাতের জন্য।
তার আবেদনপত্রে একই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গনি, আরজুল হক ও ছাত্তার ঘোষণা দিয়েছেন মুরাদ আলী যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধ শেষে তিনি অস্ত্র জমা দেন। তিনি সম্মুখযুদ্ধসহ বিভিন্ন জায়গায় খণ্ড খণ্ড যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারাসহ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল মুরাদ আলীর যুদ্ধে অংশগ্রহণের ব্যাপারটি স্বীকার করলেও দেশের এই সূর্যসন্তানের নাম গেজেটভুক্ত হয়নি। তার পরিবারের সদস্যরা জানান, গেজেটভুক্ত হওয়ার নামে বারবার প্রতারিত হয়েছেন তারা। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা দুদফায় তার কাছ থেকে টাকাও নিয়েছেন তালিকাভুক্ত করার নামে।
তাদের দাবি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর বাসায় মুরাদ আলী গেলে মন্ত্রী তার হাতে এক হাজার টাকা ধরিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। গেজেটভুক্ত করার আশ্বাস দিলেও কাজ হয়নি। অর্থাভাবে এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করা হয়নি মুরাদ আলীর মেয়েটির।
মিরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার নজরুল করিম নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমি খোঁজখবর নিয়েছি, মুরাদ আলী প্রকৃতই একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি সরকারি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করেছেন। আশা করি দ্রুতই তার নাম তালিকাভুক্ত করে দেবে সরকার।’
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর আমি মন্তব্য করব।’ তিনি বিষয়টি শোনার পর মিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ঢাকা-খুলনা রেল আংশিক চালু হয়েছে সুদীর্ঘ্য ১২ ঘণ্টা পর !
অবশেষে প্রায় ১২ ঘন্টা পর কুষ্টিয়ার পোড়াদহে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ারবিস্তারিত পড়ুন
১৫ হাজার কলাগাছ কেটে ফেলল দুর্বৃত্তরা
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় হিজলাবট এলাকায় গড়াই নদের চরে কলাগাছ লাগিয়েছিলবিস্তারিত পড়ুন
কুষ্টিয়ায় বজ্রপাতে শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু
বজ্রপাতে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার খোলা মাঠে শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন