মুলতান-ট্র্যাজেডি ফিরে এলো চট্টগ্রামে
সেই দুঃখজনক দিনটির কথা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি খালেদ মাহমুদ সুজন। মুলতান টেস্টে পাকিস্তানের কাছে মাত্র এক উইকেটে হেরে যাওয়ার পর মাঠ থেকে তিনি ফিরেছিলেন চোখ মুছতে মুছতে। সেদিন বাংলাদেশের অধিনায়ক আজ জাতীয় দলের ম্যানেজার। ভূমিকা পাল্টে গেলেও আরেকটি বেদনাদায়ক হারের সাক্ষী হলেন তিনি। সুজন একা নন, চট্টগ্রাম টেস্টে জিততে জিততে ২২ রানে হারের দুঃখে পুরো বাংলাদেশ আজ শোকাহত। কে জানত, মুলতান-ট্র্যাজেডি এভাবে ফিরে আসবে চট্টগ্রামে!
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম জয় ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে। তবে তার প্রায় দেড় বছর আগেই প্রথম জয় আসতে পারত। তাও আবার পাকিস্তানের মাটিতে! ২০০৩ সালের পাকিস্তান সফরে প্রথম দুই টেস্টে একদমই লড়াই করতে পারেনি বাংলাদেশ, হার মেনেছিল ৭ ও ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে। কিন্তু মুলতানে শেষ টেস্টে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন সুজন-সুমন-পাইলটরা। তবে দুর্ভাগ্য আর ইনজামাম-উল-হকের ব্যাটিং-বীরত্ব সেই টেস্টে বাংলাদেশকে জিততে দেয়নি। অবশ্য মোহাম্মদ রফিকের খেলোয়াড়সুলভ মনোভাবের কথাও বলতে হবে।
চট্টগ্রামের মতো মুলতান টেস্ট পঞ্চম দিনে গড়ায়নি। ম্যাচটা শেষ হয়েছিল চতুর্থ দিনে। ২৬১ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানকে ১৩২/৬-এ পরিণত করে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন শেষে স্বাগতিকদের স্কোর ছিল ১৪৮/৬। স্লিপে থাকা হান্নান সরকার চতুর্থ দিন সকালে শাব্বির আহমেদের ক্যাচ ফেলে দিয়ে বড় একটা ধাক্কা দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। ইনজামামের সঙ্গে শাব্বিরের ৪১ রানের জুটি জয়ের পথে ভালোই এগিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানকে।
তবু জিততে পারত বাংলাদেশ। পারেনি রফিকের মহানুভবতার কারণে। শাব্বিরের বিদায়ের পর ব্যাট করতে নেমেছিলেন উমর গুল। শুরুতেই ফিরে যেতে পারতেন তিনি। রফিক বল করার সময় অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিলেন নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা গুল। কিন্তু রান আউট না করে ব্যাটসম্যানকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের বাঁ-হাতি স্পিনার। শেষ পর্যন্ত রান আউটই হয়েছিলেন গুল। কিন্তু তার আগে ইনজামামের সঙ্গে ৫২ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি। যদিও তাতে গুলের অবদান ছিল মাত্র ৫ রান।
গুল আউট হওয়ার সময় জয় থেকে ৪ রান দূরে ছিল পাকিস্তান। ক্রিজে ইনজামামের সঙ্গে তখন টেস্ট অভিষিক্ত ইয়াসির আলী। এর আগে টেস্ট তো বটেই, যিনি কোনো প্রথম শ্রেণির ম্যাচও খেলেননি। সুজনের ওভারের প্রথম বলে গুল আউট হওয়ায় বাংলাদেশ তখন উজ্জীবিত। কিন্তু হাতের মুঠোয় এসেও জয় ধরা দেয়নি সেদিন। প্রথম তিনটি বল কোনো রকমে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন ইয়াসির। পঞ্চম বলে এক রান নিয়ে স্ট্রাইকে পাঠিয়েছিলেন ইনজামামকে। ‘মুলতানের সুলতান’ কোনো ভুল করেননি। চার মেরে পাকিস্তানকে এনে দিয়েছিলেন স্মরণীয় জয়। উইকেটের হিসাবে সেটাই এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে কম ব্যবধানে হার।
সেদিন ১৩৮ রানে অপরাজিত থেকে নিজের শহরের মাঠ থেকে ইনজামাম বেরিয়ে এসেছিলেন পুষ্পবৃষ্টিতে স্নাত হয়ে। আজ সাব্বির রহমানের সামনে সেদিনের ‘ইনজামাম’ হয়ে ওঠার সুযোগ ছিল। কিন্তু সাব্বির পারেননি। অবশ্য বাংলাদেশের হারের পেছনে বিতর্কিত আম্পায়ারিংয়ের দায়ও কম নয়। আজ শেষ দুটো উইকেটই ইংল্যান্ড ‘উপহার’ পেয়েছে রিভিউয়ের কল্যাণে। পুরো ম্যাচে রিভিউর আবেদন যেভাবে বার বার বাংলাদেশের বিপক্ষে গেছে, তা সত্যিই বিস্ময়কর।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন