মুসলমানদের নৃশংস গণহত্যায় সমর্থন ছিল সুচির
মিয়ানমার সফরকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সমকক্ষ অং সান সুচির সঙ্গে সাক্ষাতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরো গতিশীল করার আহবান জানিয়েছেন। তিনি মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সেদেশের মুসলমানদের অবস্থানের কথা তুলে ধরে তাদের প্রতি কিছুটা সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর-রেতে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘ বহু বছর ধরে মিয়ানমারে বসবাসকারী লাখ লাখ মুসলমানের ওপর সরকার ও উগ্র বৌদ্ধরা হত্যা, নির্যাতন ও তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করলেও মার্কিন সরকার এতদিন পর্যন্ত টু-শব্দটিও করেনি। মার্কিন কর্মকর্তারা মিয়ানমারের মুসলমানদের দুঃখ-দুর্দশার বিষয়টি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছে।
অং সান সুচি গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, নাগরিক অধিকার রক্ষা ও বঞ্চিতদের অধিকার ফিরিয়ে আনার কথা বলে রাজনীতি করে এসেছেন। কিন্তু গত তিন বছর ধরে উগ্র বৌদ্ধরা রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর ভয়াবহ গণহত্যা চালালেও অং সান সুচি মুসলমানদের রক্ষায় একটি কথাও উচ্চারণ করেননি। বরং তিনি সংখ্যালঘু হিসেবে মুসলমানদেরকে স্বীকৃতি না দেয়ার পক্ষে নানান সাফাই গেয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অং সান সুচি সারা জীবন মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকারের কথা বললেও তার প্রথম পরিচয় তিনি একজন বৌদ্ধ। গত কয়েক বছর ধরে লাখ লাখ মুসলমানের ওপর উগ্র বৌদ্ধ সম্প্রদায় নৃশংস গণহত্যা চালালেও এ ব্যাপারে অং সান সুচির নীরবতা থেকে উগ্র বৌদ্ধদের প্রতি তার সমর্থনের বিষয়টি ফুটে ওঠে। যদিও অনেকের মতে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার জন্য বৌদ্ধ সমাজে তার যে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে সেটাকে তিনি হারাতে চাননি। অথচ বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন, জাতিসংঘ ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা ওআইসি’র তথ্যে প্রমাণিত হয়েছে রোহিঙ্গা মুসলমানরা মিয়ানমারের স্থানীয় অধিবাসী এবং তারা কেউ বাইরে থেকে আসেনি।
মিয়ানমারে বেসামরিক সরকার ক্ষমতায় আসায় সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায় অন্যান্যদের মতো সমান সুযোগ সুবিধা পাবে বলে ব্যাপকভাবে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সে প্রত্যাশা এখনো পূরণ হয়নি। মিয়ানমারে বেসামরিক সরকার ক্ষমতায় এলেও সংখ্যালঘু মুসলমানরা এখনো প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে এবং নানা ক্ষেত্রে তারা অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। বর্তমানে অং সান সুচি সেদেশের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে মুসলমানদের অবস্থার উন্নয়নসহ বিরাজমান নানা সমস্যা সমাধানে অং সান সুচির জন্য যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে অনেকের বক্তব্য হচ্ছে, সুচির উচিৎ আমেরিকার ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব সহযোগিতা সংস্থা আসিয়ানের শরণাপন্ন হওয়া।
২০১৩ সাল থেকে উগ্র বৌদ্ধদের হামলায় প্রাণ বাঁচাতে বর্তমানে প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বিভিন্ন স্থানে শরণার্থী জীবন যাপন করছে। এর মধ্যে এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী আইনি কিংবা বেআইনিভাবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছে এবং বাকীরা অন্যান্য দেশের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উগ্র বৌদ্ধদের পক্ষ থেকে প্রচণ্ড চাপের আশঙ্কায় অং সান সুচি মুসলমানদের ব্যাপারে ন্যায়ভিত্তিক কোনো পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত রয়েছেন। অনেকের মতে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুচি যতদিন পর্যন্ত উগ্র বৌদ্ধদের প্রভাব বলয়ের মধ্যে থাকবেন ততদিন পর্যন্ত ন্যায়ভিত্তিক কোনো পদক্ষেপ নেয়া তার জন্য কঠিন হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন