মুসলমানদের পশু জবাই পদ্ধতি ‘অজ্ঞতা’ নয়, ভুল ধারণা ছড়ানো হয়েছে : গবেষণা
একটি সংবাদপত্রের এক শিরোনামে বোঝানো হলো যে, মুসলমানদের পশু জবাইয়ের পদ্ধতি তার অজ্ঞাতারই নামান্তর। কারণ এতে পশুগুলো প্রচণ্ড যন্ত্রণা ভোগ করে মারা যায়। এটা অমানবিক। প্রতিবেদনে বলা হলো, হালাল খাবারের জন্য মুসলমানরা যেভাবে পশু জবাই করে তা নৃশংস। এটা মুসলমানদের অজ্ঞতারই কারণ। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় বলা হলো, এটা ভুল কথা। বরং অমুসলিমরাই যেভাবে পশুকে কসাইখানায় পাঠায় তা ভুল পদ্ধতি।
অবশ্য পরে বলা হয়, ওই প্রতিবেদনে মুসলমানদের অজ্ঞতার কথা বলা হয়নি। অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা এই প্রতিবেদনকে মুসলমানদের জন্য ‘অবমাননাকর’ বলে মন্তব্য করেন। না জেনে এবং না বুঝে প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে বলেই জানান তারা।
ব্রিটেনের ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ভেটেরিনারি সায়েন্সেস এর বিশেষজ্ঞরা পশু জবাইয়ের আগে তাকে অচেতন করার বিষয়টি নিয়ে একটি জরিপ চালান। এ নিয়ে মুসলিম পণ্ডিত এবং সাধারণ মানুষ কি মনে করেন তা জানার চেষ্টা করা হয়।
জরিপের ফলাফল বিস্ময়কর বলে মন্তব্য করেন এক বিশেষজ্ঞ। বলেন, জরিপকৃতদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ পণ্ডিত মনে করেন যে হালাল মাংস পাওয়ার উদ্দেশ নিয়ে পশু জবাইয়ের ক্ষেত্রে যদি অচেতন করা হয়, তবে এখানে নিশ্চিত করতে হবে যে পশুটাতে হত্যা করা হচ্ছে না। হালাল করতে হলে নিশ্চিত করতে হবে যে, পশুটার প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতি নিয়ে জবাই করতে হবে এবং রক্তক্ষরণে মৃত্যুর আগে তাকে জীবিত থাকতে হবে।
‘মিট সায়েন্স’ জার্নালের জন্য জরিপটি পরিচালিত হয়। সেখানে গবেষকরা বলেন, পশুদের অচেতন করার বিষয়টি পরিষ্কারভাবে না বোঝার কারণে অনেক পণ্ডিত নানা বিভ্রান্তিকর ফতোয়া দিয়ে থাকেন। অচেতন করে পশু জবাইয়ের পর তার মাংস কতটা হালাল হতে তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা নেই তাদের। সে ক্ষেত্রে মুসলমান পণ্ডিতদের পশুকে অচেতন করার বিষয়ে এবং কসাইখানার আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে পরিষ্কার তত্ত্ব দেওয়া উচিত। এতে সাধারণ মুসলিমরা হালাল মাংস খাওয়ার বিষয়ে বিভ্রান্তিকর অবস্থার মধ্যে পড়বে না।
দ্য টাইমস এবং ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে হালাল মাংস পাওয়ার ক্ষেত্রে মুসলমানদের পশু জবাইয়ের পদ্ধতিকে অজ্ঞতা বলে তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, এই যন্ত্রণাকাতর মৃত্যুর প্রয়োজন নেই।
আরেক গবেষক জানান, ইনডিপেনডেন্ট এ বিষয়টিকে মুসলমানদের জন্য অবমাননাকর বলে মনে করছে। আসলে মুসলমানদের পশু জবাই নিয়ে ভুল ধারণা পোষন করা হচ্ছে। আসলে জবাইয়ের আধুনিক সব পদ্ধতি সম্পর্কেই পণ্ডিতদের ধারণা রয়েছে। তবে বিষয়টি যেন সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে ভুল ধারণা না ছড়ায় তা দেখা উচিত। অমুসলিমদের নিয়ে গবেষণা করা হলে একই বিষয় বেরিয়ে আসবে। এখানে মুসলমানরা যে অজ্ঞতা নিয়ে পশু জবাই করছে তা বলা উচিত নয়। কাজেই এখানে অজ্ঞতা শব্দটিকে এড়িয় কথা বলতে হবে।
অনেক মুসলিম পণ্ডিতের মতে, বাণিজ্যিক কসাইখানাগুলোতে যেভাবে পশু নিধন হচ্ছে, হালাল পদ্ধতিতে জবাই তার চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য পন্থা। এসব কসাইখানাগুলোর পদ্ধতি মূলত ভুল এবং তা ত্যাগ করা উচিত।
আবার অনেক হালাল কমাইখানাতেও সবার অগোচরে ভুল পদ্ধতিতে পশু জবাই চলে। এদিকেও খেয়াল দিতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র : ইনডিপেনডেন্ট
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন