মুস্তাফিজের সাসেক্সে খেলা : বাংলাদেশের মঙ্গল দেখছেন হাথুরুসিংহে
ইংলিশ কাউন্টি ক্লাব সাসেক্সের হয়ে মুস্তাফিজুর রহমান খেললে তা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে বলেই মনে করছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ মনে করেন, এতে করে মুস্তাফিজ ইংলিশ পিচ ও কন্ডিশন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে, যে অভিজ্ঞতা আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশকে বাড়তি শক্তি দেবে। কেননা, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর ইংল্যান্ডের মাটিতেই অনুষ্ঠিত হবে।
তবে বাংলাদেশের এই শ্রীলঙ্কান কোচ মনে করেন, সাসেক্সের হয়ে মুস্তাফিজের খেলার বিষয়টি পরিবেশ-পরিস্থিতি ও তার (মুস্তাফিজ) শারীরিক কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করবে। সবকিছু ভেবে-চিন্তেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি)।
বাংলাদেশের কোচ হিসেবে চলতি বছর জুনে বিসিবির সঙ্গে চুক্তি শেষ হবে হাথুরুসিংহের। বর্তমানে তিনি ছুটিতে রয়েছেন। অবস্থান করছেন অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে থেকেই বাংলাদেশের ইংরেজি ভাষার দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন মাশরাফি-মুস্তাফিজদের কোচ। সেখানে মুস্তাফিজ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি।
বর্তমানে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ক্রিকেটে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলছেন মুস্তাফিজুর রহমান। দেশের বাইরে এই প্রথম ক্রিকেট খেলছেন তিনি। তবে শুরু থেকে এখন অব্দি আইপিএলে ভালো করায় বাংলাদেশের এই তরুণ পেসারকে ঘিরে রীতিমতো প্রশংসার বন্যা বয়ে যাচ্ছে প্রতিদিনই। যে কারণে ইংলিশ কাউন্টি দল সাসেক্সেও তাকে দলে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তবে মুস্তাফিজ ও বাংলাদেশের ভবিষ্যত চিন্তা করে সাসেক্সে খেলার বিষয়ে বিসিবি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে।
এই বিষয়ে হাথুরুসিংহে মনে বলেছেন, ‘আইপিএল শেষে তার অবস্থা (শারীরিক) কেমন দাঁড়ায় তা আমাদের দেখতে হবে। সাসেক্সের সঙ্গে তার চুক্তির বিষয়ে আমি অবগত এবং এই বিষয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগে রয়েছি। আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। যদি সে যথেষ্ট পরিমাণে ফিট থাকে এবং কোনো ইনজুরি না থাকে তাহলে সাসেক্সের হয়ে খেলাটা (মুস্তাফিজের) খুবই ভালো হবে; কেননা, ইংল্যান্ডের মাটিতে আমাদেরকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে হবে। তাই সেখানকার উইকেট সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন তার জন্য মঙ্গলজনক হবে।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গত বছর পা রাখার পর থেকেই ক্রিকেট বিশ্বে আলোচিত-প্রশংসিত বোলার মুস্তাফিজ। আইপিএলের পারফরম্যান্সে তাকে ঘিরে ক্রিকেট বিশ্বের আগ্রহ আরও বেড়েছে। যে কারণে অস্ট্রেলিয়ার টি২০ ক্রিকেটের আসর বিগব্যাশের দলও তাকে পেতে চাইছে। বস্তুত বিশ্বের সব টি২০ ক্রিকেট লিগেই যেন মুস্তাফিজ পরিণত হয়েছেন কাঙ্খিত বোলারে।
এই বিষয়ে কোচ হিসেবে নিজের অভিমত জানাতে গিয়ে হাথুরুসিংহে বলেছেন, ‘নিশ্চিতভাবেই যে কোনো টি২০ আসরের জন্য সে (মুস্তাফিজ) মূল্যবার সম্পদ। আমার কাছে বিষয়টি হলো তার সুস্থতা এবং মানুষ যেন বেশি করে তার বোলিং সম্পর্কে ধারণা পেতে না পেরে। এটা হলো মাঠে তার খেলা সম্পর্কে। যদি এটা সঙ্কটাপন্ন বিষয় হয় তাহলে অবশ্যই তাকে বাধা (এই লিগগুলোতে খেলা) দেওয়ার চিন্তা করতে হবে। যদি এটা তার স্বাস্থ্যর ওপর ক্ষতিকর ভূমিকা রাখে তাহলে আমি তাকে এবং বোর্ডকে পরামর্শ দিবে যে তার সুস্থতার পক্ষে অন্তরায় হয় এমন কিছু না করার। এই বিষয়ে আমরা আপোস করব না। এবং হয়তো বা এ নিয়ে আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কেননা, আপনি কারও পথ রুদ্ধ করতে পারেন না। তাই এই বিষয়ে এই সকল ভারসাম্যপূর্ণ বিষয়গুলো আমাদের বিবেচনায় আনতে হবে।’
যত বেশি ম্যাচ খেলা হবে তত বেশি মুস্তাফিজের বোলিং রহস্য ব্যাটসম্যানদের কাছে জানা হয়ে যাবে। চলতি আইপিএলে যা প্রতীয়মান হতে শুরু করেছে। কেননা, গত কয়েকটি ম্যাচে মুস্তাফিজ যেন ঠিক আগের মতো সাফল্য পাচ্ছেন না। তাহলে কি দেশের স্বার্থে মুস্তাফিজকে লুকিয়ে রাখা প্রয়োজন? তাকে বাইরের লিগগুলোতে কম ম্যাচ খেলতে দেওয়া উচিত?
এই বিষয়ে হাথুরুসিংহে মনে করেন, ‘পৃথিবীর সব বোলারের ক্ষেত্রেই এটা সত্য। যত বেশি তারা ম্যাচ খেলবে তত বেশি তাদের বোলিং সম্পর্কে অন্যদের ধারণা জন্মাবে। ক্রিকেটের স্বভাটাই এমন। বেশি ম্যাচ খেলার অপকারিতা হলো অন্যরা ওই বোলারটির বোলিং সম্পর্কে অভ্যস্থ হয়ে যায়। কিন্তু আমি মনে করি এতেও একটা উপকারীতা রয়েছে। কেননা, বেশি ম্যাচ খেলায় সে (মুস্তাফিজ বা অন্য বোলাররা) বুঝতে পারবে যে ব্যাটসম্যানরা তার বোলিংকে কিভাবে সামলাছে। এতে করে তার বোলিংয়ে ভেরিয়েশন দেওয়া এবং কার্যকারী বোলিংয়ের ক্ষেত্রে সে আরও বেশি বিজ্ঞ হতে পারবে। সে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে তা ইতোমধ্যে মূল্যবান হয়ে উঠেছে।’
জাতীয় দলের হয়ে বোলিংয়ের ক্ষেত্রে মুস্তাফিজকে ততটা ইয়র্কার ডেলিভারি দিতে দেখা যায় না। তবে আইপিএলে নিয়মিত সফলভাবে ইয়র্কার দিচ্ছেন তিনি। যা দেখে বাংলাদেশের ড্যাশিং ওপেনার ও তারকা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সম্প্রতি। তবে এতে বিস্মিত নন কোচ হাথুরুসিংহে।
তিনি বলেছেন, ‘আমি এতে বিস্মিত নই। সব সময়ই তার ইয়র্কার দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। হয়তো বা কৌশলগত কারণে জাতীয় দলের জার্সিতে তাকে বেশি ইয়র্কার দিতে দেখা যায় না। আইপিএলের কন্ডিশন ও পিচের কারণেই হয়তো সেখানে তাকে এই অস্ত্র বেশি ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে। আপনি যদি স্মরণ করে দেখেন যে বিশ্বকাপ (টি২০) স্টিভেন স্মিথকে ইয়র্কার মেরে সে কিভাবে বোল্ড করেছিল; এটা পুরোটাই ছিল কৌশলগত বিষয়। টিম মেনেজম্যান্টের আলোচনার ভিত্তিতেই এগুলো করা হয়।’
মুস্তাফিজকে নিজের দেখা গুটিকতক তরুণ মেধাবী বোলারদের একজন হিসেবে অভিহত করেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, যারা কিনা যে কোনো পরিকল্পনা খুব দ্রুতই অনুধাবন করতে পারে এবং তা সফলভাবে কাজে লাগাতে জানে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন