মুস্তাফিজের হায়দ্রাবাদের কাছে লণ্ডভণ্ড হয়েছে যে দলগুলো
প্রথম দু’টি ম্যাচে হার৷ তবুও অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়ানোর পর বর্তমানে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ নবম আইপিএলের ফাইনালে৷ ২০০৯ সালেরই যেন ফের একবার পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে৷ সেই বার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মুখোমুখি হয়েছিল হায়দরাবাদের অপর একটি দল ডেকান চার্জাস৷ ওই ম্যাচে অনিল কুম্বলেদের হারিয়ে আইপিএল-টুয়ের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অ্যাডাম গিলক্রিস্ট অ্যান্ড কোং৷ কিন্তু নিয়ম সংক্রান্ত ঝামেলায় বাদ পড়ার পর ‘নিজামের শহর’ থেকে সুযোগ পায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ৷ তাই বলা যায় সেই বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে আরও একবার দেশের সেরা টি-২০ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন সুযোগ দরজায় কড়া নাড়ছে ওয়ার্নার-ধাওয়ান-যুবরাজদের সামনে৷
ফাইনাল অবধি লড়াইটা অবশ্য সহজ ছিল না হায়দরাবাদের৷ প্রথমে বেশ কয়েকটি ম্যাচ চোটের জন্য তাঁরা পায়নি যুবরাজ সিং-কেন উইলিয়ামসনের মতো খেলোয়াড়কে৷ এছাড়া শেষ দিকে আশিষ নেহরার মতো অভিজ্ঞ বোলারকে হারিয়েছে একই কারণে৷ তবুও দু’বারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্সকে প্রথম এলিমিনেটর ও গুজরাত লায়ন্সকে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হারিয়ে ফাইনালে কোহলি অ্যান্ড কোংয়ের মুখোমুখি হতে চলেছে তাঁরা৷
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে রবিবাসরীয় চিন্নাস্বামীতে আরও একটি কঠিন লড়াই অপেক্ষা করছে ওয়ার্নার-মুস্তিফিজুরদের সামনে৷ তার আগে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক চলতি আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ কীভাবে ফাইনালে উঠল :
ম্যাচ: ১
বিপক্ষ: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু
ফলাফল: ৪৫ রানে হার
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: এবি ডিভিলায়ার্স (আরসিবি)
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: প্রথমে ব্যাট করে কোহলি(৭৫)-ডিভিলিয়ার্সে(৮২) দুদান্ত ব্যাটিং এবং শেষ দিকে সরফরাজ খানের ঝোড়ো ৩৫ রানের ইনিংসের সৌজন্য ২২৭ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয় হায়দরাবাদকে৷ জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ছ’উইকেটে ১৮২ রানে থেমে যায় ওয়ার্নারদের ইনিংস৷
ম্যাচ: ২
বিপক্ষ: কলকাতা নাইট রাইডার্স
ফলাফল: নাইট রাইডার্সের কাছে আট উইকেটে হার৷
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: গৌতম গম্ভীর
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: মর্গ্যানের অর্ধ-শতরানে হায়দরাবাদ সাত উইকেটে ১৪২ রান তোলে৷ কিন্তু ঘরের মাঠে কলকাতা অধিনায়ক গম্ভীরের ব্যাটে ভর করে দু’উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয়৷
ম্যাচ: ৩
বিপক্ষ: মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
ফলাফল: হায়দরাবাদ সাত উইকেটে জয়ী৷
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ডেভিড ওয়ার্নার
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: হায়দরাবাদ বোলারদের দাপটে মাত্র ১৪২ রান তোলে রোহিত শর্মা অ্যান্ড কোং৷ জবাবে অধিনায়ক ওয়ার্নারের ৪২ বলে ৫০ রানের সৌজন্যে টুর্নামেন্টের প্রথম জয় পায় হায়দরাবাদ৷
ম্যাচ: ৪
বিপক্ষ: গুজরাত লায়ন্স
ফলাফল:
সানরাইজার্স দশ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ভুবনেশ্বর কুমার
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: ভুবনেশ্বরের চার উইকেট ও বাকি বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সুবাদে গুজরাতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপকে মাত্র ১৩৫ রানে আটকে রাখে হায়দরাবাদ৷ জবাবে দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও ওয়ার্নার অপরাজিত থেকে দলকে জয় এনে দেন৷
ম্যাচ: ৫
বিপক্ষ: কিংস ইলেভেন পঞ্জাব
ফলাফল: হায়দরাবাদ পাঁচ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মুস্তাফিজুর রহমান
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: বাংলাদেশের পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের দাপটে(চার ওভারে ন’রান দিয়ে দু’উইকেট) মাত্র ১৪৬ রান করে প্রীতির দল৷ দুই ওপেনারের দাপটে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান ১৩ বল বাকি থাকতে পাঁচ উইকেট হারিয়ে তুলে নেয় সানরাইজার্স৷
ম্যাচ: ৬
বিপক্ষ: রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টস
ফলাফল: সুপারজায়ান্টসের কাছে ৩৪ রানে হার(ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়মে)
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: অশোক দিন্দা
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে পুণে বোলারদের দাপটে আট উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১৮ রান করে হায়দরাবাদ৷ জবাবে ১১ ওভারের শেষে পুণের রান যখন তিন উইকেটে ৯৪৷ তখন বৃষ্টি ম্যাচে থাবা বসায়৷ ফলে ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে ৩৪ রানে ম্যাচটি জিতে নেয় ধোনি ব্রিগেড৷
ম্যাচ: ৭
বিপক্ষ: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু
ফলাফল: হায়দরাবাদ ১৫ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ডেভিড ওয়ার্নার
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: প্রথমে ব্যাট করে অধিনায়ক ওয়ার্নার (৫০ বলে ৯২), কেন উইলিয়ামসন (৩৮ বলে ৫০) এবং মোজেস হেনরিকেসের ঝোড়ো ইনিংসের (১৪ বলে ৩১) সুবাদে হায়দরাবাদ নির্ধারিত কুড়ি ওভারে পাঁচ উইকেটে ১৯৪ রান তোলে৷ ১৯৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে বিরাট-ওয়াটসন-এবিডিভিলিয়ার্সের বেঙ্গালুরুর ইনিংস ১৭৯ রানেই থেমে যায়৷
ম্যাচ: ৮
বিপক্ষ: গুজরাত লায়ন্স
ফলাফল: হায়দরাবাদ পাঁচ উইকেটে জয়ী৷
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ভুবনেশ্বর কুমার৷
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: প্রথমে ব্যাট করে হায়দরাবাদ বোলিং লাইন আপের সামনে মাত্র ১২৬ রান তুলতে সক্ষম হয় সুরেশ রায়নারা৷ জবাবে এক ওভার বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ৷
ম্যাচ: ৯
বিপক্ষ: মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
ফলাফল: হায়দরাবাদ ৮৫ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আশিষ নেহরা৷
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: প্রথমে ব্যাট করে ওয়ার্নার(৪৮), ধাওয়ান(৮২) ও যুবরাজের(৩৯) সৌজন্যে হায়দরাবাদের সংগ্রহ তিন উইকেটে ১৭৭৷ জবাবে আশিষ নেহরার দাপটে মাত্র ৯২ রানে অলআউট হয়ে যায় রোহিত শর্মা অ্যান্ড কোং৷
ম্যাচ: ১০
বিপক্ষ: রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টস
ফলাফল: হায়দরাবাদ চার রানে জয়ী৷
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: অ্যাডাম জাম্পা
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: প্রথমে ব্যাট করে অজি লেগস্পিনার অ্যাডাম জাম্পার ছ’উইকেটে মাত্র ১৩৭ রানই স্কোরবোর্ডে তুলতে সক্ষম হন যুবরাজরা৷ কিন্তু দুর্দান্ত বোলিংয়ের সুবাদে হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ চার রানে জিতে নেয় হায়দরাবাদ৷
ম্যাচ: ১১
বিপক্ষ: দিল্লি ডেয়ারডেভিলস
ফলাফল: দিল্লির কাছে সাত উইকেটে হার৷
ম্যান অব দ্য ম্যাচ:ক্রিস মরিস
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: দুই ওপেনার রান রান পেলেও পরের দিকের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় মাত্র ১৪৬ রান তোলে হায়দরাবাদ৷ জবাবে ১১ বল বাকি থাকতে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয় দিল্লি ডেয়ারডেভিলস৷
ম্যাচ: ১২
বিপক্ষ: কিংস ইলেভেন পঞ্জাব
ফলাফল: হায়দরাবাদ সাত উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ:হাশিম আমলা
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান আমলার ৯৬ রানের ঝকঝকে ইনিংসের সৌজন্যে চার উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান করেন৷ জবাবে শুরুতে ওয়ার্নার(৫২) ও শেষ দিকে যুবরাজ(অপরাজিত ৪২) দলকে ম্যাচ জিততে সাহায্য করে৷
ম্যাচ: ১৩
বিপক্ষ: দিল্লি ডেয়ারডেভিলস
ফলাফল: দিল্লির কাছে ছ’উইকেটে হার৷
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: করুন নায়ার
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: প্রথমে ব্যাট করে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সানরাইজার্স অধিনায়ক ওয়ার্নারের ৭৩ রানের সৌজন্যে ১৫৭ রান করে হায়দরাবাদ৷ জবাবে দিল্লির তরুণ খেলোয়াড় করুন নায়ারের ৮৩ রানের ইনিংসে শেষ ওভারে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে নেয় দিল্লি৷
ম্যাচ: ১৪
বিপক্ষ: কলকাতা নাইট রাইডার্স
ফলাফল: কলকাতার কাছে ২২ রানে হার
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইউসুফ পাঠান
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: প্রথমে ব্যাট করে পাঠান পাওয়ারে হায়দরাবাদকে ১৭২ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয় নাইটরা৷ জবাবে কেকেআর বোলারদের দাপটে আট উইকেটে ১৪৯ রানেই থেমে যায় ওয়ার্নারদের ইনিংস৷
ম্যাচ: এলিমিনেটর
বিপক্ষ: কলকাতা নাইট রাইডার্স
ফলাফল: হায়দরাবাদ ২২ রানে জয়
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মোজেস হেনরিকেস
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: টুর্নামেন্টে লিগ টেবিলে তিন ও চার নম্বরের থাকা দু’দলের কার্যত কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইতে প্রথমে ব্যাট করে হায়দরাবাদ যুবরাজ(৪৪) ও হেনরিকেসের(৩১) ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে ১৬২ রান করে৷ জবাবে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারানোর কারণে ১৪০ রানেই থেমে যায় নাইটদের ইনিংস৷ সেই সঙ্গে টুর্নামেন্ট থেকেও ছিটকে যায় গৌতম গম্ভীররা৷
ম্যাচ: কোয়ালিফায়ার টু
বিপক্ষ: গুজরাত লায়ন্স
ফলাফল: হায়দরাবাদ চার উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ডেভিড ওয়ার্নার
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: প্রথমে ব্যাট করে সাত উইকেটে ১৬২ রান করে সুরেশ রায়না অ্যান্ড কোং৷ জবাবে অধিনায়ক ওয়ার্নার একার কাঁধে দলকে জিতিয়ে ফাইনালে তোলেন৷ তিনি ৫৮ বলে ৯৩ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন৷ এছাড়া বিপুল শর্মা ১১ বলে ঝোড়ো ২৭ রান করেন৷-কলকাতা
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন