মৃত্যুর কষ্ট বুকে নিয়েই পরীক্ষায় বসলো প্রকাশক দীপনের একমাত্র ছেলে রিদাত (ভিডিওসহ)
পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল রিদাত ফারহান। মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই কলম-পেন্সিল আর প্রবেশপত্র নিয়ে রওনা হবে জীবনের দ্বিতীয় পাবলিক পরীক্ষা কেন্দ্রে। সঙ্গে নিয়ে যাবে ছায়াসম পিতার দোয়া। কে জানতো জীবনের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাকে শুনতে হবে সেই পিতারই মৃত্যুর খবর। এ যেনো পুরো আকাশসম যন্ত্রণা ঘিরে ফেলে রিদাতকে।
তবু থেমে থাকেনি সে। দীপনের লাশ ঘিরে স্বজনদের আহাজারিতে আশেপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠার মূহুর্তেই মৃত্যুর কষ্ট বুকে নিয়ে পরীক্ষায় বসলো প্রকাশক দীপনের একমাত্র ছেলে রিদাত ফারহান ।আর ইউনিফর্ম পরা অবস্থাতেই প্রিয় বাবাকে চিরতরে বিদায় জানালো সে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বাবা-মা ও স্ত্রী ছাড়া দীপন স্মৃতি হিসেবে রেখে যান দুই সন্তান। এর মধ্যে মেয়ে হৃদমা ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। ছেলে রিদাত উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র। গতকাল বাবার শেষ বিদায়ের দিন ছিল যার জেএসসি পরীক্ষা।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, খুন হওয়ার কিছুক্ষণ আগে বেলা দেড়টার দিকে রিদাতের সঙ্গে শেষ কথা হয় দীপনের। তখন আজিজ সুপার মার্কেটেই ছিলেন দীপন। তিনি ছেলের পরীক্ষার প্রস্তুতির খোঁজ-খবর নেন। পরীক্ষায় ভালো করার জন্য দিক নির্দেশনাও দিয়েছেন। বাবার সঙ্গে কথা শেষ করে প্রথম পরীক্ষা বাংলা প্রথমপত্রের জন্য সর্বশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছিল রিদাত। ঠিক এমন একটি সময়ে একটি খবরে তার পুরো পৃথিবী যেনো অন্ধকারে ঢাকা পড়ে। রিদাতের একজন আত্মীয় জানান, ওই সময়ে বাবার জন্য হাউ-মাউ করে কেঁদে উঠেন রিদাত ও হৃদমা। কিছুক্ষণ পরে পুরো নিস্তব্ধ হয়ে যায় রিদাত।
দীপনের মৃত্যুর খবরে সবাই যেমন শোকাহত, তেমনি চিন্তিত পরীক্ষার্থী রিদাতকে নিয়ে। সবাই রিদাতের মনে সাহস জোগানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখলেন। তাকে আলাদা একটি রুম দিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে বললেন মা রাজিয়া রহমান। তার ভাষ্য, একটি বছর লস দেয়া ঠিক হবে না। রিদাতও ছিল পরীক্ষার ব্যাপারে কিছুটা আত্ম-প্রত্যয়ী।
শোকার্ত ওই বাসায় সবার রাত যখন কেটেছে নির্ঘুমভাবে, তখন রিদাতকে নিরিবিল ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। কে জানে, হয়তো সেও না ঘুমিয়ে বাবার জন্য ডুকরে ডুকরে কেঁদেছে। সকাল বেলা রিদাতের মা ও সকল আত্মীয়স্বজন তাকে সান্ত্বনা দেন। পরীক্ষার জন্য জামা-কাপড় পরে প্রস্তুত হতে বলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সকাল ৯টার পরেই প্রাইভেটকারে রিদাতকে আজিমপুর পরীক্ষার হলে নিয়ে যায় তার এক আত্মীয়। এদিকে, বেলা পৌনে ১২টায় দীপনের লাশ নিয়ে আসা হয় সুফিয়া কামাল হলে। বেলা ১২টা ৩৫ মিনিটে বাবার লাশ বের করে নেয়ার সময় উচ্চ স্বরে কেঁদে উঠে মেয়ে হৃদমা। এক আত্মীয় এসে তাকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিতে থাকেন। বেলা ১টার মধ্যেই জানাজার জন্য লাশ নিয়ে আসা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে। বেলা দেড়টার পরে স্কুলের ইউনিফর্ম পরিহিত রিদাতকে সরাসরি নিয়ে আসা হয় কেন্দ্রীয় মসজিদে। তখন তার মাথায় ছিলো একটি সাদা টুপি। বেলা পৌনে দুইটায় অনুষ্ঠিত হয় রিদাতের বাবার জানাজা। জানাজা শেষে বাবার কফিনের পিছু পিছু আজিমপুর কবরস্থানে আসে রিদাত। পৌনে ৩টায় বাবার কবরে নিজ হাতে মাটি দিয়ে বাবাকে শেষ বিদায় জানায় সে।
https://youtu.be/E6XYaB6pT0c
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে স্বাগতিক ওয়েস্টবিস্তারিত পড়ুন
রাস্তা আটকে যমুনা ফিউচার পার্কের ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
যমুনা ফিউচার পার্কে মোবাইলের দোকানে চুরির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভবিস্তারিত পড়ুন
যে ৫ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশি নাগরিকদেরবিস্তারিত পড়ুন