মেথির ব্যবহার
মেথি একটি বহুল ব্যবহৃত এবং ব্যাপক পরিচিত জিনিস। মেথির ইংরেজি নাম Fenugreek। এর বৈজ্ঞানিক নাম Trigonella foenum graecum। মেথি এক ধরনের ঔষধি গাছ। এতে একবারই ফুল হয় এবং ফল ধরে। মেথি হিসেবে আমরা যে জিনিসটা চিনি, সেটা আসলে ফলের বীজ। এই মেথি মশলা হিসেবে প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে এটি পাঁচ ফোঁড়নের অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। ইউনানী, কবিরাজি ও লোকজ অনেক চিকিৎসায় মেথি ব্যবহৃত হয়।
মেথিকে সাধারণত মশলা হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। কিন্তু মেথি শুধুমাত্র মশলা নয়, এটি খাবার ও পথ্য। যেমন – মেথি পরটা, মেথি রুই, মেথি মুর্গ, হাঁসের মেথি ভুনা, মেথি কলিজা, মেথি মাংস ইত্যাদি। মেথির রয়েছে নানান ভেষজ গুণ। রক্তে কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা কমানো, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে মেথি বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। রক্তে চিনির মাত্রা কমানোরও বিস্ময়কর শক্তি রয়েছে মেথিতে। আর পুরুষদের যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে মেথির রস এক মহৌষধ!
আনুমানিক ৩০টি দেশের ২৫ হাজার পুরুষের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়। যেসব পুরুষ তাদের যৌনশক্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন তাদের মেথির রস দিনে দু’বার পরিমাণ মতো সেবন করতে দেওয়া হয় ওই পরীক্ষায়। এতে আশ্চর্য রকম সুফল পাওয়া যায়। প্রতিদিন পরিমিত মেথির রস সেবনে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখময় হয়ে উঠে।
রক্তে চিনি কমানোর বিস্ময়কর উপাদান হিসেবে মেথি বিবেচিত হয়। সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খেলে অথবা মেথি ভেজানো পানি খেলে রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যায়।
হতাশা বা অবসাদ, অতিরিক্ত শারীরিক ওজন ও অ্যালকোহল পানে অসুস্থতা, ডায়াবেটিস ইত্যাদি বহু অসুখ ও শারীরিক সমস্যার জন্যও মেথির রস বেশ উপকারী।
মেথির রসে ‘সাপোনিস’ বা ‘ডাইওসজেনিন’ নামে এক ধরনের যৌগ পদার্থ আছে, যা মানবদেহের হরমোন স্তর বা এর পরিমাণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খেলে বা এক গ্লাস পানিতে এক টেবিল চামচ মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করলে শরীরের রোগ জীবাণু দূর হয়। বিশেষত কৃমি মরে যায় এবং রক্তে চিনির মাত্রা কমে, রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা কমে যায়। বার্ধক্যকে দূরে ঠেলে দিয়ে তারুণ্যকে দীর্ঘস্থায়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে মেথি।
মাতৃদুগ্ধ বৃদ্ধির জন্য কালিজিরার মতো মেথি পিষে খেলে উপকার হয়। তবে মেথি ভাজলে এর গুণাগুণ অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। তাই কড়া রোদে মেথি শুকিয়ে তার ভর্তা খাওয়া যেতে পারে।
মাসিকের ব্যথায় কাঁচা মেথি চিবিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
মেথি নারকেল তেলের বোতলে রেখে দিন। মেথি ভেজা এই তেল নিয়মিত ব্যবহারে চুলের গোড়া হয় শক্ত ও মজবুত।
মেথি গুঁড়ো টক দইয়ের সাথে মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল হয় কোমল ও ঝরঝরে।
মেথি ভিজিয়ে তা বেটে মেহেদি ও ডিমের সাথে মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে আধ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। চুল পড়া রোধ হবে।
মেথি গরমজনিত ত্বকের অসুখে অত্যন্ত উপকারী। ত্বকে ঘা, ফোড়া, ইরিটেশন ইত্যাদি দূরীকরণে মেথির জুড়ি নেই।
মেছতায় মেথি বাটা নিয়মিত ব্যবহার করলে তা সহজে ছড়িয়ে পড়ে না এবং ধীরে ধীরে কমে যায়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন