মেয়ের মৃতদেহ কোলে রাতভর বসে মা
ভারতে আবারও সরকারি হাসপাতালে চরম অবহেলার অভিযোগ। এবারের ঘটনা উত্তরপ্রদেশের মীরাট। বাগপত জেলার একটি দরিদ্র পরিবার অভিযোগ করেছে মীরাটের একটি সরকারি হাসপাতালে রক্ত যোগাড় করতে না পারায় মৃত্যু হয়েছে তাঁদের শিশুকন্যার। সেখানেই শেষ নয়, মেয়ের দেহ কোলে নিয়ে মা-কে সারারাত রাস্তায় বসে থাকতে হয়েছে। কারণ অ্যাম্বুলেন্সের জন্য যে ভাড়া চাওয়া হয়েছিল সেটি তাঁদের অর্ধেক মাসের রোজগারের সমান।
বাগপত জেলার বাসিন্দা ইরফানা নামের এক নারী বলছেন, “আমার আড়াই বছরের মেয়ে গুলনাদ এক মাস ধরে খুব জ্বরে ভুগছিল। কাছের হাসপাতালে ডাক্তারেরা রোগটাই ধরতে পারে নি। জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার অবস্থা খারাপ হওয়াতে মিরাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে রক্ত যোগাড় করার জন্য ৫ হাজার টাকা জমা দিতে বলা হয়। কোথা থেকে অত টাকা পাব? কয়েক ঘণ্টা পরে মেয়ে মারা যায়। চিকিৎসাই করা গেল না।”
সেখানেই শেষ হয়নি হতদরিদ্র এই পরিবারের হেনস্থা। মেয়ের দেহ ৫০ কিলোমিটার দূরের গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করেও একটা অ্যাম্বুলেন্স যোগাড় করতে পারেনি ওই পরিবারটি।
“সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে শুধু জীবিতদের নেয়, মৃতদেহ নেবে না। আর অন্য অ্যাম্বুলেন্স ২৫০০ টাকা চাইল। ডাক্তারদের হাতে পায়ে ধরেছি, কেউ সাহায্য করল না। সারা রাত মেয়েকে কোলে নিয়ে রাস্তায় বসে থাকতে হয়েছিল,” স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন ইরফানা।
ভারতের ইংরেজি সংবাদ চ্যানেল এনডিটিভি’র এক সাংবাদিক বাগপত জেলায় ইরফানার গ্রাম নেওয়ারা-তে গিয়েছিলেন। ওই চ্যানেলে যে ছবি সম্প্রচারিত হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ওই পরিবারটি ঘর বলতে একটা প্লাস্টিকের ছাউনি। আশপাশে একই ধরণের আরও কিছু ছাউনি রয়েছে। দিনমজুর ওই পরিবারটির রোজগার দিনে ১৫০ টাকা।
তাঁদের পক্ষে ৫০০০ টাকা দিয়ে বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে মেয়ের জন্য রক্ত যোগাড় করা বা দেহ বয়ে নিয়ে আসার জন্য ২৫০০ টাকা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা সাধ্যের অতীত।
রাত পার হবার পরে কিছু মানুষের কাছ থেকে একপ্রকার ভিক্ষা করে টাকা যোগাড় করে একটি গাড়ী ভাড়া করেন ইরফানা আর তাঁর স্বামী।
ভারতের সরকারি চিকিৎসা পরিকাঠামোয় অবহেলার কারণে মৃত্যুর অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু সম্প্রতি মৃত্যুর পরেও সরকারি পরিষেবা না পাওয়ার ঘটনা একের পর এক প্রকাশ্যে আসছে।
যেদিন ইরফানার পরিবারের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটছে, সেই একই দিনে মধ্যপ্রদেশের এক ব্যক্তিকে মৃত স্ত্রীর দেহ সৎকারের জন্য আবর্জনার স্তূপ ঘাঁটতে হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলি জানাচ্ছে নিমাচ জেলায় এক ব্যক্তির কাছে মৃত স্ত্রীর দেহ সৎকারের জন্য কাঠ কেনার পয়সা ছিল না। তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাছে সাহায্য চেয়েও পান নি। বাধ্য হয়ে তিন ঘণ্টা ধরে আবর্জনার স্তূপ ঘেঁটে টায়ার, কাগজ, প্লাস্টিক, পাতা প্রভৃতি সংগ্রহ করে স্ত্রীকে দাহ করেন জগদীশ ভিল নামের ওই ব্যক্তি।
এর আগে উত্তরপ্রদেশেই অসুস্থ ছেলেকে কাঁধে নিয়ে এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে ছুটতে হয়েছিল এক অসহায় বাবাকে। ছেলেটি বাবার কাঁধেই মারা যায়। ওই একই দিনে ওড়িশা রাজ্যে স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে করে বয়ে নিয়ে ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়েছিল এক ব্যক্তিকে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
প্রকাশ্যে জানালেনঃ দুই পরিচালকের সঙ্গে ‘প্রেম’ ছিল পায়েলের
টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বনামধন্য দুজন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী ও আবিরবিস্তারিত পড়ুন
প্রথম ‘সন্তানের’ জন্মলগ্নে কেঁদেছিলেন দেব ! দায়িত্ব অনেকটাই একা সামলাচ্ছেন তিনি
শিরোনাম পড়ে ভাবছেন, নায়ক দেব তো বিয়েই করেননি, তাহলে সন্তানবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত বাবা রাম রহিমের আয় কত, অনেকেই জানেনা?
ভারতের বিতর্কীত ধর্মগুরু বাবা রাম রহিমের পঞ্জাব, হরিয়ানায় স্থাবর সম্পত্তিরবিস্তারিত পড়ুন