মেয়েরা বাজে ছেলেদের প্রেমে বেশি পড়ে কেন?
স্মরণাতীতকাল থেকেই বাজে ছেলেরা হৃদয় ভেঙ্গে অশ্রুসিক্ত মেয়েদের পেছনে ফেলে যায় বলে কথিত আছে। সিনেমার পর্দায় এরকম চরিত্রের জন্য ব্র্যাড পিট অভিনীত ফাইট ক্লাব বা অতি সাম্প্রতিক ক্রেজি, স্টুপিড লাভ সিনেমায় রায়ান গোসলিংয়ের চরিত্রটির কথা স্মরণ করা যেতে পারে। তবে সত্যি কথা বলতে কি বেশিরভাগ মেয়েই সাধারণত ‘জঘন্য’ ও ‘দুষ্ট’ প্রকৃতির ছেলেদের প্রতিই আকৃষ্ট হন বেশি। এসব ছেলেদের ‘জঘন্য’ সব কর্মকাণ্ড সত্ত্বেও মেয়েরা তাদের প্রতি নিজেদের তীব্র আকর্ষণ বোধ ঠেকিয়ে রাখতে পারে না। নিজের জন্য ক্ষতিকর সব বিষয়কে পছন্দ করাটা একটা ক্লাসিক কেইস। এ ক্ষেত্রে মেয়েরা খুবই আমোদ বা উচ্ছাস অনুভব করে থাকে। বেশিরভাগ মেয়েরই এ দোষটা রয়েছে।
ভারতীয় মনোবিজ্ঞানী আনিতা পিটার্স বলেন, ‘খারাপ ছেলেরা, যেমনটা আমরা তাদের নাম দিয়ে থাকি, হয়তো মদপান, ধুমপান, ঘনঘন পার্টি করা ও নারীদের পেছনে লেগে থাকার মতো সব কর্মকাণ্ডে সবসময় সংশ্লিষ্ট নাও থাকতে পারে। প্রতিটি নারীই চান তার জীবনটা উত্তেজনায় ভরপুর থাকুক। আর যে পুরুষরা তাদের এই চাহিদা পূরণ করতে পারে তাদের প্রতি থাকে নারীদের এক ‘নিষিদ্ধ’ আকর্ষণ। তবে বাজে ছেলেদের প্রতি আকর্ষণের একটা সীমাও আছে। অনেক সময় এমনকি শুধু একটি ছেলেখেলার মতো করেই এই আকর্ষণের পরিসমাপ্তিও ঘটতে পারে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, উদ্দাম জীবন যাপন করে এমন কারো সঙ্গে থাকার রোমাঞ্চকর শিহরণ অনুভব করার তীব্র আকাঙ্খা থেকেই নারীরা সাধারণত বাজে ছেলেদের প্রতি আকৃষ্ট হন বেশি। প্রতিদিনকার গতানুগতিক জীবনের একঘেঁয়েমি কটিয়ে একটু নাটকীয়তায় জীবনকে আরো উপভোগ্য করে তুলতেই নারীরা বাজে ছেলেদের সঙ্গ পেতে চান।
যৌনতা ও আচরণ বিজ্ঞান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কোরিন রাও বলেন, ‘যে তামাশা করতে জানে, যার সম্পর্কে কোনো পূর্বানুমান করা যায় না এবং যার মধ্যে সবসময় ডেমকেয়ার টাইপ একটা ভাবভঙ্গি থাকে সে পুরুষের প্রতি নারীরা অদ্ভুত এক টান অনুভব করেন। সম্ভবত নিজের প্রতি নারীদের নিম্ন আত্মবিশ্বাস বা রোমাঞ্চ ও উত্তেজনার চাহিদা অথবা ছোট বেলার গভীর কোনো ইস্যু এর পেছনে মূল কারণ হিসাবে কাজ করে।
এছাড়া কোনো সিরিয়াল প্লে বয়কে একজন প্রেমিক ও ঘরপোষা মানুষে রুপান্তরিত করার চ্যালেঞ্জের প্রতি আকর্ষণ থেকেও নারীরা বাজে ছেলেদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোতে আকৃষ্ট হয়। তাদেরকে জানার ঝুঁকি, বিছানায় তারা কতটা কী করতে পারে এবং তাদের পাল্লায় পড়ে নিজের জীবন কতটা গোল্লায় যেতে পারে তা নিয়ে রোমাঞ্চকর পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালানোর অদ্ভুত আকর্ষণ থেকেও নারীরা বাজে ছেলেদের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
এছাড়া সমাজের আরো বিভিন্ন উপাদান যেমন- সিনেমা ও গণমাধ্যম এবং বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়ারও নারীদের মন-মানসিকতার উপর গভীর ছাপ ফেলে। তবে ‘বাজে’ ছেলেদের আকর্ষণ ও জনপ্রিয়তা তীব্র আকাঙ্খনীয় হওয়া সত্ত্বেও তা টেকসই নাও হতে পারে। আনিতা বলেন, বাজে ছেলেদের অগুনতি আকর্ষণ শক্তি সত্ত্বেও নারীরা সাধারণত স্থিতিশীল ও দুটোর সংমিশ্রন সম্বলিত চরিত্রের কোনো পুরুষের সঙ্গেই গাটছড়া বাঁধতে বেশি আগ্রহী হয়ে থাকেন। মনোবিজ্ঞানী অনন্যা সিং বলেন, ‘যে মেয়েরা বাজে ছেলেদের প্রেমে পড়তে প্রলুব্ধ হয় তারা মূলত গভীর কোনো প্রণয়াসক্তি এড়িয়ে চলতে চায় এবং প্রায়ই কোনো ধরনের আবেগসংক্রান্ত জটিলতায় আক্রান্ত হতে চায় না। তারা হয়তো শুধু মজা করার জন্যই একটু বাজে ছেলেদের সঙ্গে সময় কাটাতে চায়।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বাজে ছেলেদের প্রতি এই আকর্ষণের পেছনে তাদের শিশুকালের কোনো অভিজ্ঞতা প্রেরণাদায়ী শক্তি হিসাবে কাজ করতে পারে। এর মধ্যে মৌখিক বা আবেগগত কোনো নিপীড়নও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হয়ে থাকতে পারে। ছোটবেলার অন্ধকার অভিজ্ঞতাগুলো পরবর্তী জীবনে মনের মাঝে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞাতার চাহিদা তৈরি করতে পারে।
গ্রাফিক ডিজাইনার স্টেলা পল বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, খুব বেশি মেয়ে এ ধরনের সম্পর্কে খুব বেশিদিন স্থায়ী হতে চায়। তারচেয়ে বরং তারা একটু রিল্যাক্স হওয়ার জন্য বা মজা করার জন্যই এই তথাকথিত বাজে ছেলেদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। নারীদের মাঝে কাউকে পেলে-পুষে বড় করার যে স্বভাবগত প্রবৃত্তি বা প্রবণতা আছে তাও এর পেছনে একটি চলিকা শক্তি হিসাবে কাজ করে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন