মোটেলে ৩০ বছর ধরে যৌনদৃশ্য পর্যবেক্ষণ
টানা ৩০ বছর ধরে মোটেলে ওঠা অতিথিদের অন্তরঙ্গ দৃশ্য চুপিসারে দেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক মোটেল মালিক। জিরাল্ড ফোস (৮৩) নামের মানুষটি এই কাজটি করেছেন ছাদে লাগানো নকল এয়ার ভেন্টের (বায়ু নির্গমন পথ) ফাঁক দিয়ে। তিনি যা দেখতেন তা বিস্তারিত টুকে রাখতেন। তবে জিরাল্ডের দাবি, এই কাজটি ছিল তার গবেষণা।
ব্রিটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য সানকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জিরাল্ড বলেন, “আমি মনে করি, এখন পর্যন্ত আমি সেরা যৌন গবেষক। অন্যদের চেয়ে যৌনতা সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। লোকে আমাকে ‘পিপিং টম’, ‘উইন্ডো পিকার’ বলে ডাকে। আসলে আমি তা নই। আমি একজন ‘ভয়ার’ বা ঈক্ষণকামী (অপরের যৌনক্রিয়া বা যৌনাঙ্গ দেখে যৌন তৃপ্তিলাভকারী ব্যক্তি)। আমি ‘ভয়ার’ শব্দটিকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছি।”
জিরাল্ড আরও বলেন, “আমি এই কাজটি ৩০ বছর ধরে করেছি। আমার প্রতিটি কার্যক্রম ও পর্যবেক্ষণ সব প্যাডে লেখা রয়েছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের ডেনভারে ম্যানর হাউস মোটেলে এই গবেষণা শুরু করেন জিরাল্ড।
হলিউডের জনপ্রিয় নির্মাতা ও প্রযোজক স্টিভেন স্পিলবার্গ এই কাহিনি নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণেরও ঘোষণা দিয়েছেন। আর ছবিটি পরিচালনা করবেন জেমস বন্ড সিরিজের ‘স্কাইফল’ ছবির পরিচালক স্যাম মেন্ডেস।
জিরাল্ড তার মোটেলটি চালু করেন ১৯৬৬ সালে। এর ২১টি কক্ষের মধ্যে ডজনের বেশি কক্ষের ছাদে ছয় ইঞ্চি থেকে ১৪ ইঞ্চি পর্যন্ত গর্ত করে রাখেন। তারপর গর্তগুলো নকল এয়ার ভেন্ট দিয়ে ঢেকে রাখেন। যখনই অতিথিরা মোটেলটিতে থাকতে আসতেন, তখন দেখতে আকর্ষণীয় কি না এবং তারা মনোরম দৃশ্য উপহার দিতে পারবেন কি না তার ওপর ভিত্তি করে তাদের বিশেষ কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হতো। তারপর প্রতি রাতে জিরাল্ড চিলেকোঠার ছাদের এয়ার ভেন্ট থেকে অতিথিদের বিছানার সব দৃশ্য দেখতেন। এয়ার ভেন্টের জায়গাটাকে জিরাল্ড তার ‘গবেষণাগার’ বলতেন।
জিরাল্ড বলেন, “রাত থেকে ভোর পর্যন্ত আমি ওই জায়গায় থাকতাম। এটি বেশ ক্লান্তিকর কাজ ছিল। এরপর নিচে নেমেই লেখা শুরু করে দিতাম। মনের মধ্যে তাজা থাকা অবস্থায় সবকিছু লিখে রাখতাম। আমি এটি শুধু ‘যৌন আনন্দ’ পাওয়ার জন্য শুরু করিনি। আমি আসলে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি, মানুষ একান্তে কী করতে পছন্দ করে।”
বছর শেষে জিরাল্ড বার্ষিক প্রতিবেদনে তার সব তথ্য লিখে রাখতেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৩ সালে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ২৯৬ জনের যৌনমিলনের ঘটনা লিখে রেখেছিলেন। তার মধ্যে ১৯৫ জন ছিল বিষমকামী। তার বিচারে, সামগ্রিকভাবে এই বছরে ১৮৪ জন পুরুষ ‘পূর্ণ যৌনতৃপ্তি’ পেয়েছিল। এদের মধ্যে মাত্র ৩৩ জন নারী ‘চরম সুখ’ লাভ করেছিল।
জিরাল্ডের এই কাজে তার প্রথম স্ত্রী ডোনা শুরু থেকেই সাহায্য করতেন। এমনকি ডোনা তাকে নকল এয়ার ভেন্ট লাগিয়ে দিতে সাহায্য করতেন। অনেক সময় দুজন একসঙ্গে অতিথিদের যৌন দৃশ্য দেখতেন। দেখার সময় তারা নিজেরাও শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন।
জিরাল্ড বলেন, এই দৃশ্য সব সময় চমৎকার ছিল না। মাঝে মাঝে খুনখারাপি, আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
হাঁটুতে বাতের ব্যথার কারণে ১৯৯৫ সালে এই ‘গোপন দৃশ্য’ দেখা বন্ধ করে দেন জিরাল্ড। কারণ তার পক্ষে মই চড়ে চিলেকোঠায় ওঠা অনেক কষ্টকর ছিল। তারপর তিনি মোটেলটি বিক্রি করে দেন। কয়েক বছর আগে মোটেলটি ভেঙে ফেলা হয়।
কিন্তু জিরাল্ডের খুব ইচ্ছা ছিল তার কষ্টকর এই গবেষণা একদিন আমেরিকানদের যৌনজীবনে আলোর পথ দেখাবে। এটি নিশ্চিত করতে ১৯৮০ সালে আমেরিকার বিখ্যাত সাংবাদিক গে তালিজকে তার মোটেলে গোপন কাজ দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানান। কারণ জিরাল্ড জানতেন ওই সাংবাদিক এই ব্যাপারে আগ্রহ দেখাবেন। কারণ ওই সময়ে তালিজ মার্কিনিদের যৌনজীবন নিয়ে একটি বই বের করেছিলেন। তখন জিরাল্ডের সঙ্গে তালিজের একটি চুক্তি হয়। চুক্তিতে লেখা ছিল, জিরাল্ট অনুমতি দেয়ার আগ পর্যন্ত তালিজ এই ঘটনা কোথাও প্রকাশ করতে পারবে না।
অবশেষে ২০১৩ সালে তালিজকে এই কাহিনি প্রকাশের অনুমতি দেয়া হয়। তখন তালিজের বয়স ৮৪ বছর। চলতি মাসে ‘দ্য নিউইয়র্কার’-এ জিরাল্ডের কাহিনি প্রকাশিত হয়। ‘দ্য ভয়ার’স মোটেল’ নামে একটি বই এই বছরের জুলাইতে প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবা
শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, বিশেষ ধর্মীয় দিন উপলক্ষে ফটোশুটেবিস্তারিত পড়ুন
শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাস করেছেন সাকিব-ফেরদৌস, পারেননি সুমনসহ অনেকে
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করাবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?
গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন