মোদির আশ্বাসে আসামে গিয়ে জীবন যায় যায়
বিদেশ থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে সংখ্যালঘু হিন্দুরা ভারতে গেলে আশ্রয় দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সেই খবর শুনেছিলেন বাংলাদেশের সিলেটের জগন্নাথপুর উপজেলার ৬০ বছর বয়সী রাধিকার বিশ্বাস ও তাঁর ১০২ বছর বয়সী মা ঊনমতিবালা বিশ্বাস। সেই খবরে আস্থা রেখেই প্রায় দেড় বছর আগে ভিটেমাটি ছেড়ে গিয়েছিলেন ভারতে। কিন্তু সেখানে আশ্রয় তো জুটলই না, উল্টো কারাগারে স্থান হলো অসহায় এই নারী ও তাঁর ছেলের।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভারতের আসাম রাজ্যের শিলচর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন ঊনমতিবালা। সেখানে চার দেয়ালে বন্দি এই বৃদ্ধা ও তাঁর ছেলে যেকোনো মূল্যে ফিরতে চান বাংলাদেশের মাটিতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেটের জগন্নাথপুরের বাসিন্দা ৬০ বছরের রাধিকা বিশ্বাস তাঁর ১০২ বছরের বৃদ্ধা মা উনমতিবালা বিশ্বাসকে নিয়ে অবৈধভাবে সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে ভারতের আসামে যান। তাঁদের আশা ছিল, মোদি সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী যেকোনোভাবে ভারতে ঢুকলেই নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন।
ভারতে ঢোকার পর আসামের কাছাড় জেলার দুধপাতিল এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান দুজন। এর পর ওই গ্রামে একটি ঘর ভাড়া করে বেশ কয়েক মাস বসবাসও করেন। কিন্তু ভারতে প্রবেশের পর থেকে হাজার চেষ্টা করেও নাগরিকত্ব জোগাড় করতে পারেননি তাঁরা। ফলে এক সময় হতাশ হয়ে পড়েন বৃদ্ধা মা ও ছেলে। ফুরিয়ে আসতে থাকে বাংলাদেশ থেকে সহায়-সম্পত্তি বিক্রি করে নিয়ে আসা টাকা পয়সাও। আত্মীয়রাও টাকা ফুরানোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন। চূড়ান্ত অসহায় অবস্থার মধ্যে তাঁরা দুধপাতিল গ্রাম ছেড়ে আশ্রয় নেন শিলচর শহরে।
শহরের বিভিন্ন স্কুল ও অফিস কাছারির বারান্দায় রাত কাটাতে শুরু করেন মা ও ছেলে। ধীরে ধীরে দুই বাংলাদেশি বৃদ্ধের করুণ কাহিনী ছড়িয়ে পড়তে থাকে এলাকার মানুষের মুখে মুখে। খবর জানতে পেরেই শিলচরের পুলিশ যায় তাঁদের কাছে। যাবতীয় ঘটনা জানার পর বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁদের।
শিলচর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা বৃদ্ধ দুই বাংলাদেশি ১২ মে গ্রেপ্তার হন। নির্দিষ্ট দিন অন্তর অন্তর শিলচর আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে তাঁদের। ভারতে নাগরিকত্বের আশায় এসে জেলবন্দি হওয়া রাধিকা বিশ্বাস পুলিশের গাড়িতে চেপে শিলচর আদালতে আসার পথে গণমাধ্যমে জানান, তাঁদের আর ভারতে থাকার কোনো ইচ্ছে নেই। নিজের দেশ বাংলাদেশে ফিরে যেতে চান যেকোনো মূল্যে।
আসামের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ভাষ্য
মোদির আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে যাওয়ার পর দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে শিলচরের বিধায়ক ও আসামের বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওয়ান ইন্ডিয়া ডটকমকে বলেন, বিগত সময়ে ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস সরকার রাধিকা ও ঊনমতিবালার দুর্ভোগের জন্য দায়ী। তিনি বলেন, এ ধরনের সমস্যা সমাধানে অবিলম্বে নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিল-২০১৬ পাস করা হবে। এই বিলে সমর্থন দিতে কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শিলচর থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসের সংসদ সদস্য (এমপি) সুস্মিতা দেব বলেন, তাঁর দল কখনো নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা করেনি। তিনি বলেন, ‘নির্যাতিত অভিবাসীদের নাগরিকত্বের বিষয়টি ভিন্ন। এই পরিবারটি (দুই বাংলাদেশি) দাবি করতে পারে না যে, তারা নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে এসেছে। তাদের মতো আমাদের সহমর্মিতা আছে। কিন্তু তারা এখানে অবৈধভাবে এসেছে।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন