মোবাইলে প্রেমের ফাঁদঃ বেড়াতে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কলেজছাত্রী সুরভী আকতারকে মুঠোফোনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে যমুনার দুর্গম চরে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। ওই ছাত্রীর কথিত প্রেমিক মাসুদ রানা ওরফে সাগর (২৫) ও তাঁর পাঁচ বন্ধু এ ঘটনা ঘটান।
মাসুদ রানা ও তাঁর এক বন্ধু মামুন আহমেদ (১৯) এ হত্যার বর্ণনা দিয়ে গত সোমবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই দিন সন্ধ্যায় বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আবু রায়হানের আদালতে তাঁরা ওই জবানবন্দি দেন। তাঁদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আজ মঙ্গলবার তাঁদের আরেক সহযোগী সারিয়াকান্দি উপজেলার জোড়গাছা গ্রামের পিকআপ ভ্যানচালক সাইদুর রহমানকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে গত রোববার সুরভী আকতারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথোপকথনের সূত্র ধরে সারিয়াকান্দি থানার পুলিশ ঢাকা থেকে কথিত প্রেমিক মাসুদ ও তাঁর বন্ধু মামুনকে গ্রেপ্তার করে। মাসুদ বগুড়ার ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। মামুন একই উপজেলার হটিয়ারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। দুজনই পেশায় রাজমিস্ত্রি।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার তরনীহাট ডিগ্রি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী সুরভী আকতার ৪ জানুয়ারি কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। সুরভী সারিয়াকান্দি উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের দিনমজুর সুরুত জামানের মেয়ে। নিখোঁজের দুই দিন পর সুরুত জামান সারিয়াকান্দি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ১০ জানুয়ারি সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনার দুর্গম চরাঞ্চল দক্ষিণ ধারাবর্ষা এলাকার একটি ঝাউবন থেকে সুরভীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এস এম ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, সুরভীর খুন হওয়ার আগে কয়েক মাসের কথোপকথনের রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়। এর ভিত্তিতে মাসুদ রানার খোঁজখবর করা হয়। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, লাশ উদ্ধারের পরের দিন থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন মাসুদ। পরে ঢাকা থেকে প্রথমে মাসুদ রানা এবং তাঁর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মামুন আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা দুজনই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আরও যে তিনজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে তাঁরা জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, তাঁরা হলেন গাবতলী উপজেলার সোনামুয়া গ্রামের সিএনজিচালক আবদুল হান্নান (৩০), ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া গ্রামের কালু মিয়া (৩৫) ও রেজাউল করিম (২৮)।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দিতে মাসুদ রানা আদালতকে জানিয়েছেন, সিএনজিচালক আবদুল হান্নান তাঁর পূর্বপরিচিত। তাঁর কাছ থেকেই মাসুদ সুরভীর মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করেন। এরপর মুঠোফোনে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তিন মাস ধরে মুঠোফোনে কথোপকথনের একপর্যায়ে ৪ জানুয়ারি সকালে চরে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সুরভীকে ধুনটের গোসাইবাড়ি আসতে বলেন মাসুদ। আবদুল হান্নান তাঁর সিএনজিতে সুরভীকে সেখানে পৌঁছে দেন। এরপর আওলাকান্দি ঘাট থেকে যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে সুরভীকে নিয়ে মাসুদ বোহাইল চরে পৌঁছান। সারা দিন চরে সময় কাটানোর পর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে বাড়ি ফেরার তাগাদা দেন সুরভী। এ সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মাসুদ রানা এবং তাঁর পাঁচ বন্ধু মিলে সুরভীকে চরের একটি ঢোলকলমির ঝাউবনে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। সুরভী চিৎকার করেন এবং একপর্যায়ে পুলিশকে ঘটনাটি বলে দেওয়ার হুমকি দেন। তখন হান্নান, কালু ও রেজাউল সুরভীর গলাটিপে ধরেন। মাসুদ ও মামুন কোমর এবং হাত, আর সাইদুর পা চেপে ধরেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর লাশ ফেলে তাঁরা পালিয়ে যান। প্রথম আলো
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন