যাঁর দেখানো পথে হেঁটেছেন রফিক-সাকিবরা
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অগ্রযাত্রায় বাঁ-হাতি স্পিনার-অলরাউন্ডারদের ভূমিকা অসামান্য। মোহাম্মদ রফিক, আব্দুর রাজ্জাক, সাকিব আল হাসানদের হাত ধরে বাংলাদেশ পেয়েছে অনেক সাফল্য। সাকিব তো নিজেকে নিয়ে গেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারদের কাতারে। তবে তাঁরা সবাই কিন্তু হেঁটেছেন একজনের দেখানো পথে। এনামুল হক মনি। বাংলাদেশের ক্রিকেট যাত্রার একেবারে শুরুর দিকে যিনি ছিলেন দলের অন্যতম প্রধান সদস্য। বাংলাদেশের প্রথম সফল বাঁ-হাতি স্পিনার। ১৯৬৬ সালের আজকের এই দিনেই জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের কিংবদন্তিতুল্য এই অলরাউন্ডার।
১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচটার কথা মনে আছে? নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন ধুঁকছে, নাইমুর রহমান দুর্জয় ও এনামুল হক মনি মিলে অষ্টম উইকেট জুটিতে যোগ করলেন ৩৪ রান। হাসিবুল হোসেন শান্তকে নিয়ে নবম উইকেটে আরো ১১ রান যোগ করে বাংলাদেশের স্কোরটাকে ১০০ রানের কোটা পার করান এনামুল হক মনি। ডিওন ন্যাশের বলটাকে কাভার দিয়ে চার মারার দৃশ্যটা তো বালাদেশের ক্রিকেটের অনন্য এক মুহূর্ত। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন এই অলরাউন্ডার এনামুল হক মনি।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম জয়েও মনির অসামান্য ভূমিকা ছিল। এডিনবার্গে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেও ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। ৯৬ রানে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশের ভরসা হয়ে উইকেটে টিকে ছিলেন মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। দারুণ খেলছিলেন এই ব্যাটসম্যান। তবে স্কোরটা বড় করতে অন্যে প্রান্ত থেকে সাহায্য দরকার ছিল। নান্নুকে সহায়তা করতে উইকেটে আসেন মনি। অষ্টম উইকেট জুটিতে যোগ করেন মহামূল্যবান ৩৭টি রান। ৪০ বলে ১৯ রান করেন মনি।
বল হাতেও দুর্দান্ত পারফর্ম করেন এই অলরাউন্ডার। ৪৬ ওভার শেষে জয় থেকে মাত্র ২৪ রান দূরে স্কটল্যান্ড। স্কটিশদের হাতে রয়েছে দুই উইকেট। প্রথম বলেই রান আউট হয়ে ফিরলেন ব্লেইন। দ্বিতীয় বলে অসিম বাটকে আউট করে ক্রিকেটের মহারণে বা্ংলাদেশকে প্রথম জয় এনে দেন এই মনি।
স্কুল জীবন থেকে ক্রিকেটের ভক্ত ছিলেন মনি। ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে তিনি বাংলাদেশ বিমান ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। পরের মৌসুমে ডাক পান জাতীয় দলে। অস্ট্রেলেশিয়া কাপ খেলতে দলের সঙ্গে উড়াল দেন শারজায়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০ ওভারে ৭২ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। ব্যাটিং করতে নেমে ২৯ বলে করেন ১৩ রান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে স্টিভ ওয়াহর বলে আউট হওয়ার আগে ১৮ রান করেন মনি। এক ওভার বল করলেও কোনো উইকেট পাননি।
এরপর থেকেই দলের অন্যতম সদস্য ও অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হন এই অলরাউন্ডার। ১৯৯০, ১৯৯৪ এবং ১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত তিনটি আইসিসি ট্রফিতে ৩৫টি উইকেট নেন তিনি। ১৯৯২ সালে সফররত পশ্চিমবাংলা দলের বিরুদ্ধে ১৩১ রান করেছিলেন মনি। একই ম্যাচে কলকাতার হয়ে ১২৯ রান করেন সৌরভ গাঙ্গুলী।
১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের আইসিসি ট্রফি জয়ে অসামান্য অবদান রাখেন এনামুল হক মনি। মাত্র ১৮ গড়ে ১২ উইকেট নেন এই বাঁ-হাতি স্পিনার। বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ জয়ের সাক্ষী হয়ে আছেন মনি। হায়দরাবাদে কেনিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচে ২ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের তিন বছর পর বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আম্পায়ারিং ক্যারিয়ার শুরু করেন মনি। ২০১২ সালে নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে ম্যাচ দিয়ে প্রথমবারের মতো টেস্ট ক্রিকেটে আম্পায়ারিং করেন এই ক্রিকেটার।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন