যাচ্ছে নারী আসছে ইয়াবা
এ দেশের তরুণী-কিশোরীদের পাচার করার বিনিময়ে লাখ লাখ পিস ইয়াবা আমদানি করার ভয়াবহ তথ্য পাওয়া গেছে। দুর্ধর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা পর্যটকবেশে ভ্রমণের নামে নারীদের নিয়ে কক্সবাজার, টেকনাফ কিংবা সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাচ্ছেন, ফেরার সময় তাদের বিনিময়ে নিয়ে আসছেন ইয়াবা। জানা যায়, গত দুই মাসে শুধু ঢাকার কয়েকটি ইয়াবা সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই অন্তত বিশ জন তরুণী পাচার হয়ে গেছে। পাচারের পর মিয়ানমারে এসব তরুণীর ভাগ্যে কী জুটছে তা আর জানা যাচ্ছে না।
ঢাকার বনশ্রীর ডাকসাইটে ইয়াবা ব্যবসায়ী জামাই রাসেলের অতিসম্প্রতি দুই অভিজাত তরুণীকে পাচারের চেষ্টা ব্যর্থ হতেই ‘দিচ্ছি নারী, আনছি ইয়াবা’ কাহিনী ফাঁস হয়ে যায়। ইয়াবাসম্রাট রাসেল ওরফে জামাই রাসেল ওরফে ভাতিজা রাসেল, ভাগ্নে রাসেল ইত্যাদি নানা নাম-পরিচয় গড়ে উঠলেও রাসেলের প্রকৃত নাম ফয়সাল ইসলাম ওরফে ফয়জুল ইসলাম রাসেল। তার বাবার নাম মফিজুল ইসলাম, বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পশ্চিম পাইকপাড়া এলাকায়। বর্তমানে কে-১৮, দক্ষিণ বনশ্রী, রামপুরায় বসবাস। রেন্ট-এ-কারের গাড়ি ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি নিয়মিত টেকনাফ যাতায়াত করেন এবং ইয়াবা বাণিজ্য সচল রাখেন। সর্বশেষ রাসেল রেন্ট-এ-কারের একটি প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো-গ-১৭-৯৭০৭) নিয়ে কক্সবাজার থেকে ফেরার সময় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে ইকরা নামে এক তরুণী ও বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে আটক হন। খবর বাংলাদেশ প্রতিদিন’র।
তার পাচারের কবল থেকে পালিয়ে ঢাকায় ফিরে আসা ‘ও’ লেভেলের ছাত্রী হাইয়া ইসলাম জানান, ইকরা ও তাকে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে রাসেল কক্সবাজারে নিয়ে যান। টেকনাফে নিয়েই তাদের দুজনকে মিয়ানমারের একটি স্পিডবোটে রোহিঙ্গাদের হাতে তুলে দেওয়ার পাঁয়তারা করেন। এ সময় রাস্তি নামে এক ছেলেবন্ধুর সহায়তায় হাইয়া ইসলাম ও ইকরা চৌধুরী টেকনাফ থেকে পালিয়ে কক্সবাজার ফিরে আসেন। কিন্তু রাসেল ও তার সহযোগীরা কক্সবাজারে ধাওয়া করে ইকরা চৌধুরীকে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেলেও হাইয়া ইসলাম ঢাকায় ফিরতে সক্ষম হন। হাইয়ার মাধ্যমে পাচার কাহিনী ছড়িয়ে পড়লে রাসেল প্রায় ৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ তরুণী ইকরা চৌধুরীকে নিয়ে ঢাকার পথে রওনা দেন। পরে ইকরার দেওয়া তথ্যানুযায়ী ১০ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে কাঁচপুরে অবস্থান নিয়ে ইকরার অভিভাবকরা ওই গাড়িটি আটক করে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
পরে সোনারগাঁ থানা পুলিশ অকুস্থলে পৌঁছে ইকরার তথ্যানুযায়ী গাড়ির এসি বনেট খুলে তার ভিতর থেকে ৪ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। কিন্তু থানায় নেওয়ার পর তথ্যদাতা ইকরা চৌধুরীকেও আসামি করে মামলা হয়ে যায়। রাসেলের পাচার চেষ্টার হাত থেকে রেহাই পাওয়া হাইয়া ইসলাম ও রাস্তিকেও একই মাদক মামলায় আসামি করেছে পুলিশ। ইকরা ও হাইয়ার অভিভাবকরা অভিযোগ করে জানান, নারী পাচারের বিনিময়ে রাসেলের ইয়াবা বাণিজ্যের খবর ধামাচাপা দিতেই পুলিশ ওই দুই তরুণীকে একই মামলায় আসামি বানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইয়াবাসম্রাট রাসেলের সিন্ডিকেট গত এক মাসে আরও অন্তত চার তরুণীকে মিয়ানমারে পাচার করেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেহব্যবসায় জড়িত ‘কলগার্লদের’ বেড়ানোর কথা বলে কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়, পরে তাদের কারও সন্ধান আর পাওয়া যায় না।
জানা গেছে, বাড্ডা, রামপুরা ও শাহজাহানপুর এলাকা থেকে কলগার্ল হিসেবে রাজিয়া, কুমকুম, নাসিমা, কেয়া ও ন্যান্সি নামে পাঁচজন কক্সবাজার গেলেও নাসিমা কেবল ঢাকায় ফিরতে পেরেছেন। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কক্সবাজারে থ্রি স্টার মর্যাদার একটি আবাসিক হোটেলের নিয়ন্ত্রণে কলাতলী এলাকায় কয়েকটি সুরক্ষিত ফ্ল্যাট বাসা ভাড়ায় রাখা হয়েছে।
নারী পাচারকারী ইয়াবা সিন্ডিকেটের সদস্যরা কক্সবাজারে গিয়ে এসব ফ্ল্যাট বাসায় ওঠেন। সেখানে সঙ্গে নেওয়া তরুণীদের ওপর নানা কায়দায় অত্যাচার চালিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলা হয়, এরপর সুযোগ বুঝে টেকনাফের পথে নিয়ে যাওয়া হয়। উখিয়া ও টেকনাফের মাঝামাঝি একাধিক পয়েন্টে নামিয়ে মোটরসাইকেলে তুলে নাফ নদের তীরে নিয়ে সেসব তরুণীকে মিয়ানমারের বোটে পাচার করে দেওয়া হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন