যা ভাবছেন স্রেফ সে কারণেই শিশুদের পর্নে আসক্তি নয়
ইন্টারনেট যত সহজলভ্য হবে, মানুষ টেলিভিশনের চেয়ে ইউটিউব বেশি দেখবে। সেই সঙ্গে পর্ন ছবি দেখার প্রবণতা বাড়বে উল্লেখযোগ্য হারে। দেশে দেশে এটি নিষিদ্ধ বা অবৈধ হলেও মানুষ দেখবে।
সম্প্রতি ব্রিটেনের এক জরিপে বলা হয়, প্রতি ৫ জন শিশুর মধ্যে একজন পর্ন ছবি দেখেছেন। গত বছর প্রতিমাসে ১৪ লাখ শিশু পর্ন সাইটে ঢুঁ মেরেছেন যাদের বয়স ১৮ বছরের কম। সাধারণ শিশুদের পর্ন মুভি দেখা নিয়ে বেশ আশঙ্কায় থাকেন বাবা-মায়েরা। তবে যে কারণে দেখছে বলে ধারণা করা হয়, তাই একমাত্র কারণ নয়।
বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার্থীদের যৌনতাপূর্ণ ছবি দেখার বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেন ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ ফেলো ফিয়োনা ভেরা গ্রে। তিনি জানান, গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরা কেবল যৌন তৃপ্তির জন্যে পর্ন ছবি দেখেন না। এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
টিনএজ ছেলেরা পর্ন মুভি একাই দেখেন না। তারা বন্ধুদের দেখান যৌন সক্ষমতা এবং মানসিক শক্তি প্রদর্শনের জন্যে। বিশেষ করে সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্যে এসব প্রযোজ্য।
তবে তরুণ নারী-পুরুষ মজার জন্যে পর্ন দেখেন। ব্যক্তিগত অনুভূতি উপভোগ এবং বন্ধুদের সঙ্গে এসব দেখে কৌতুক করার জন্যেই পর্ন মুভি দেখেন অনেকে।
বহু শিশু আবার সেই কারণেই এসব ছবি দেখেন যে কারণে প্রাপ্তবয়স্করা দেখে থাকেন। যেমন হস্তমৈথুন বা যৌনকামনা চরিতার্থ করতে এসব দেখেন। অন্যান্য নারীর প্রতি আগ্রহ থেকেও দেখে থাকেন।
সার্বিক অর্থে পর্ন মুভি এই বয়সী ছেলে-মেয়েদের কাছে স্রেফ মজা উপভোগ করা। এমনকি গবেষণায় এমনও দেখা গেছে, কম্পিউটারে পর্ন মুভি দেখতে দেখতে স্কুলের হোমওয়ার্ক করছেন শিক্ষার্থীরা।
তবে পর্ন মুভি এ বয়সী ছেলে-মেয়ের মনে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। যেখানে মুভিতে যৌনতাকে অনেক বেশি রংচং মিশিয়ে দেখানো হয়। সেখানে যৌনকর্মে পুরুষকে সর্বেসর্বা হিসাবে তুলে ধরা হয়। এ কারণেই পর্ন মুভি দেখার ক্ষেত্রে বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হওয়ার সার্বজনীন নিয়মটি সমর্থন করা হয়।
দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, প্রযুক্তিপ্রেমী টিনএজাররা পর্ন ছবি দেখার ব্যবস্থা করেই নেন। তবে আইন-কানুন সমাজে প্রভাবশালী হয়ে থাকে। আইন থাকা সত্ত্বেও এগুলো দেখা বন্ধ করা যাচ্ছে না। কিন্তু দেখার ক্ষেত্রে আইন কিছু রয়েছে। এটাই বড় বিষয়। এগুলো দেখলেও তারা জানছেন যে, দেখাটা ক্ষতিকর। কৈশোর এবং তারুণ্যে পর্ন দেখার বিষয়ে কনসাল্ট করে যাচ্ছে সরকার। নিরাপত্তার জন্যে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আবার শিশুদের মধ্যে যৌনতা সম্পর্কে ধারণা সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে পর্ন মুভি। টিনএজার যৌন বিষয়ে স্বৈরাচারী হবে নাকি নারী বিদ্বেষী হবে তা নির্ভর করে মুভিটি কিভাবে বানানো হয়েছে। এমনকি যারা সদ্য ১৮ পেরিয়েছে তাদের জীবনেও ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি করতে পারে পর্ন মুভি।
২০১৩ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, তরুণরা পর্ন ছবিকে যৌনতার বিষয়ে এক গাইড বলে মনে করেন। আবার নারীরা পর্ন ছবি দেখেন চাপের মুখে পড়ে। যদিও এ থেকে অর্জিত কোনো ‘শিক্ষা’ তারা বাস্তবজীবনে প্রয়োগ করতে পারেন না। নারীরা যৌন বিষয়ে যে আকাঙ্ক্ষা অনুভব করেন, পর্ন ছবি তা বদলে দেওয়ার চেষ্টা করে। তখন তারা দারুণ লজ্জাবোধ করেন এবং পর্ন দেখে তা নিজের মধ্যে প্রয়োগ করতে ভয় পান।
যারা এসব বানান তাদের মধ্যে বয়স অনুযায়ী পর্ন ছবি বানানোর বিষয়টি মাথায় থাকে, তবে নেতিবাচক প্রভাব কমে আসবে। এ ছাড়া সরকারের সংশ্লিষ্ট নীতিমালার প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ। পর্ন মুভি দেখতে বয়সের বিষয়টি সবার আগে আসে। সে ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে সবারই।
সূত্র : টেলিগ্রাফ
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কল-কারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই: প্রতিমন্ত্রী
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, প্রতিষ্ঠানিকবিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলের কিশোরী জোনাকির মরদেহ যশোরে উদ্ধার
যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া মডেল মসজিদের পাশে একটি পুকুর থেকেবিস্তারিত পড়ুন
শিশুর স্কুল থেকে শেখা বদভ্যাস থামাবেন যেভাবে
স্কুল থেকে শিশুরা জীবনের দিকনির্দেশনা পেয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় বিভিন্ন নিয়মকানুনবিস্তারিত পড়ুন