যুক্তি ও তথ্য শুনুন, রামপাল বন্ধ করুন, প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় কমিটি
তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘যুক্তি ও তথ্য শুনুন, জনমত বিবেচনায় নিন, মানুষের কথা ভাবুন। দেশি ভূমি, বনগ্রাসী কিছু গোষ্ঠী আর ভারতের ব্যবসায়িক স্বার্থের কাছে আত্মসমর্পণ করে দেশের সর্বনাশ করবেন না, অবিলম্বে রামপাল প্রকল্পসহ সুন্দরবনবিনাশী সব অপতৎপরতা বন্ধ করার ব্যবস্থা নিন।’
গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলনকারীদের সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় কমিটি থেকে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে আজ এসব কথা বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের রামপাল ঘুরে আসার যে আহ্বান জানিয়েছেন, তার জবাবে নেতারা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে বর্তমান ডিজিটাল যুগে দূরত্ব জানার জন্য এলাকায় গিয়ে ফিতা দিয়ে মাপার দরকার হয় না, পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বসে এই দূরত্ব বের করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী যে দূরত্ব বলেছেন, আমরা তা স্বীকার করি, এই দূরত্ব যে নিরাপদ নয়, তা বহুবার তথ্য-প্রমাণসহ আমরা উপস্থিত করেছি। সরকারের আমন্ত্রণে এবং সরকারি আতিথ্যে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ দল এবং ইউনেসকো টিম সুন্দরবন রামপাল এলাকা সফর করেছে। কিন্তু এই সফর করে তাঁদের মত বদলায়নি, তাঁরা সবাই এই বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের কথাই বলেছেন। আমরা বহুবার রামপাল গিয়েছি, যাওয়ার কারণেই আমরা আরও নিশ্চিত হয়েছি যে রামপাল প্রকল্প সুন্দরবনসহ উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনবে।’
নেতারা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের রামপাল থেকে সুন্দরবন পদযাত্রা করতে পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা এই পরামর্শ গ্রহণ করলাম। আশা করি, পুলিশ ও সরকারি দলের মাস্তান বাহিনী অন্যবারের মতো এ যাত্রায় বাধা সৃষ্টি করবে না।’ তাঁরা আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা মানুষ নয়, বাঘের কথা চিন্তা করছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বাঘ সম্মেলনে তিনিই বলেছিলেন, “বাঘ বাঁচলে সুন্দরবন বাঁচবে, সুন্দরবন বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে।” বাঘসহ অসংখ্য প্রাণের আধার হিসেবে সুন্দরবন অসাধারণ প্রাণশক্তি ধারণ করে। বন বেঁচে থাকা দরকার, জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা দরকার মানুষের জন্যই। ৩৫-৪৫ লাখ মানুষের জীবিকা, ৫ কোটি মানুষের জীবনের নিরাপত্তা এই সুন্দরবনের ওপরই নির্ভর করে। সুন্দরবন বাঁচাতে হবে মানুষ বাঁচাতে, বাংলাদেশ বাঁচাতে।’
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী প্রযুক্তির কথা বলেছেন। এ বিষয়েও আমরাসহ দেশ-বিদেশের বহু বিশেষজ্ঞ বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত দিয়ে দেখিয়েছেন যে কীভাবে এই প্রযুক্তি সুন্দরবন বাঁচাতে পারবে না। এর সীমাবদ্ধতার কারণেই এর চেয়ে বেশি দূরত্বেও এনটিপিসি ভারতে বিদ্যুৎকেন্দ্র করার অনুমতি পায়নি। চীন, ভারতসহ বহু দেশ এসব কেন্দ্র বাতিল করেছে। তিনি সম্প্রতি কয়লা ভরা জাহাজডুবির কথা বলেছেন। গত তিন বছরে বহু জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে, সর্বশেষ এক হাজার টন কয়লা নিয়ে জাহাজ ডুবেছে। এর যে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি, তা নিয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা দেখা যায়নি, এগুলো উদ্ধার, ক্ষতি হ্রাস ও এ ধরনের পরিবহন বন্ধ করার বিষয়ে সরকারের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। রামপাল প্রকল্প হলে এই পথেই প্রতিদিন ১৩ হাজার টন কয়লার জাহাজ যাবে, আমাদের উদ্বেগ সে কারণেই আরও বেশি।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন