যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচারের মুখোমুখি বাঙালি সৈনিক
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পূর্ব পাকিস্তানে মোতায়েন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ বাঙালি অফিসার এবং সৈনিক বাংলাদেশের পক্ষে যোগ দেন। কিন্তু অল্প কিছু অফিসার এবং সৈনিক তখন পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে লড়েছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত এই প্রথম সেরকম এক সেনাকর্মকর্তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে যাচ্ছে। সেই লক্ষ্যে আদালতের তদন্ত সংস্থা সাবেক সেনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন একজন নন কমিশন্ড অফিসার হিসেবে। পরে তিনি একটি শর্ট কোর্স শেষ করে ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হন। তাঁকে পাঠানো হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর কিছুদিন আগে তিনি ছুটিতে আসেন পূর্ব পাকিস্তানের কুমিল্লায় তাঁর বাড়িতে।
মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর বয়স এখন ৭৫ বছর। তিনি থাকেন তাঁর বাড়ি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলায় গোলাপের চর নামের গ্রামে।
২০১৫ সালের অক্টোবরেমোহাম্মদ শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয় ।তদন্ত চলার সময়ই গত বছরের আগষ্ট মাসে তাঁকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান জানিয়েছেন, মোহাম্মদ শহিদল্লাহ পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ক্যাপ্টেন থাকার সময় ১৯৭০ সালের শেষ দিকে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। এরমধ্যে ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরু হলে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে না গিয়ে এখানে থেকেই পাকিস্তান বাহিনীর সাথে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে কাজ করেছেন। যুদ্ধের পর তিনি কয়েক বছর পালিয়ে থেকে পরে নিজ গ্রামে পুনর্বাসিত হয়েছেন। তবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে তিনি অবসর নেননি এবং ফেরতও যাননি।
সে সময় সেনাবাহিনীতে কাজ করা মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর বন্ধুদের কাছ থেকে এসব তথ্যের ব্যাপারে তদন্ত সংস্থা নিশ্চিত হয়েছে এবং এর সাক্ষ্য প্রমাণ তদন্ত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে বলে মি: খান উল্লেখ করেছেন।
মোহাম্মদ শহিদল্লাহ’র ছেলে আশরাফ ফারুকী বিবিসি বাংলাকে বলেছেন,জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ থেকে তার পিতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এসেছে বলে তারা মনে করেন। তবে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার পিতার ভূমিকা কি ছিল, এবং তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ছিলেন কিনা, এসব প্রশ্নে কথা বলতে চাননি আশরাফ ফারুকী।
মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ’র বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এরমধ্যে একটি হলো, ১৯৭১ সালের ৭ই জুন মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চিকিৎসক হাবিবুর রহমানকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করে। এরপর লাশ গোমতী নদীতে ফেলে দেয়।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে গ্রামের মানুষের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুন্ঠন, অপহরণ এবং নির্যাতন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভরিতে এবার ১,৯৯৪ টাকা বাড়লো স্বর্ণের দাম
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনবিস্তারিত পড়ুন
সংস্কার হলে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কত কমানো সম্ভব জানালো সিপিডি
মূল্য নির্ধারণ কাঠামোর সংস্কার হলে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ১১বিস্তারিত পড়ুন
রাজশাহীতে সমন্বয়ককে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় এক সমন্বয়ককে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগবিস্তারিত পড়ুন