যুদ্ধাপরাধের মামলায় সাখাওয়াতের রায় যেকোন দিন
একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ ৯ জনের বিরদ্ধে রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। ফলে এ মামলার রায় যে কোনদিন ঘোষণা করা হবে এই মর্মে আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে আসামিদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আব্দুস সাত্তার পালোয়ান এবং রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান। অপরদিকে, আসামিদের বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, সঙ্গে ছিলেন রেজিয়া সুলতানা।
এ মামলায় সাখাওয়াত হোসন ছাড়া অপর ৮ আসামিরা হলেন- মো. বিল্লাল হোসেন (৭৫), মো. ইব্রাহিম হোসেন (৬০), শেখ মোহাম্মদ মুজিবর রহমান (৬১), মো. আ. আজিজ সরদার (৬৫), আ. আজিজ সরদার (৬৬), কাজী ওহিদুল ইসলাম (৬১), মো.লুৎফর মোড়ল (৬৯), আব্দুল খালেক মোড়ল (৬৮)। এদের মধ্যে সাখাওয়াত হোসেনসহ ৩ জন গ্রেফতারের পর কারাগারে আছেন। বাকীরা পালাতক।
এর আগে, গত ১২ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষে প্রসকিউশনের যুক্তি উপস্থাপন শেষ করার পর আসামি পক্ষে তাদের প্রাথমিক যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। পর-পর দুই দিন (বুধ ও বৃহস্পতিবার) মামলায় সর্বশেষ যুক্তি উপস্থাপন করার পরে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য এই দিন ঠিক করেন।
আইনজীবী জেয়াদ আল মালুম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে দালিলিক এবং প্রত্যক্ষ সাক্ষীর মাধ্যমে প্রমাণ করতে পেরেছি যে তা সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। তাই আদালতে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেছি। আশা করি আমরা সর্বোচ্চ শাস্তির রায় পাবো।
অপরদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান সাংবাদিকদের বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য এবং ভিত্তিহীন সাক্ষী আনা হয়েছে আদালতে। আমরা আশা করছি আসামিরা ন্যায় বিচার পাবে এবং অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাবেন।
গত ৯ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে এই মামলায় প্রসিকিউশনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউশনের আনা ১৭ জন সাক্ষী তদের জবানবন্দি পেশ করেন। তবে আসামিপক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী ছিল না।
মামলায় গত ২৩ ডিসেম্বর এই ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর ৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। গত ১৪ জুন তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের পাচঁ অভিযোগ আনেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তাদের মধ্যে মোট ১২ আসামির মধ্যে বাকি তিনজনের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদেরকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
গত ১৬ জুন সাখাওয়াতসহ আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এর আগে আদালত ৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আত্মসমর্পণের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
২০১২ সালের ১ এপ্রিল থেকে এ মামলায় তদন্ত শুরু করে গত ১৪ জুন শেষ করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক খান। মুক্তিযোদ্ধাসহ ৩২ জনকে এ মামলার সাক্ষী করা হয়েছে।
১৯৯১ সালে জামায়াতের পক্ষে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে যশোর-৬ আসন থেকে শাখাওয়াত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু মেয়াদপূর্তির আগেই জামায়াত ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। মাওলানা সাখাওয়াত গত সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ আসন থেকে তিনি জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে আনা প্রসিকিউশনের অভিযোগ ৫টি হলো :
প্রথম অভিযোগ : যশোরের কেশবপুর উপজেলার বোগা গ্রামে এক নারীকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন এবং ধর্ষণ।
দ্বিতীয় অভিযোগ : একই উপজেলার চিংড়া গ্রামের চাঁদতুল্য গাজী ও তার ছেলে আতিয়ারকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যা।
তৃতীয় অভিযোগ : কেশবপুরের চিংড়া গ্রামের মো. নুরুদ্দিন মোড়লকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন।
চতুর্থ অভিযোগ : কেশবপুরের হিজলডাঙার আ. মালেক সরদারকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও খুন।
পঞ্চম অভিযোগ : কেশবপুরের মহাদেবপুর গ্রামের মিরন শেখকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন এবং ওই গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন