যেভাবে অ্যারেঞ্জড বিয়ে সম্পর্কে নারীবাদি রানীর ভুল ধারণা কাটল
রানীর বয়স ২৯ হয়ে গেছে; অথচ তার এখনো বিয়ে হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে তার বাবা-মা যতটা চিন্তিত তার চেয়েও বেশি চিন্তিত তার দূর সম্পর্কের আত্মীয়-স্বজনরা। তাদের মতে বিয়ে না হলে রানীর জীবনটাই বৃথা যাবে।
রানী নিজেও বিয়ে করতে চান। কিন্তু তিনি নিজের জন্য ‘সঠিক’ লোকটিকে এখনো খুঁজে পাননি। তিনি তার নিজের মাতোই স্বপ্নবাজ একজনকে খুঁজছেন। যার মধ্যে তার মতোই শিশুসুলভ সরলতা থাকবে; তবে প্রয়োজনের সময় তিনি পরিপক্কতারও পরিচয় দেবেন। যিনি তার মতোই জীবনের ছোটখাটো বিষয়েও গাঢ় আবেগী হবেন- হতে পারে তা পুর্নিমার রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা বা বৃষ্টির আওয়াজ শুনে আনন্দ লাভ করা।
কিন্তু জীবন তো আর কোনো রুপকথা নয়। অবশেষে বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনের পছন্দে রাজা নামের একজনকে বিয়ে করলেন রানী।
বিয়ের আগে রানী তার স্বামী রাজাকে আলাদা করে জানার কোনো সুযোগই পাননি। ফলে রানী ভাবলেন যা হবার হবে। যে কোনো কিছুর সঙ্গেই নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য মনস্থির করে ফেললেন তিনি। এমনকি নিজের নারীবাদি ধ্যান-ধারণাগুলোও সব মন থেকে ঝেড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন রানী।
রাজা কাজে-কর্মে খুবই পটু একজন লোক। কিন্তু নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে গেলে তিনি শব্দ খুঁজে পান না। রানীর প্রত্যাশা ছিল অন্তত নিজের মনের ভাব প্রকাশ, স্বামী হিসেবে স্ত্রীর কাছে তার চাওয়া কী এবং দাম্পত্য সম্পর্ক থেকে তার চাহিদা কী সেসব ভালো করে গুছিয়ে বলবেন রাজা।
রানীর মতে, দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে পারস্পরিক যোগযোগ গড়ে তোলাটা গুরুত্বপূর্ণ; অন্তত অ্যারেঞ্জড ম্যারেজের ক্ষেত্রে তো গুরুত্বপূর্ণ বটেই। কারণ এমন বিয়ের ক্ষেত্রে পরস্পরকে ভালো মতো জানার আগেই দাম্পত্য সম্পর্কে জড়াতে হয়। নিজেকে ঠিকঠাকমতো প্রকাশ করতে না পারার কারণে এ ধরনের দাম্পত্য সম্পর্কের শুরুতেই বিবাদ শুরু হয়। রানী এই বিবাদের স্থায়ীত্ব কত দীর্ঘ হতে পারে তা নিয়েও চিন্তিত হয়ে পড়েন।
বিয়ের কিছুদিন পরই রানী হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। ডাক্তাররা তাকে একটি সার্জারি করানোর কথা বলেন। অথচ রানী জীবনে একটি ইঞ্জেকশনও নেননি। ফলে সার্জারির কথা শুনেই রানী ঘাবড়ে যান।
এমন সময় স্বামী রাজা তার সহায়তায় এগিয়ে আসেন। রাজা তাকে অভয় দেন এবং সাহস যোগাতে থাকেন। এই প্রথমবার রানী তার স্বামীর সঙ্গে কথপোকথনের ফলে তার বুকের ভেতর চাপ কমে আসার অনুভুতি পেলেন। তার মনে হলো অবশেষে তার স্বপ্নের সেই পুরষটি তার জীবনে এসে গেছেন যিনি অতি যত্নের সঙ্গে তার হাতটি ধরে তাকে এই বিপদের সময়ে সঙ্গ দেবেন।
রানীর অনুভুতি হলো স্বামী রাজার উপস্থিতিই তার রোগ অর্ধেক উপশম করেছে। আর রাজার সহানুভুতিশীল এবং স্নেহময়ী চোখের দৃষ্টি অনেক না বলা কথাই বলে দিচ্ছে।
অবশেষে সে দিনটি আসলো। সেদিন রানীর পুরো পরিবার উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও রাজাই সব ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করলেন। রাজা সকলের জন্যই একটি সহায়ক খুঁটি হিসেবে কাজ করলেন। আর রানীও এই প্রথমবারের মতো রাজাকে নিজের জীবনে পেয়ে গর্ব অনুভব করলেন। রাজা তাকে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য অনবরত প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং সাহস যুগিয়ে গেলেন।
সার্জারির পরও রাজা একাই রানীর সেবাযত্ন করতে লাগলেন। এতে রানীর উপলব্ধি হলো তিনি এতোদিন যে অতি আবেগী এবং রোমান্টিক ভালোবাসার কথা কল্পনা করতেন দুনিয়ায় তার কোনো অস্তিত্বই নেই। বাস্তব জীবনে রোমান্সের অর্থ হলো, বিপদে-আপদে, সুস্থতা-অসুস্থতায় এবং সুখ-দুঃখে পরস্পরের পাশে থাকা। ফুল বা হীরে উপহার দিয়েই সবসময় ভালোবাসা প্রকাশ করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। বরং পরস্পরকে সময় দেওয়া, পরস্পরের জন্য উদ্বিগ্ন হওয়া এবং পরস্পরের যত্ন নেওয়াটাই ভালোবাসার মূল কথা।
এই একটি ঘটনাই ১০০টি উপহারের কাজ করে রানীর জীবনে। রানী এখন রাজাকে আরো ভালো করে চিনতে পারলেন। রানী বুঝতে পারলেন রাজার নীরবতার মধ্যেই তার জন্য গভীর ভালোবাস লুকিয়ে আছে।
মজার বিষয় হলো এরপর থেকে রানী এখন তার সকল ছোট ভাই-বোনদেরকে বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনদের পছন্দে বিয়ে করার জন্য উৎসাহিত করতে শুরু করেছেন। আর যারাই অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেন তাদেরে ওপর খড়গহস্ত হচ্ছেন রানী।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন