যেভাবে ‘না’ বলবেন আপনার সন্তানকে
আমরা সবসময় আমাদের সন্তানের সব চাওয়া পূরণ করতে পারি না। বা পারলেও সবক্ষেত্রে ‘হ্যা’ বলা সম্ভব হয় না। কিছু ক্ষেত্রে আমরা বাধ্য হই ‘না’ বলতে। ‘না’ মানেই নেতিবাচক নয়। এর প্রয়োজন আছে। নাহলে আমাদের সন্তান শিখবে না কোথায় তাদের থামতে হবে, বুঝবে না কোন সীমা অতিক্রম করা যায় না। ‘Ahaparenting.com’ এর সম্পাদক, শিশু মনস্তত্ত্ব এবং অভিভাবকের সাথে তার সম্পর্ক বিষয়ে একাধিক বইয়ের লেখক লরা মারখাম পি.এইচ.ডি এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘না’ বলার মধ্য দিয়ে আপনি আপনার সন্তানকে শেখাচ্ছেন-
১। দুঃখ বা অপ্রাপ্তি সহ্য করা যায়
২। এই দিন শেষ নয়, আরও দিন আছে
৩। তারা পরিস্থিতি বদলাতে পারবে না, কিন্তু সবসময়ই পরিস্থিতিকে ভাল দিকে নেওয়ার সুযোগ থাকবে।
কিন্তু শিশুরা ‘না’ বললেই কি শোনে? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা এর বিরোধিতা করে। কোন কিছু চাইলে সেটা না পাওয়ার দুঃখবোধ তারা মেনে নিতে পারে না। নিজের মনে সাথে লড়াইটা তারা এখনো শেখে নি। আমরাও জানতাম না এক সময়। বড় হতে হতে আমাদের মাঝে দায়িত্ববোধ তৈরি হয়েছে। এখন আর কিছু ভাল লাগলেই আবদার করে বসি না বা অবিবেচকের মত সেটা পাওয়ার জন্য উদ্রিব হয়ে উঠি না।
আপনার শিশুরও এই বোধ তৈরি হবে। ‘অপ্রাপ্তি’ অনেক বড় আবেগীয় অনুভূতি। এর সাথে অভ্যস্ত হতে সময় তো লাগবেই! আর সে সময় দিতে হবে আপনাকেই। ভেবে দেখুন, আপনার ‘না’গুলো যদি অবিনিময় যোগ্য হয়? আমরা প্রায়ই সন্তানদের সাথে এমনভাবে সন্ধি করি, ‘ এখন টিভি দেখা যাবে না, পড়তে বসতে হবে। বিনিময়ে রাতে খাওয়ানো হবে পিজ্জা!’ অর্থাৎ, ‘না’ গুলো বিনিময়যোগ্য। এক্ষেত্রে আমরাই কিন্তু সন্তানের হাতে তুলে দিচ্ছি তর্ক করার সুযোগ। এটা নয়ত ওটা। কোনকিছুর লোভ দেখিয়ে সাময়িক কাজ আদায় করা যায়, কিন্তু এতে তার মধ্যে কোন সংস্কৃতি বা শিক্ষা গড়ে ওঠে না।
কিন্তু আপনার ‘না’ যদি পরিষ্কারভাবেই ‘না’ বোঝায়? আর এরপরও যদি আপনার সন্তান সেটা মেনে না নেয়? জেদ করতে থাকে? শিশুরা যেটা বুঝতে পারে না, তা হল তাদের চাহিদায় ভুল কি আছে আর কেনই বা আমরা তাদেরকে কষ্টের অনুভূতি দিচ্ছি! একবারে ‘না’ বলে দিলে তারা অবহেলিত বোধ করে আরও জেদ করতে পারে।
নিজেদের ক্ষেত্রেই ভেবে দেখুন না! কেমন লাগে আপনি যখন কিছু চান আর সেটা পান না? হয়ত একটা চমৎকার ছুটিতে যেতে চান আপনি। বা কোন পোশাক কিনতে চান। অথবা চান নিজের জন্য সামান্য কিছু সময়। কেমন লাগবে যদি আপনার বন্ধু বলে, ‘আমিও চাই এটা হোক! এটা তোমার প্রাপ্য।’? আর কেমন লাগবে তখন যদি সে বলে, ‘তুমি কি পাগল নাকি? এ তো অসম্ভব! এসব চিন্তা বের করে দাও মাথা থেকে।” অথবা যদি বলে, ‘তুমি সবসময়ই কিছু না কিছু চাইতে থাক। তুমি আসলে অনেক লোভী’। তাহলে?
আপনার সন্তানের মনের অবস্থা কি হয় নিশ্চই বুঝতে পারছেন। একটা জন্মদিনের পার্টির আবদার বা কোন খেলনার চাহিদা একটি চাহিদা মাত্র, যা সে আপনার সাথে ভাগাভাগি করছে, পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছে। সরাসরি ‘না’ বলে মন ভেঙে না দিয়ে তাকে অনুরোধের সুরে না বলুন। আপনার অবস্থা বুঝিয়ে বলুন। তার আগ্রহের প্রতি আপনার কোন অবজ্ঞা নেই, এটা বোঝান। শিশুটি দায়িত্বশীল হওয়া এভাবেই তো শিখবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কল-কারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই: প্রতিমন্ত্রী
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, প্রতিষ্ঠানিকবিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলের কিশোরী জোনাকির মরদেহ যশোরে উদ্ধার
যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া মডেল মসজিদের পাশে একটি পুকুর থেকেবিস্তারিত পড়ুন
শিশুর স্কুল থেকে শেখা বদভ্যাস থামাবেন যেভাবে
স্কুল থেকে শিশুরা জীবনের দিকনির্দেশনা পেয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় বিভিন্ন নিয়মকানুনবিস্তারিত পড়ুন