যেসব কারণে বদলে ফেলতে হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র
সাদা কাগজে, সাধারণ কম্পিউটার প্রিন্টারে চার রঙে ছাপা জাতীয় পরিচয় পত্র এবং তা টেকসই করতে উপরে লেমিনেটিং নামে স্বচ্ছ প্লাস্টিকের আস্তর। একপাশে ছবি, নাম, পিতার নাম আর পরিচয় পত্র নম্বর। অন্য পাশে ঠিকানা ও যন্ত্রে পাঠযোগ্য কোড।
গত আট বছর ধরে বাংলাদেশের নাগরিকেরা এরকম একটি জাতীয় পরিচয় পত্রের সঙ্গে পরিচিত। এই পরিচয় পত্রটি কম-বেশী সব ধরণের নাগরিক সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রেই এখন অবশ্য প্রয়োজনীয় একটি দলিল।
কিন্তু এই পরিচয় পত্রটি বদলে প্লাস্টিকের একটি টেকসই ও যন্ত্রে পাঠযোগ্য স্মার্ট কার্ড বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। রবিবার সকালে সেই কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য সহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হাতে এই স্মার্ট কার্ড তুলে দেয়ার মাধ্যমে কর্মসূচিটি শুরু হয়। সোমবার থেকে বিতরণ শুরু হবে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে।
কিন্তু আট বছর ধরে এক ধরণের পরিচয় পত্র নাগরিকদের মধ্যে বিতরণ করার পর সেটি এখন বদলে ফেলার প্রয়োজন কেন হল?
জাতীয় পরিচয় পত্র প্রকল্পের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানজ্জামান মোহাম্মদ সালেহউদ্দীন বলছেন, ছাপা কাগজে লেমিনেটিং করা পরিচয়পত্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় নাগরিকেরা এই এর অপব্যবহার করার প্রেক্ষাপটে এটিকে উন্নতমানের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত কার্ডে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
নতুন যে আইডি কার্ডটি বিতরণ করা হচ্ছে, সেটি ৫টি স্তরের পলি-কার্বনেট দিয়ে তৈরি। এর ভেতরে একটি চিপ রয়েছে। আর রয়েছে তিনটি স্তরের বিভক্ত পঁচিশটি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য। এমনকি এই কার্ডের ভেতরে থাকবে নাগরিকের বায়োমেট্রিক তথ্য, অর্থাৎ আঙুলের ছাপ, চোখের মনির ছবি ইত্যাদি।
মি. সালেহউদ্দীন বলছেন, ‘এটার নিরাপত্তা বুহ্য অতিক্রম করার অত্যন্ত দুষ্কর হবে। মান বজায় রাখা যাবে। আর ব্যবহার ও গ্রহণযোগ্যতা উন্নীত হবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে’। আর জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমনের ক্ষেত্রে নতুন এই স্মার্ট কার্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন বক্তব্য দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় মোট নয় কোটি এরকমের স্মার্ট কার্ড তৈরি করে আগামী দিনগুলোতে নাগরিকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে বলে জানান জাতীয় পরিচয় পত্র প্রকল্পের মহাপরিচালক।
কিভাবে সংগ্রহ করা যাবে এই স্মার্ট কার্ড?
মি. সালেহউদ্দীন জানাচ্ছেন, প্রতিটি সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিতরণ শিবির বসানো হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকার নাগরিকদের আগে থেকেই জানিয়ে দেয়া হবে শিবির বসানোর দিনক্ষণ।
নির্ধারিত দিনে নাগরিকেরা ওই শিবিরে এসে, আঙুলের ছাপ দেবেন, চোখের মনির ছবি তুলবেন এবং পুরনো কার্ড জমা দেবেন। পরিবর্তে সঙ্গে সঙ্গেই তার হাতে তুলে দেয়া হবে নতুন স্মার্ট কার্ড। খবর- বিবিসি বাংলা
এদিকে ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, কার্ড বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোন হওয়ায় আজ প্রথমে এই স্মার্ট আইডি কার্ড রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরে রাজধানী ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশন ও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল কুড়িগ্রামে বিতরণের কাজ শুরু করা হবে। তারপর উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে পর্যায়ক্রমে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে দেশে ভোটার সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি। আট বছর আগে আট কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৮ নাগরিকের মধ্যে প্রথমবারের জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়েছিল।
কিন্তু কিছু অসাধু লোক ওই পরিচয়পত্র নকল করেছিল। মেশিন রিডেবল স্মার্টকার্ড এই ধরনের জালিয়াতি প্রতিরোধ করবে। স্মার্টকার্ডের নিরাপত্তা বজায় রাখতে ২৫টি আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন এবং মান নিশ্চিত করা হয়েছে। স্মার্টকার্ডের মধ্যে কার্ডধারী নাগরিকের সব তথ্য থাকবে। কার্ডধারীরা ব্যাংকিং, টিআইএন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্টসহ ২২ ধরনের সেবা পাবেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন