যে কারণে ঢাকা মহাসড়কে ছোট যান বন্ধ করা যাচ্ছে না
মহাসড়কে হরহামেশাই চলছে সিএনজি অটোরিকশা, ফিটনেসবিহীন ছোট ছোট যান। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও তা আমলে নিচ্ছে না কেউ। ব্যস্ততম মহাসড়কে দূর পাল্লার গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছোট গাড়ি চলার কারণে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা, নিভে যাচ্ছে বহু মানুষের প্রাণ। স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করে নিচ্ছে অনেকে। আর ঈদের সময় মহাসড়কে যান চলাচলের চাপ বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনার সংখ্যাও বাড়ে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বুধবার আরেক দফা মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা দেন। তাঁর এই ঘোষণায় কেউ কর্ণপাত করছে বলে মনে হচ্ছে না। কেননা আজও মহাসড়কে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চলাচল করতে দেখা গেছে। মন্ত্রীর ঘোষণার পর দিন বৃহস্পতিবার একাধিক অটোরিক্সা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এবং এতে বহু লোকের প্রাণহানি হয়।
আজ(বৃহস্পতিবার)বাসের ধাক্কায় সিএনজি চালিত অটোরিকশার দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়। গাজীপুরে ডেমু ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ যায় একই পরিবারের ৬ অটোযাত্রীসহ ৮ জনের। অথচ পাঁচ বছর আগেও সরকারের পক্ষ থেকে একই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিলো। এমনকি প্রতিবছর ঈদে মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করার জন্য বলা হয়। এসব সিদ্ধান্ত প্রতি বছর কেবল কাগজেই সীমাবদ্ধ থাকে।
স্থানীয়ভাবে নির্মিত এসব যান ধীরগতি, ফিটনেসবিহীন থাকার কারণে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। পাঁচ বছর আগেও মহাসড়কে সিএনজি অটোরিক্সার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা বন্ধ করা যায়নি।এই যখন অবস্থা ঠিক তখন মহাসড়কে লাশের মিছিল দেখে বুধবার ফের এসব যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে ওবায়দুল কাদের।কিভাবে এসব যান চলাচল বন্ধ করা যায় তা নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে।তবে অগ্রগতি হয়েছে খুবই কম।
ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, টেম্পো, এবং ভটভটি নামের স্থানীয় যানগুলো মাহসড়কে বাস ট্রাক চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে। তারা কোনো ট্রাফিক নিয়ম মানে না। সাধারণত মহাসড়কগুলোতে গাড়ির গতি বেশি থাকে। আর ছোট ছোট এসব যান ট্রাফিক নিয়ম না মেনে হুটহাট করে ওভারটেক করে থাকে। এর ফলে প্রতি বছরে শত শত লোক প্রাণ হারাচ্ছে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মাহনসড়কের বাসচালক বিপুল কুমার অভিযোগ করে বলেন, এসব যানের চালকদের ট্রাফিক নিয়ম সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা থাকে না। তারা রাস্তার মাঝে হঠাৎ গাড়ি থামিয়ে দেয়। কোনো সিগন্যাল না দিয়ে আরেকটি রাস্তায় চলে যায়, আকস্মিক রাস্তার মাঝে গাড়ি ঘুরিয়ে দেয়। আর এসব কারণেই দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।
পুলিশের প্রতিবেদন অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর গড়ে তিন হাজার লোক প্রাণ হারায়। তবে বিশ্ব ব্যাংক বলছে, প্রতিবছর নিহতের সংখ্যা ১২ হাজার। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হিসাব অবাক করার মতো।
সংস্থাটি বলছে, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর মারা যাচ্ছে ১৮ হাজার মানুষ। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলছেন অনেক আগেই আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলোম। কিন্তু কয়েকটি কারণে আমরা সিদ্ধান্তটি কার্যকর করতে পারছি না।
তিনি আরো বলেন, সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পুলিশ, প্রশাসন, আইন প্রণেতা, দলীয় নেতাসহ সবার সহেযোগিতা আমার দরকার। মন্ত্রণালয় ও পরিবহন শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, আগের নিষেধাজ্ঞাটি কয়েকটি কারণে কার্যকর হয়নি।
অনেক ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশ সরাসরি পরিবহন ব্যবসার সাথে জড়িত। এছাড়া সড়কে গাড়ি চালানো অব্যাহত রাখার জন্য অনেক জায়গায় গাড়ি মালিকরা ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশদের টাকা দিয়ে থাকে।
মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এক্ষেত্রে আমরা খুবই অসহায়। একার পক্ষে এসব অবৈধ যান চলাচল বন্ধ করা সম্ভব নয়। আমরা অবৈধ যান তৈরি করা বন্ধ করতেও অক্ষম। এ প্রসঙ্গে বুয়েটের অধ্যাপক এবং দুর্ঘটনা গবেষণা সংস্থার সাবেক পরিচালক শামসুল হক জানান, নিবন্ধন ছাড়া এসব যানবাহনের বেশিরভাগ চালকের কাছেই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই এসব যান এখনো সড়কে চলাচল করছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন