যে কারণে সৌদিতে নারী শ্রমিক পাঠাতে পারছে না বাংলাদেশ
অপপ্রচার ও গুজবের কারণে সৌদি আরবে নারী কর্মী পাঠানো যাচ্ছে না বলে সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে দশম জাতীয় সংসদের ‘প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র ৮ম বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে কমিটি সভাপতি নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, সৌদি আরবে নারী কর্মীদের নির্যাতন করা হয়-এমন গুজব ও মিথ্য অপপ্রচারের কারণে বাংলাদেশি মহিলারা দেশটিতে যেতে চাচ্ছে না। দেখা যায়, অনেক নারী কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ায় দেশে আসতে পারছে না। কিছু লোক বিশেষ করে ধর্মান্ধ গোষ্ঠী ও কিছু মিডিয়া প্রচার করে সেখানে নারী নির্যাতন হচ্ছে। এজন্য তারা যেতে চাচ্ছে না।”
গত ১০ ফেব্রুয়ারি ৮০০ রিয়াল (প্রায় ১৬ হাজার টাকা) বেতনে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২০ হাজার গৃহকর্মী নেওয়ার ব্যাপারে সৌদি সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি সই হয়।
সম্প্রতি সৌদি গেজেটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, অধিকাংশ বাংলাদেশি নারী শ্রমিক সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী নন। এর কারণ হিসেবে সৌদি গেজেট উল্লেখ করে, বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মীরা সৌদি আরবের আচার, সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন না।
জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ১০ হাজার নারী কর্মী সৌদি আরবে পাঠানোর কথা থাকলেও সরকার তা পারছে না। কারণ, সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য আগ্রহী নারী কর্মীদের সংখ্যা কমে গেছে।
এর আগে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক নারী কর্মীদের নাম নিবন্ধনের জন্য গত ৫ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। পরবর্তী সময়ে নিবন্ধন কার্যক্রম ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে নাম নিবন্ধন করেন মাত্র ২ হাজার ৫৭০ জন নারী।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল তেলসমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরব, যা এ বছর তুলে নেওয়া হয়।
সরকারি হিসাবে বর্তমানে ২০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। এই হিসাবে সৌদি আরবই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। আর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক নিত সৌদি আরব।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানুয়ারি’১৫ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে অনুমতি নিয়ে ৪ লাখ ১৪ হাজার ৮১২ জন কর্মী বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন।
বৈঠকে আরো জানানো হয়, বৈদেশিক কর্মসংস্থান নীতি-২০১৫ প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ওই নীতিতে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর আচরণ বিধি এবং শ্রেণীকরণের বিষয়টিও পরীক্ষাধীন।
বৈঠকে জানানো হয়, নীতিমালার মাধ্যমে এজেন্সিগুলোকে নজরদারির মধ্যে এনে অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
বৈঠকে মালয়েশিয়ায় জি টু জি প্রক্রিয়ায় কাঙ্খিত মাত্রায় অভিবাসী কর্মী পাঠানো হচ্ছেনা বিধায় বিষয়টি আরো দ্রুততার সাথে করার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। এছাড়া বৈঠকে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলো থেকে কেউ যাতে ভুয়া সনদ নিতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয় ।
বৈঠকে কমিটির সদস্য মো: ইসরাফিল আলম, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, মাহফুজুর রহমান, দিদারুল আলম এবং মো. আয়েন উদ্দিন অংশ নেন। এছাড়া বিশেষ আমন্ত্রনে প্রবাসী কলাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি বৈঠকে অংশ নেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভরিতে এবার ১,৯৯৪ টাকা বাড়লো স্বর্ণের দাম
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনবিস্তারিত পড়ুন
সংস্কার হলে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কত কমানো সম্ভব জানালো সিপিডি
মূল্য নির্ধারণ কাঠামোর সংস্কার হলে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ১১বিস্তারিত পড়ুন
রাজশাহীতে সমন্বয়ককে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় এক সমন্বয়ককে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগবিস্তারিত পড়ুন