রংপুর-দিনাজপুরগামী ট্রেনে উপচেপড়া ভিড়, সঙ্গে ভোগান্তি
‘ভাই গিজগিজ করছে মানুষে, ভ্যাবসা গরম, দম বন্ধ হয়ে আসছে। আর টিকতে পারছি না। অনেক কষ্ট করে বসার একটা জায়গা পেলেও ঠিকতে পারছি না।’ কথাগুলো রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী সোহাগীর। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে একাই ট্রেনে চেপেছেন সোহাগী। ঈদের এক দিন আগে টিকিট ছাড়াই সোহাগীর মতো আরও অনেকেই ট্রেনে চড়ে বসেছেন। টিকিট ছাড়াই উঠেছেন পরে অসুবিধা হবে না? জানতে চাইলে সোহাগীর বলেন, ভাবছিলাম বাসে যাবো, যেভাবে জ্যাম লেগেছে তাতে করে সড়ক পথে রওয়ানা দিলে ঈদের আগে বাড়ি পৌছানো সম্ভব নয়। তাই ট্রেনে উঠেছি, ‘টিকিট’ পরে দেখা যাবে।
তবে ট্রেন সার্ভিসটা গত কয়েক দিন ভালোই চলছিল। আজ রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশনে ‘পারাবত এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি অতিরিক্ত যাত্রী চাপে কয়েক ঘণ্টা বিকল হয়ে পড়ে থাকায় ট্রিনের শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এটি যাত্রী ভোগান্তিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। অন্যান্য লাইনে ট্রেনের যাত্রী চাপ স্বাভাবিক থাকলেও দিনাজপুরগামী একতা ও রংপুর এক্সপ্রেসে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ছাদেও ছিল যাত্রীদের ব্যাপক চাপ।
আজ কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রংপুর এক্সপ্রেস অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে সাড়ে তিন ঘন্টা দেরি করে ছাড়ে।
কমলাপুরে রেলের এক কর্মকর্তা ঈদ যাত্রার প্রথম দিকে কমলাপুর রেলওয়ে থেকে ট্রেনগুলি সময়মত ছেড়ে গেলেও আজ ট্রেনের শিডিউল পুরোপুরি ভেঙ্গে পরে।
রেল কর্তপক্ষ বলছেন, সকাল থেকে কয়েকটি ট্রেন সময়মত ছেড়ে গেলেও, বিপত্তি ঘটে বিমান বন্দর স্টেশনে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের ভ্যাকুয়াম বিকল হয়ে পড়ায় সাড়ে তিন ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
রবিবার কমলাপুরে অন্যান্য ট্রেনে ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় কম থাকলেও দিনাজপুরগামী একতা ও রংপুর এক্সপ্রেসে ছিলো উপচে পড়া ভিড়। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা গার্মেন্ট কর্মীদের ছুটি হওয়ায় আজ সন্ধ্যা থেকে কাল পর্যন্ত ঘরমুখী যাত্রীদের চাপ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেসের ছাদে প্রথমে নিজে উঠে পরে বন্ধু আতাউলকে হাত ধরে তুলছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীজীবী মঈন উদ্দিন। কেন এত ঝুঁকি নিয়ে ছাদে উঠছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মঈন বলেন, ‘আমরা বাসে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলাম কিন্তু সড়ক পথে অতিরিক্ত যানজটের খবর শুনে ট্রেনে করে যাচ্ছি। আসলে এতো ভিড়ের মধ্যে বগিতে উঠতে পারিনি, সে জন্য বাধ্য হয়েই ছাদে উঠে বাড়ি ফিরছি।’
রংপুর এক্সপ্রেসে প্রচন্ড ভিড়ের মধ্যে কোন সিট না পেয়ে ট্রেনের দরজার এক পাশে জায়গা করার করে নিয়েছেন করছেন ব্যবসায়ী আ. রোমান জয়। তিনি বলেন, ‘ট্রেনের ভিতরে দাড়ানোর জায়গা নেই। ভিতরে প্রচন্ড গরম, তারপরওতো বাড়ি যেতে হবে। এতো কষ্টের পর যখন পরিবারের সদস্যদের মুখ দেখব তখন কোন কষ্টের কথা মনে থাকবে না।’
ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ের ব্যাপারে কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, সকাল থেকে ট্রেনগুলি সময়মতই ছেড়ে যাচ্ছিল। কিন্তু বিমান বন্দর স্টেশনে সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনটির ভ্যাকুয়াম বিকল হয়ে গেলে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ থাকে। তারপর থেকে প্রায় সকলট্রেনই কয়েক ঘন্টা করে অন্তত ৪/৫ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে।
সীতাংশু বলেন, ট্রেনের ছাদে ওঠা নিষেধ। তারপরও যাত্রী অতিরিক্ত হওয়ায় বাধা দেওয়া সত্ত্বেও তারা উঠছেন। তবে লিফলেট, মাইকিং এবং নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে ছাদে ওঠা থেকে লোকজনকে বিরত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন