রহস্যজনক কারণে আদালতে নেয়া হয়নি এমপি পুত্র রনির জবানবন্দি, রিমান্ডও চায়নি পুলিশ
চার দিনের রিমান্ড শেষে রাজধানীর মগবাজারের ইস্কাটনে এলোপাতাড়ি গুলি করে জোড়া খুনের ঘটনায় আটক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে রহস্যজনক কারণে আদালতে ১৬৪ ধারায় রনির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া হয়নি। এমনকি দ্বিতীয় দফা রিমান্ড নিতে পুলিশের পক্ষ থেকে করা হয়নি কোনো আবেদনও। উল্টো গুরুতর অসুস্থ দাবি করে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়নি তাকে।
এ অবস্থায় তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে অনেকেই মামলাটির ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকিত। অনেকেরই ধারণা, রনির মা সংসদ সদস্য পিনু খান তার ছেলেকে বাঁচাতে গোয়েন্দা পুুলিশের ওপর প্রভাব বিস্তার করছেন। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকেও এ ব্যাপারে চাপ দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া ধূর্ত বখতিয়ার আলম রনি নিজেকে অসুস্থ প্রমাণ করার সব চেষ্টাই চালাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার রনিকে আদালতে হাজির করার ব্যাপারে বাদী পক্ষের আইনজীবী তো দূরের কথা নিহতদের স্বজনরা জানতেই পারেননি বলে জানা গেছে। অন্য মামলার ক্ষেত্রে জবানবন্দি দিতে রাজি না হলে তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ নতুন করে রিমান্ডের আবেদন জানায়। কিন্তু বখতিয়ার আলম রনির ক্ষেত্রে পুলিশ ছিল নির্বিকার। শুধু মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানায়। পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রনিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন মহানগর হাকিম আসাদুজ্জমান নূরের আদালত। তবে আসামি পক্ষের জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ জুন আদালত শুনানির দিন ধার্য করেন।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক দীপক কুমার দাস গণমাধম্য কর্মীদের কাছে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি প্রমাণ করার মতো যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ তার হাতে রয়েছে বলে দাবি করেছেন। এ জন্য স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি খুব বেশি প্রয়োজন হবে না বলেও তিনি জানান।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দীপক কুমার গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছিলেন, রনি নিজের লাইসেন্স করা বন্দুক দিয়ে গুলি ছোড়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে গুলিতে কেউ মারা গিয়েছিল কি না তা তিনি জানতেন না। ওই সময় নেশাগ্রস্ত থাকায় সে উত্তেজিত ছিল। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। তাই সামান্য যানজটে আটকা পড়ে গুলি চালিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, ঘটনার দুই মাস পর ৩১মে গ্রেফতার হলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গুলিবর্ষণের কথা স্বীকার করেছিল রনি। তবে তার গাড়িচালক ইমরান ফকির গ্রেফতারের পর আদালতে জবানবন্দি দিলেও রনি স্বীকারোক্তি দেননি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রনি জানান, ঘটনার সময় তিনি নেশাগ্রস্ত ছিলেন। এক বন্ধুকে মগবাজার মোড়ে নামিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে বাংলামটরের দিকে যাচ্ছিলেন। নির্মাণাধীন এলএমজি টাওয়ারের সামনে যানজটে আটকা পড়ে গাড়ি। এতে বিরক্ত হয়ে তিনি গাড়ির জানালা খুলে পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করেন।
প্রসঙ্গত এ বছরের ১৩ এপ্রিল রাত পৌনে ২টায় রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় এলোপাতাড়ি নিজের পিস্তল থেকে গুলি ছোড়েন মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনি (৪৬)। এতে সিএনজি অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী ও রিকশাচালক আবদুল হাকিম গুরুতর আহত হন। তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাকিম ১৫ এপ্রিল বিকেলে এবং ২৩ এপ্রিল ইয়াকুব মারা যান।
এ ঘটনায় ১৫ এপ্রিল রাতে রমনা থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন