রাজউককে দুদকের তাগিদ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে
গণশুনানিতে অংশ নেওয়া সেবা গ্রহিতাদের রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউকের) দেওয়া প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের প্রতিরোধ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি সম্প্রতি রাজউক চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়েছে। দুদকের একটি ঊর্ধ্বতন সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চিঠিতে গণশুনানিতে উপস্থিত ১২০ জন সংক্ষুব্ধ গ্রাহক ও সেবা প্রত্যাশিদের নিকট দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলোর তালিকা সংযুক্ত করে প্রয়োজনীয় কার্য্ক্রম গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
দুদক কর্তৃক পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারি দপ্তরসমূহের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবা সাধারণ মানুষের কাছে দুর্নীতিমুক্তভাবে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দুদক গণশুনানির আয়োজন করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ জানুয়ারি রাজউক সেবা নিয়ে গণশুনানির আয়োজন করে। উক্ত অনুষ্ঠানে রাজউকের সেবা সংক্ষুব্ধ গ্রাহক ও রাজউক সেবা প্রত্যাশীদের মধ্যে প্রায় ১২০ জন উপস্থিত ছিলেন।
যদিও উক্ত অনুষ্ঠানে ৩৭ জন সেবা গ্রহীতা তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। অন্যান্যরা লিখিত বক্তব্য পেশ করেছেন। তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন ও সমস্যাসমূহের উপর রাজউকের পক্ষ থেকে নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। সেই সব প্রতিশ্রুতিগুলোসহ সেবা গ্রহীতারদের তালিকা সংযুক্ত করা হয়েছে। ওই তালিকাভুক্ত সেবা গ্রহীতাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্য্ক্রম গ্রহণের জন্য দুদক থেকে ওই চিঠি পাঠানো হয়।
গত ২৭ জানুয়ারি গণশুনানিতে অংশ নেওয়া বিভিন্ন সেবা গ্রহীতার বক্তব্যে প্লট বরাদ্দ পাওয়ার পর দীর্ঘদিনেও প্লট বুঝে না পাওয়া, জাল আমমোক্তার নামার বিনিময়ে ডেভেলপারদের ইমারত নির্মাণের অনুমতি দেওয়া, রাজউক থেকে নকশা অনুমোদন নিয়ে অন্যের জমিতে ভবন নির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে পূণর্বাসন প্লট না পাওয়া, কিস্তি দেওয়া সত্ত্বেও প্লট বুঝিয়ে না দেওয়া ইত্যাদি হাজারো অভিযোগ পাওয়া যায়।
এর মধ্যে বাড্ডার বাসিন্দা মো. শহিদুল্লাহ ক্ষতিগ্রস্ত মালিক হিসেবে প্রাপ্ত প্লট বুঝে না পাওয়ার অভিযোগ তুলে বলেছিলেন, ‘১৯৮৭ সালে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে আমাদের রাজউক থেকে বাড্ডা এলাকায় প্লট পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৮ বছর পার হলেও রাজউক প্লট বুঝিয়ে দেয়নি। আমার শশুর ওই প্লটের জন্য রাজউকের দ্বারে দ্বারে ঘুরে মারা গেছেন। এখন ওয়ারিশরাও কি বঞ্চিত হবেন?
এ সময় রাজউকের পক্ষে উপ-পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী শিগগিরই প্লট বুঝিয়ে দেওয়াও আশ্বাস দেন।
সম্প্রসারিত উত্তরা আবাসিক এলাকায় প্লট বরাদ্দ নিয়ে ভুক্তভোগী প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তা আবদুর রশিদ খান জানিয়েছিলেন, উত্তরায় রাজউকের তৃতীয় প্রকল্পে ১৭ এইচ প্লট বরাদ্দ পাওয়ার পরে প্রায় ২০ বছর ঘুরেও প্লট বুঝে না পাওয়ার অভিযোগ।
অন্যদিকে ২০০০ সালের রাজউকের উত্তরা প্রকল্পের ৪১ নম্বর প্লট পান প্রবাসী ডা. রেজাইল আহসান। জমির খাজনা ও দখল থাকা সত্বেও তিনি দেশে এসে দেখেন তার প্লটে ৪৩ নম্বর প্লটের মালিক ছয় তলা ভবন করে ফেলেছেন। রাজউকে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপস্থিত ওই এলাকার দায়িত্বে থাকা উপ পরিচালক বাবুল মিয়া আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান দেবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন।
মিরপুর এলাকার বাসিন্দা গাজী আবু তাহের মিরপুরে তার নিজের জমিতে ওই এলাকার বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার খোরশেদ আলমসহ বেশ কয়েকজন নকশা অনুমোদন করে ছয় তলা ভবন নির্মাণের অভিযোগ করেন। রাজউকের পক্ষ থেকে সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এরূপ ১২০ সেবা গ্রহীতা তাদের নানা অভিযোগ বক্তব্য ও লিখিত আকারে উপস্থাপন করেন। এর বিপরীতে রাজউক থেকেও সমস্যা সমাধানে আশ্বাস দেওয়া হয়। উক্ত গণশুনানি সঞ্চালনা করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আখতার হোসেন ভূইয়া। আর দর্শক সারিতে দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান, দুদক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু, কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ, দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল, রাজউক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন ভূইয়া ও সংশ্লিষ্ট দুটি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন