রাজনীতিকে বিদায় বলছেন মুহিত
আওয়ামী লীগ সভাপতির পদ থেকে অবসরে যেতে পারলে খুশি হতেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের পর এবার অবসরে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাংলাদেশি অনলাইন টেলিভিশন টিবিএন টুয়েন্টিফোরকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান মুহিত।
তবে রাজনীতি থেকে কবে অবসরে যাবেন, সে বিষয়ে কিছু বলেননি অর্থমন্ত্রী। তিন সপ্তাহের সফরে এখন তিনি দেশের বাইরে আছেন। কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি আরব, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ছাড়েন মুহিত। আগামী ১২ অক্টোবর তার দেশে ফেরার কথা আছে।
ছাত্র জীবনেই রাজনীতিতে জড়ানো মুহিত পরে পাকিস্তান আমলেই সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণও ছিল তার। ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তানে ওয়াশিংটন দূতাবাসে ফার্স্ট সেক্রেটারি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। আর প্রবাসী বাংলাদেশি সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর মুহিত পরিকল্পনা কমিশনের সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৮১ সালে সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যান তিনি। ১৯৮২ থেকে ৮৩ সালে এরশাদ সরকারের অর্থ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান মুহিত। এরপর বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় উচ্চপদে চাকরি করেন তিনি।
২০০১ সালে সিলেট সদর আসন থেকে নির্বাচন করে হেরে যান মুহিত। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে বিএনপি নেতা এম সাইফুর রহমানকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর থেকেই বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।
গত সাত বছর ধরে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে মুহিতের বিরুদ্ধে বলার মত কোনো অভিযোগই উঠেনি। নানা সময় তিনি সোজাসাপ্টা বক্তব্য দিয়ে দলের নেতাদের বিরাগভাজনও হয়েছেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করা খুবই কঠিন। এই বয়সে এসে কখনও কখনও ক্লান্ত লাগে। তিনি বলেন, ‘আমার বয়স এখন ৮৩। এই বয়সে পৃথিবীর কোথাও আমার বয়সী কোনো অর্থমন্ত্রী আপনি পাবেন না।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি রাজনীতিতে আছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে অতিরিক্ত একটি দায়িত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশের মত একটি দেশে অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা কোনো সহজ কথা হয়।’
রাজনীতি থেকে সরে গেলে তার নির্বাচনী আসন সিলেট-১ আসন ছোট ভাই এ কে আব্দুল মোমেন আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করবেন বলে জানান মুহিত। মোমেন সম্প্রতি জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির পদ থেকে অবসরে গেছেন। তিনি এখন সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মুহিত বলেন, ‘আমি না, আমার ভাই এই আসন থেকে লড়বেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি ছেড়ে ব্যক্তিগত জীবনে তিনি আরও মনোযোগী হবেন। রাজনীতিতে সরাসরি যোগ দেয়ার আগে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল মুহিতের। বিশেষ করে হাওর অঞ্চলের মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে নানা কর্মসূচি ছিল তার। এর বাইরে অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, ইতিহাস নিয়েও বই আছে মুহিতের। তিনি নানা সময় বলেছেন, রাজনীতিতে এসে তার লেখক সত্ত্বার প্রতি অবিচার করেছেন।
মুহিত বলেন, ‘রাজনীতি থেকে অবসরের পর আবারও সমাজসেবা আর লেখালেখি করেই সময় কাটাবো। এক প্রশ্নের জবাবে মুহিত জানান, বাংলাদেশে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, ‘এটা একটা নিরর্থক দাবি, যদি না দেশে গুরুতর কোনো সংকট হয়, তাহলে এটা (নির্বাচন) হবে না তারাও (বিএনপি) জানেন।’
জঙ্গিবাদের বিষয়ে মুহিত বলেন, ‘বাংলাদেশে সন্ত্রাসীরা কিছু করতে পারবে ন। এর প্রমাণ আমরা দিয়েছি ‘
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন