রাজশাহীতে দুই জনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা..!
রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার চণ্ডিপুর এলাকায় আহসান হাবিব আপেল (৩০) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া বাগমারা উপজেলার আলোকনগর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম আলতাফ মাহমুদকে (৩৫) গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ভোরে নিজ বাড়ি থেকে ২০০ গজ দূরে গলির মধ্যে আপেলের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। আর বাড়ির পাশের পুকুরে আলতাফের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দুটি ঘটনাতেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
নগরীর রাজপাড়া থানার সহকারী কমিশনার (এসি) ইফতে খায়ের আলম জানান, নিহত আহসান হাবিব আপেল চণ্ডিপুর এলাকার প্রয়াত বকুলের ছেলে। তাঁর গলা ও বুকে ধারালো অস্ত্রের জখম রয়েছে। তিনি জানান, সোমবার গভীর রাতের পর আপেলকে কে বা কারা কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ফজরের নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয়রা লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত ব্যুরো (পিবিআই) ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে।
ইফতে খায়ের আলম জানান, নিহত আপেল রাজপাড়া থানার একাধিক মামলা আসামি ছিলেন। তিনি লক্ষ্মীপুর এলাকার একটি ওষুধের দোকানের কর্মচারী ছিলেন। পাশাপাশি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভাগিয়ে এনে বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা দালাল চক্রের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।
আপেলের মা সুখী বেগমের অভিযোগ, পূর্বশক্রতার জের ধরে প্রতিবেশী গিয়াসের ছেলে আরিফ আপেলকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনার পর থেকে গিয়াস, তাঁর ছেলে আরিফ ও তাঁদের পরিবারের লোকজন পলাতক।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, একটি বাড়ির পাশে আপেলের রক্তমাখা লাশ পড়ে আছে। তাঁর গলায় ও বুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখমের চিহ্ন রয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ২০০ গজ দূরে আপেলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে বসে বিলাপ করছেন তাঁর মা সুখী বেগম। বাড়ির সামনে একটি বাড়ি দেখিয়ে দিয়ে আপেলের মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, এই বাড়ির গিয়াস ও তাঁর ছেলের সঙ্গে আপেলের ঝামেলা চলছিল। গিয়াস ও তাঁর ছেলে আরিফই আপেলকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তারা ছাড়া আপেলের কোনো শক্র ছিল না।
সুখী বেগম জানান, তাঁর ছেলে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় ওষুধের দোকানে কর্মচারীর কাজ করতেন। রাতে লক্ষ্মপুর এলাকায় থাকত। রোজা শুরুর পর থেকে প্রতিদিন সেহরি খেতে বাসায় আসত। মঙ্গলবার ভোররাতে বাসায় আসার পথে তাঁকে হত্যা করা হয়।
আপেলের বাড়ির সামনে গিয়াসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গিয়াসের বৃদ্ধা মা বাড়িতে বসে আছেন। বাড়ির অন্য সদস্যরা কেউ নেই।
এদিকে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়নের জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম আলতাফ মাহমুদকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। তিনি ওই ইউনিয়নের আলোকনগর শাহাপাড়া গ্রামের প্রয়াত মজিবর রহমানের ছেলে।
যে পুকুরে আলতাফের লাশ পাওয়া গেছে সেখান থেকে তাঁর বাড়ির দূরত্ব মাত্র ২০০ গজ বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
হামিরকুৎসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও নিহত আলতাফ মাহমুদের প্রতিবেশী মামুনুর রশিদ জানান, আলোকনগর বাজারে আলতাফের জুয়েলার্সের দোকান রয়েছে। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন পণ্যের ডিলার ছিলেন। প্রতিদিন রাত ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে তিনি বাড়ি ফিরতেন। গত রাত ৯টা পর্যন্ত তিনি বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাঁর খোঁজে আলোকনগর বাজারে গিয়ে দোকান বন্ধ পান। এরপর সারা রাত খুঁজেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির পাশের পুকুরে তাঁর গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। আলতাফ দুই সন্তানের জনক ছিলেন।
রাজশাহীর পুঠিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আসলাম উদ্দিন সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, আলতাফকে গলা কেটে হত্যা করার পর দুর্বৃত্তরা লাশ পুকুরে ফেলে রেখে যায়। প্রাথমিকভাবে হত্যার কারণ জানা যায়নি। সম্ভাব্য সব দিক খতিয়ে দেখে হত্যার মোটিভ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিগত ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেবিস্তারিত পড়ুন
সংঘর্ষের ঘটনায় রাবি কর্তৃপক্ষের মামলা, গ্রেপ্তার ১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেবিস্তারিত পড়ুন
স্থানীয়দের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ২০
বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গেবিস্তারিত পড়ুন