রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

সৈয়দ শামসুল হকের শেষ সাক্ষাৎকার

‘রাজার মতো এসেছি রাজার মতোই যেতে চাই’

বাঙালি পাঠকের পরানে নাড়া দিয়ে উঠেছে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের অসুস্থতার খবর। তার লেখা পড়ে পাঠক যেমন আলোড়িত হয়েছে, ঠিক তেমনি অসুস্থতার খবরেও তার কবিতার মতোই নড়ে ওঠে হৃদয়ের গহিন ভেতর।

… চক্ষের ভিতর থিকা সোহাগের পাখিরে উড়াও, / বুকের ভিতর থিকা পিরিতের পূর্ণিমার চান,/ নিজেই তাজ্জব তুমি একদিকে যাইবার চাও / অথচ আরেক দিকে খুব জোরে দেয় কেউ টান? / সে তোমার পাওনার এতটুকু পরোয়া করে না, / খেলা যে দেখায় তার দ্যাখানের ইচ্ছায় দেখায়, / ডাহুক উড়ায়া দিয়া তারপর আবার ধরে না, / সোনার মোহর তার পড়া থাকে পথের ধুলায়? / এ বড় দারুণ বাজি, তারে কই বড় বাজিকর / যে তার রুমাল নাড়ে পরানের গহিন ভিতর?

২৭ ডিসেম্বর, ১৯৩৫ সালে কুড়িগ্রামে জন্ম নেয়া সৈয়দ শামসুল হক বাঙালির কবি। গভীর আবেগে হৃদয়ে ধারণ করেছেন বাঙালি জাতীয়তাবাদকে।

‘তোমাকে অভিবাদন, বাংলাদেশ’ শিরোনামের কবিতায় কবি লিখেছেন-

তোমাকে অভিবাদন, বাংলাদেশ, / তুমি ফিরে এসেছ তোমার মানচিত্রের ভেতরে / যার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তেরো শো নদীর ধারা; / তোমাকে অভিবাদন, বাংলাদেশ, / তুমি ফিরে এসেছ তোমার করতলে পাঙরাটির বুকে / যার ডানা এখন রক্ত আর অশ্র“তে ভেজা; / তোমাকে অভিবাদন, বাংলাদেশ।

তার ‘বৈশাখে রচিত পঙতিমালা’, ‘নুরলদীনের সারাজীবন’, ‘বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ’, ‘খেলারাম খেলে যা’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টিকর্মের জন্য দুই বাংলার পাঠকের কাছেই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ লেখক তিনি। তার সৃষ্টিকর্ম বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে চলেছে।

সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক ফুসফুসের ক্যান্সারজনিত রোগে ভুগছেন। তার ক্যান্সার শরীরের অন্যত্র ছড়িয়েছে, বিশেষত মেরুদণ্ডের হাড়ে। লন্ডনে তিন মাস চিকিৎসাকালীন তাকে কেমোথেরাপি দেয়া হয়। কিছুদিন পর আবার শর্টকোর্স কেমোথেরাপি আরম্ভ করা হবে। সৈয়দ শামসুল হক এই বিরতিতে দেশে এসেছেন। আসার সময় দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জার্নির ক্লান্তিতে অসুস্থবোধ করলে তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেখানে কথা হয় কবি সৈয়দ শামসুল হক এবং তার স্ত্রী কথাসাহিত্যিক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আনোয়ারা সৈয়দ হকের সঙ্গে।

লন্ডনে চার মাস চিকিৎসা চলার সময়ের কথা জানতে চাইলে আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন- ‘ওখানকার হাসপাতাল অনেক যত্নের সঙ্গে হক সাহেবের চিকিৎসা করেছে। ওখানে অনেক বাঙালি হক সাহেবকে দেখতে এসেছে, তার জন্য শুভকামনা জানিয়েছে। অনেকে তাকে দূর থেকে হলেও একটু দেখার ইচ্ছের কথা বলেছে। আমরা ডাক্তারের পরামর্শ এবং ওনার চিকিৎসার স্বার্থে অনেককেই দেখা করতে দিতে পারিনি। এটা আমাদেরও খারাপ লেগেছে। অনেক নিকট-আত্মীয়কেও আমাদের না বলতে হয়েছে, ওনার সুচিকিৎসার স্বার্থে। তারপরও সবার দোয়া এবং শুভকামনায় আমরা প্রথম ধাপের চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছি।’

শহীদ কাদরীর কথা তুলতেই সৈয়দ শামসুল হক বললেন- ‘ওখানে যাওয়ার পর ওর সঙ্গে প্রায়ই কথা হতো। নীড়া (শহীদ কাদরীর স্ত্রী) প্রায়ই তোমার ভাবীকে (আনোয়ারা সৈয়দ হক) ফোন দিত, আমাদের খোঁজ-খবর নিত। আমি ফিরে আসার ক’দিন আগেই কথা হয়ছিল- ‘বলল তুমি সুস্থ হয়ে যাবে।’ এখন ও-ই চলে গেল। কে কখন চলে যাবে, কে কতদিন থাকবে কেউ বলতে পারে না।’

আমার সঙ্গে থাকা কবি আশরাফ জুয়েল, যিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে কর্মরত একজন ডাক্তার। তিনি সৈয়দ শামসুল হককে জানালেন- গতকাল বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবে সদ্যপ্রয়াত কবি শহীদ কাদরীর স্মরণসভায় আপনার জন্য দোয়া চাওয়া হয়েছে।

সৈয়দ হক খুব আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইলেন সেখানে কে কে ছিলেন। আড্ডায় কারা আলোচনা করেছেন এবং তার সমসাময়িক কেউ ছিলেন কিনা।

কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা, কবি ড. মুহম্মদ সাদিকসহ যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের কথা আশরাফ জুয়েল সৈয়দ শামসুল হককে জানালেন।

সৈয়দ শামসুল হক তখন কেবিনের জানালায় বাইরের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। কয়েক মিনিট কথা বললেন না। আমরাও কিছু বললাম না। আবার আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে তাকালেন।

আমি জানতে চাইলাম হক ভাই চার মাস পরে দেশে এলেন কেমন লাগছে?

বললেন- ‘দেখ দেশটাকে খুব ভালোবাসি। আমি জীবনে অনেক দেশে গিয়েছি। বিদেশে থেকেছি। অনেক মানুষ দেখেছি। কিন্তু এই দেশটাকে ছাড়া ভালো লাগে না। আমার দেশের মাটি, আমার দেশের সবুজ প্রকৃতি, এখানকার মানুষ ছাড়া থাকা যায় না। ডাক্তার প্রথম ধাপের চিকিৎসা শেষে বলল, আপাতত কিছুদিনের জন্য তোমার ছুটি। আমি ভাবলাম দেশেই চলে আসি। চলে এলাম। তোমাদের কাছে, আমার মানুষের কাছে।’

আমি প্যান্টের পকেট থেকে মোবাইল বের করার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে ইশারায় থামিয়ে দিয়ে বললেন- ‘ছবি তুলো না প্লিজ। আমার এই চিকিৎসাধীন অবস্থাটা একান্তই ব্যক্তিগত। আমাকে যারা চেনে, যারা আমাকে ভালোবাসে তাদের কী আমাকে এভাবে দেখে ভালো লাগবে? আমি সারাজীবন চেষ্টা করেছি স্বাভাবিক সুন্দরভাবে গুছিয়ে চলতে, আমি চাই না মানুষ আমাকে এভাবে দেখুক। ছবি যদি ছাপতে চাও আগের ছবি ছাপবে। আমি রাজার মতো এসেছি রাজার মতোই যেতে চাই।’

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ব্যাংকক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদবিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকবির ম্যুরাল থেকে কালি মুছে দিল উপজেলা প্রশাসন

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরালে কালি দিয়ে মুখবিস্তারিত পড়ুন

ফখরুল: ইউনূস–মোদির বৈঠক আশার আলো দেখাচ্ছে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন

  • জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা সেই বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
  • দেশে ফিরেছেন মুহাম্মদ ইউনূস
  • মিরপুরে ঝগড়ার জেরে ‘সাততলা থেকে ফেলে’ যুবককে হত্যার অভিযোগ
  • ‘হলে থাকতেন-টিউশনি করতেন, এখন পাঁচ-ছয় কোটি টাকার গাড়িতে চড়েন’
  • শুক্রবার বৈঠকে বসছেন ইউনূস-মোদি
  • এসএসসি পেছানোর দাবিতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি, যা বলছে শিক্ষা বোর্ড
  • মব-নারীবিদ্বেষ-তৌহিদি জনতা: দেশে চরমপন্থা বিকাশের সুযোগ সত্যি নাকি বিভ্রান্তি?
  • নাহিদ: আওয়ামী দুঃশাসনের ভুক্তভোগীদের কাছে ৫ আগস্ট অবশ্যই দ্বিতীয় স্বাধীনতা
  • দেশে গ্যাস অনুসন্ধানে মস্কোর সহযোগিতা চায় ঢাকা
  • ঈদের চাঁদ দেখা নিয়ে যে আহ্বান জানালো সৌদি আরব
  • ৬ ডলারে নামছে না রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা, কমছে ৫০ সেন্ট
  • আরও একমাস বাড়লো পাঁচটি সংস্কার কমিশনের মেয়াদ