রাত জেগে গুজরাতিদের কাছে হারলেন বঙ্গ-মহিলারা
অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন ভারতের বিভিন্ন শহরের বহু মহিলা৷ তবে, তাঁদের মধ্যে সব থেকে বেশি সংখ্যক মহিলা রয়েছেন কলকাতায়৷ আর, এ ভাবেও গুজরাতিদের কাছে হার মেনে গিয়েছেন কলকাতা তথা পূর্ব ভারতের মহিলারা৷
কেননা, সেভাবে অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন না আমেদাবাদের মহিলারা৷ তবে, শুধুমাত্র যে গুজরাতের ওই সব মহিলার কাছে অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ তথা পূর্ব ভারতের ওই সব মহিলা হার মেনে গিয়েছেন, তাও নয়৷ অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকার কারণে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কলকাতা তথা পূর্ব ভারতের ওই সব মহিলা-ই৷ যার জেরে, পূর্ব ভারতের ওই সব মহিলার মধ্যে বাড়ছে প্রাণসংশয়ও৷
কারণ, অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকার জেরে, আমেদাবাদের তুলনায় কলকাতার মহিলাদের মধ্যে বেশি মাত্রায় রয়েছে কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিসেসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি৷ যার জেরে আবার, শুধুমাত্র হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়াও নয়, কলকাতা তথা পূর্ব ভারতের ওই সব মহিলা স্ট্রোক (ব্রেন অ্যাটাক)-এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায়ও রয়েছেন৷ যে কারণে, একই সঙ্গে উদ্বেগ এবং আতঙ্কে রয়েছেন বিশেষজ্ঞরাও৷ এ দেশের মহিলাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে, এমনই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায়৷
সাফোলালাইফ স্টাডি ২০১৫ শীর্ষক ওই সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ দেশের বিভিন্ন শহরের মধ্যে সব থেকে বেশি সংখ্যক এমন মহিলা রয়েছেন কলকাতায়, যাঁরা অনেক দেরি করে রাতের খাবার খান৷ অর্থাৎ, অনেক দেরি করে রাতের খাবার খাওয়ার কারণে, স্বাভাবিকভাবেই কলকাতার ওই সব মহিলার অধিকাংশকে অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে হয়৷ ওই সমীক্ষা অনুযায়ী, কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিসেসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন কলকাতা তথা পূর্ব ভারতের যে সব মহিলা, তাঁদের ৮৮ শতাংশ অনেক দেরি করে রাতের খাবার খান৷
অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকার নিরিখে, কলকাতা তথা পূর্ব ভারতের তুলনায় আমেদাবাদের মহিলাদের পরিস্থিতি অবশ্য ভালো বলে প্রকাশ পেয়েছে ওই সমীক্ষায়৷ কেননা, ওই সমীক্ষার তথ্য বলছে, কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিসেসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন, আমেদাবাদের এমন মহিলারা রাত করে খাবার খান না৷ শুধুমাত্র তাই নয়৷ ওই একই কারণে, কলকাতার তুলনায় এ দেশের বিভিন্ন শহরের মহিলাদের পরিস্থিতিও অনেক ভালো৷ কেননা, ওই সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিসেসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন, পুণের এমন মহিলাদের মধ্যে ৩৮ শতাংশ অনেক দেরি করে রাতের খাবার খান৷
তার পরের স্থানে রয়েছেন দিল্লির মহিলারা৷ এ দেশের রাজধানী শহরের মহিলাদের মধ্যে যাঁরা কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিসেসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাঁদের ২৪ শতাংশ রাতের খাবার খান অনেক দেরি করে৷ অন্যদিকে, কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিসেসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন, মুম্বইয়ের এমন মহিলাদের মধ্যে ২৩ শতাংশ অনেক দেরি করে রাতের খাবার খান৷ তবে, তুলনায় হায়দরাবাদ এবং বেঙ্গালুরুর মহিলাদের পরিস্থিতি আরও ভালো৷ কারণ, ওই সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিসেসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন, এমন মহিলাদের মধ্যে হায়দরাবাদে ১৭ এবং বেঙ্গালুরুর ১৪ শতাংশ রাতের আহার গ্রহণ করেন অনেক রাতে৷
অথচ, এ ভাবে বেশি রাত করে খাওয়ার কারণে আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খোদ ওই সব মহিলার-ই স্বাস্থ্য৷ তবে, এ ভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অবহেলার বিষয়টি যেমন যথাযথ সচেতনতার অভাবে ঘটছে৷ তেমনই আবার, সচেতন হওয়া সত্ত্বেও, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে অবহেলার কারণেও এ দেশের বিভিন্ন শহরের বহু মহিলার মধ্যে বেশি রাত করে খাওয়ার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে৷ তার সঙ্গে রয়েছে বদলে যাওয়া জীবনযাত্রা এবং কর্মব্যস্ত জীবনের প্রভাবও৷ ওই প্রভাবের জেরেও, এ দেশের বিভিন্ন শহরের মহিলাদের মধ্যে রাতের খাবার অনেক দেরি করে খাওয়ার প্রবণতা ক্রমে আরও বেড়ে চলেছে৷ যার জেরে, ওই সব মহিলার অধিকাংশই আবার অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকছেন৷ এবং, এমন কারণেও, আখেরে ওই সব মহিলার জীবনযাত্রার মান নিম্নমুখী-ই হচ্ছে৷
ওই সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিসেসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন, এ দেশের এমন মহিলাদের মধ্যে ৩০ শতাংশ রাতের আহার গ্রহণ করেন ১০টার পর৷ অন্যদিকে, গোটা দেশের নিরিখে, কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিসেসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন, অথচ রাতের খাবার অনেক দেরি করে খান, এ দেশের এমন মহিলাদের মধ্যে সব থেকে বেশি সংখ্যক রয়েছেন পূর্ব ভারতে৷ ওই সমীক্ষা অনুযায়ী, পূর্ব ভারতের ওই সব মহিলার হার ৮৮ শতাংশ৷ ওই সব মহিলা অনেক বেশি রাতে খান৷ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন উত্তর ভারতের মহিলারা৷ সেখানকার ওই সব মহিলার হার ২৬ শতাংশ৷ উত্তর ভারতের ওই সব মহিলা রাত ১০টার পর খান৷ তৃতীয় স্থানে রয়েছেন পশ্চিম ভারতের মহিলারা৷ ওই সমীক্ষা অনুযায়ী, পশ্চিম ভারতের ওই সব মহিলার হার ২২ শতাংশ৷ ওই সব মহিলাও রাত ১০টার পর খান৷
তবে, কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিসেসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন, দক্ষিণ ভারতের এমন মহিলাদের মধ্যে ১৪ শতাংশ রাতের খাবার খান ১০ টার পর৷ মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হসপিটালের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং কলকাতার বেসরকারি ওই হাসপাতালের-ই সিনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিয়াক সার্জন, চিকিৎসক কুণাল সরকারের কথায়, ‘‘খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং তার সঙ্গে দেরি করে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য, ওই সব মহিলার পেটে আরও বেড়ে যাচ্ছে চর্বি৷ যে কারণে, ওই সব মহিলার কোমর এবং তাঁদের নিতম্বের আকৃতির অনুপাতে বজায় থাকছে না ভারসাম্য৷ এই বিষয়টিও ওই সব মহিলার ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা দিচ্ছে৷’’ কলকাতার ফর্টিস হসপিটালের ডায়াটেশিয়ান ঈপ্সিতা চক্রবর্তী বলেন , ‘‘সময়ের অভাব এবং কর্মব্যস্ত জীবনের জন্য শহরাঞ্চলের মহিলাদের মধ্যে অনেক দেরি করে রাতের খাবার খাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷ এই ধরনের প্রবণতার ফল, হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যাকে আমন্ত্রণ জানানো ছাড়া অন্য কিছু নয়৷’’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন