রাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের একাংশ উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় শুরু হয় এই বিক্ষোভ কর্মসূচি। এতে কয়েকশ বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী অংশ নেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিক্ষোভ শেষ হয়।

এদিন রাত সাড়ে সাতটার দিকে উপাচার্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বললে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।

এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যে মানুষটা দিন-রাত পরিশ্রম করে রুয়াকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে, তার কাছে তোমরা দাবি তুলছ। আমরা আগামীকালের (শুক্রবার) মধ্যেই একটা অ্যাডহক কমিটি করে দেব। তবে আমরা এমন কোনো অ্যাডহক কমিটি করব না, যার জন্য পরবর্তীতে আমাদের ধাক্কা খেতে হবে। আমি চাই এমন অ্যাডহক কমিটি হোক, যাদের নৈতিকতা এবং মেরুদণ্ড ঠিক আছে। যাদের নৈতিকতা এবং মেরুদণ্ডে কোনো সমস্যা আছে, আমি কেমন করে তাদের অ্যাডহক কমিটিতে রাখব? আমাকে বাছাই করার সময়টুকু তো দিতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “যদি আমার উপর আস্থা রাখতে পারো, তাহলে আলহামদুলিল্লাহ। আর যদি আস্থা রাখতে না পারো, তাহলে যা করছো, তাই করো। আমি তো এমন কোনো কথা বলবো না, যা আমি রাখতে পারব না। ১০ তারিখ নয় খুব দ্রুতই রুয়া নির্বাচন হবে। আমার শেষ সামর্থ দিয়ে আমি রুয়াকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।”

এর আগে, আন্দোলনকারীরা “সিলেকশন না ইলেকশন, ইলেকশন ইলেকশন”, “একদফা এক দাবি, ১০ তারিখে রুয়া দিবি”, “দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেবো রক্ত”সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এ সময় রাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও রাজশাহী মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল বলেন, “একটি কুচক্রী মহল রুয়া নির্বাচন বন্ধ করার পাঁয়তারা করছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের বাসার সামনে ককটেল ফাটিয়ে নির্বাচন বন্ধ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। এর চেয়ে জঘন্য কিছু আর হতে পারে না। আমরা এই নির্বাচন যেকোনো মূল্যে আদায় করে ছাড়ব।”

এরও আগে, বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে রুয়া অ্যাডহক কমিটির মিটিংয়ে ১০ মে অনুষ্ঠিতব্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) নির্বাচন স্থগিত করা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, “নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক নুরুল হোসেন চৌধুরী ও অধ্যাপক হাবিবুল হক ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। অ্যাডহক কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপাতত রুয়া নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী আবার নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে।”

দুই নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগের বিষয়ে উপ-উপাচার্য আরও বলেন, “একটা পক্ষ চাচ্ছিল নির্বাচন না হোক। সেই পক্ষটি নুরুল স্যার ও হাবিবুল হক স্যারকে নির্বাচন কমিশনে না থাকতে ভয় ভীতি দেখিয়েছে। যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচন না হওয়ার দিকে ছিল, তারাই এই ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। এর ফলেই তারা পদত্যাগ করেছেন বলে ব্যক্তিগতভাবে জেনেছি।”

এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসায় ককটেল বিস্ফোরণের নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং দুষ্কৃতিকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একাংশ। বৃহস্পতিবার রাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একাংশের পক্ষে তৌফিকুর রহমান লাভলু ও প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান সজল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসায় ককটেল বিস্ফোরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করছি।