রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে আন্দোলন হালে পানি পাবে কি?
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প বাতিলের দাবি নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রামপরল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না বলে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
সুন্দরবনের কাছে কয়লা ভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তৈরি না করার দাবিতে তেল-গ্যাস, বিদ্যুৎ, বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির বিক্ষোভের কর্মসূচীতে মাত্র চারদিন আগেই সমর্থন দিয়েছে বিরোধীদল বিএনপি। সেই পটভূমিতে এই প্রকল্প বাতিলের দাবি কঠোরভাবে নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই অবস্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ কতটা রাজনৈতিক ঝুঁকি নিচ্ছে?
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ঝুঁকির বিষয়ে বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলেন সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোজাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র খালেদা জিয়া কথা বলার পরেই সরকারের পক্ষ থেকে একটা রাজনৈতিক তাগিদ সৃষ্টি হয়েছিল। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে যে আন্দোলন চলছিল সেখানে পরিবেশের কথাই বলা হচ্ছিল। বিএনপি অনেক পরে রামপাল নিয়ে তাদের মতামত স্পষ্ট করেছে। যদি তাদের এই বিষয়টি আপত্তি থেকে থাকে তাহলে আগে বলতে পারতেন। প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে একটি বার্তা দিলেন রামপাল ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক পানি ঘোলা করা যাবে না। এর পটভূমিতে আমরা এটাও বলতে পারি প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের একদিন আগে বিএনর্পি সমর্থক, প্রবীণ বুদ্ধিজীবি প্রফেসর এমাজউদ্দীন সাহেব প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেছেন আপনি ভারতের প্রতি এত দুর্বল কেন। বিএনপির পক্ষ থেকে রামপাল ইস্যু যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে তাতে ভারত সংশ্লিষ্টতা এসে যায়। তারা প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারকে দোষারোপ করছেন ভারতের স্বার্থে তারা এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের স্বার্থ উপেক্ষা করছেন।
তেল-গ্যাস, বিদ্যুৎ, বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি সুন্দরবনের পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে যে বক্তব্য বা যুক্তি সেগুলো শক্তভাবে প্রধানমন্ত্রী নাকচ করে দিয়েছেন। তাহলে ঐ কমিটির অবস্থান এখন কোথায় গিয়ে দঁড়াবে সে সম্পর্কে মোজাম্মেল হোসেন বলেন, এই বিষয়টাতে বিশেষজ্ঞরা কথা বলছেন এবং রাজনৈতিকভাবে এতদিন বামপন্থীরা কথা বলেছেন। এখন বামদলের সাথে বিএনপি যুক্ত হয়েছে। উভয়পক্ষের কথার মধ্যে যুক্তি আছে। যে কোন প্রকল্প কিছু না কিছু পরিবেশের ক্ষতি করেই থাকে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি প্রধানমন্ত্রী যদি সরসরি কোন ক্ষতি হবে না এই কথা না বলে যদি তিনি বলতেন এই ক্ষতির মাত্রা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মাত্রার মধ্যেই রাখা হয়েছে এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেই সমস্যা সমাধান করতে পারছি। তাহলে সেটা জনগণের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হত। এই আন্দোলনটা স্পর্শকাতর কারণ এখানে পরিবেশ এবং সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট। যার কারণে আন্দোলনের পক্ষে অনেক সমর্থক আছে। এই আন্দোলনের পক্ষে সমর্থক থাকলেও মাঠে তাদের খুব একটা দেখা যায় না। সুতরাং এই আন্দোলন গণআন্দোলন হবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে। রাজনৈতিক বিষয় যুক্ত হওয়ার পরে, যারা পরিবেশগত দিক নিয়ে আছেন তারা হয়ে অসন্তোষ থাকবেন এবং কিছু কথা বলবেন। কিন্তু আন্দোলন যৌক্তিক পর্যায়ে যাবে না। এই আন্দোলনে বিএনপির খুব একটা লাভ হবে না বরং মূল আন্দোলনের ইস্যুকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে আওয়ামী লীগ যে রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছে সেখানে তারা কতটা ঝুঁকি নিয়েছে সে সম্পর্কে মোজাম্মেল হোসেন বলেন, সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আগে আলোচনা করা হয়েছে, যুক্তি বিনিময় করা হয়েছে, তাদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আমার মনে হয় সরকারের দিক থেকে কোন বড় ধরনের রাজনৈতিক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হোক সেটা নিয়ে মানুষের কোন আপত্তি থাকবে না এটা যদি ১৪ মাইলের দুরত্ব থেকে দূরে কোথায় জায়গা পাওয়া যায় তাহলে এই প্রকল্পটা রিভাইস করা যেতে পারে। সেটা হয়তো সবার জন্য ভাল হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন