রাম-সীতা ভাই-বোন? এ কেমন রামায়ণ?

বাল্মীকি রামায়ণের পাশাপাশি, যোগবাশিষ্ঠ, তুসলিদাসী, কৃত্তিবাসী ইত্যাদি ভার্সনে সংযোজিত হতে থাকে আশ্চর্য সব তথ্য ও উপকাহিনি। তেমন কিছু বিষয়েরই হদিশ রইল এখানে।
প্রথমেই জানিয়ে রাখা দরকার, ‘রামায়ণ’ কোনও একটি মাত্র টেক্সট নয়। ভারতেই রামায়ণের বিবিধ এবং বিচিত্র সব ভার্সন প্রচলিত রয়েছে। তা ছাড়া রামকথা এমনই এক ব্যাপার, ভারতের বাইরে বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে তা চলিত। ভারতীয় সংস্কৃতির বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে রাম-কাহিনিও বিস্তৃতি পায় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে। তার পরে কালের যাত্রার সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিতও হতে থাকে তাদের চরিত্র। আর ভারতের অভ্যন্তরেও রামায়ণের বিবিধ ব্যাখ্যা, টীকা-ভাষ্য তাকে বিচিত্র সব আকৃতি প্রদান করতে থাকে। বাল্মীকি রামায়ণের পাশাপাশি, যোগবাশিষ্ঠ, তুসলিদাসী, কৃত্তিবাসী ইত্যাদি ভার্সনে সংযোজিত হতে থাকে আশ্চর্য সব তথ্য ও উপকাহিনি। তেমন কিছু বিষয়েরই হদিশ রইল এখানে।
• ‘অদ্ভুত রামায়ণ’ নামে একটি গ্রন্থ মহর্ষি বাল্মিকীর নামেই প্রচলিত রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, রামায়ণ রচনার পরে বাল্মীকির মনে হয়, আরও বহু কথা বলা বাকি থেকে গেল। তাই নাকি তিনি ‘অদ্ভুত রামায়ণ’ রচনা করেন। এই গ্রন্থটি বেশ কিছু উদ্ভট তথ্যের খনি। এই রামায়ণে সীতাকে কোথাও অসহায় নারী হিসেবে দেখানো হয়নি। বরং এমন কথা এখানে রয়েছে যে, রাম যখন যুদ্ধে আহত ও সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তখ সীতা দেবী কালীর রূপে আবির্ভূতা হন এবং ভয়ানক সংহার-মূর্তি ধারণ করেন। তার পরে দেবতারা সীতাকে সেই মূর্তি পরিহার করতে অনুরোধ করেন। রামের সংজ্ঞা ফিরে এলে সীতাও সেই রূপ সংবরণ করেন।
• বৌদ্ধ ধর্মে রামায়ণের নাম ‘দশরথ জাতক’। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এই রামকথা জনপ্রিয়। এতে বলা হয়েছে, রাম-সীতা ভাই-বোন। সৎমায়ের কোপে পড়ে তাঁদের দুর্গতি ঘটে। রাজা দশরথ তাঁদের হিমালয়ে নির্বাসন দেন। এই রামায়ণে সৎমা-ই প্রধান খলনায়িকা। রাবণ বলে কোনও চরিত্রই এখানে নেই। দুর্দিন শেষ হলে রাম-সীতা বারানসীতে আসেন এবং বিবাহ করেন। নিষিদ্ধ সম্পর্কের মধ্যে বিবাহ কি বৌদ্ধযুগেও ভারতে প্রচলিত ছিল? নৃতাত্ত্বিকরা এ নিয়ে বিস্তর মাথা ঘামিয়েছেন।
• জৈন ধর্মেও রামকাহিনি সমাদৃত। বিমলসুরি নামের এক লেখক ‘পৌমাচারিয়’ নামে রামকথা রচনা করেন। এখানে বাল্মীকি রামায়ণের মূল কাঠামোই অনুসৃত হয়েছে। তবে কোনও কোনও জায়গায় তা দারুণ যুক্তিগ্রাহ্য কথাবার্তা বলেছে। যেমন, বানর সেনা সম্পর্কে এই রামায়ণের বক্তব্য হল— তারা মোটেই ‘বানর’ নয়। তারা উপজাতীয় মানুষ। যোদ্ধা এই উপজাতি বানরের চিহ্ন টোটেম হিসেবে ধারণ করত। কিন্তু এই গ্রন্থ রাবণ-সংহারের কৃতিত্ব রামকে না-দিয়ে লক্ষ্মণের উপরে অর্পণ করে। কারণ এই গ্রন্থ অনুসারে, রাম একজন আদর্শ জৈন। তিনি কিছুতেই প্রাণীহত্যা করতে পারেন না। ফলে লক্ষ্মণকেই রাবণ-বধ সারতে হয়।
• তাইল্যান্ডে রামায়ণ পরিচিত ‘রামাকিয়েন’ বা ‘রামাকৃতি’ নামে। এই গ্রন্থে হনুমানই প্রধান চরিত্র। আর সেখানে হনুমান মোটেই কোনও ব্রহ্মচর্য-পালনকারী পুরুষ নন। তিনি বেশ রঙ্গিলা চরিত্র। প্রচুর নারীসঙ্গ তিনি অবলীলায় করে থাকেন। স্বর্ণলঙ্কায় পদার্পণ করে নাকি তিনি বেশ কিছু লোকের শয়নকক্ষে উঁকি দিয়েছিলেন। এই গ্রন্থে আবার রাবণকে পাষণ্ড হিসেবে দেখানো হয়নি। এখানে রাবণ একজন রোম্যান্টিক পুরুষ। সীতার প্রতি তাঁর প্রেম বেশ নিষ্কাম।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের সবাইকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত
ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেবিস্তারিত পড়ুন

সংঘাতের মাঝেও তেহরানের বায়ুমান ঢাকার চেয়ে ভালো
সোমবার রাত থেকেই দফায় দফায় কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়।বিস্তারিত পড়ুন

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেবিস্তারিত পড়ুন