রাষ্ট্রধর্ম সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক নয়
দীর্ঘদিন পর সুপ্রিমকোর্ট রায় দিয়েছেন, রাষ্ট্রধর্ম সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। কিছু লোক মিন মিন করছেন বটে, তবে এ রায় বর্তমান সময়ের বাংলাদেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বেশিরভাগ মানুষের এটি পছন্দ। প্রায়ত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমন একটি কথা আগেই বলেছিলেন। কেউ হয়তো বলতে পারেন, বাহাত্তরে বঙ্গবন্ধু’র বাংলাদেশের সাথে এ রায় সাংঘর্ষিক, কিন্তু এখন ২০২৪, এটি ১৯৭২ নয়। বাহাত্তর আর ফিরে আসবে না। সরকারের দিকে অঙ্গুলী হেলনে লাভ নেই, দায় সবার, কেউ দায়িত্ব পালন করেনি। ফল যা হবার তাই হয়েছে। আরো হবে? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ধর্মনিরপেক্ষতা, রাষ্ট্রীয় চার স্তম্ভ সবই ধরাশায়ী হবে? শুধু চলমান থাকবে ‘উন্নয়ন’।
আপনি কেমন রায় আশা করেছিলেন? আপনি জানেন না যে, ডিপিএল-এ নারী আম্পায়ারের অধীনে খেলতে আপত্তি জানিয়েছেন ক্রিকেটাররা? আপনি দেখেননি যে, লালনের গান, ‘সুন্নত দিলে হয় মুসলমান, নারীর তবে কি হয় বিধান’ ফেইসবুকে পোষ্ট দিয়ে এক হিন্দু শিক্ষক ইসলাম অবমাননার দায়ে গ্রেফতার হয়েছেন? আপনি নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন যে, মামুনুল হক-র মুক্তির পর বিশাল জনতা তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছে। কোন রাজনীতিকের পেছনে এত মানুষ আছে? আগে নেতা হেটে গেলে মানুষ পিছে হাঁটতো, এখন ভয়ে দূরে সরে যায়! এটিই আজকের বাংলাদেশ। দেশ রূপান্তর ক’দিন আগে খবর দিয়েছে যে, দেশ গরু-ছাগলে স্বয়ংসম্পূর্ন।
হেফাজত আরবী ভাষা বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছে। অন্যরাও দাবি করতে পারেন উর্দু, হিন্দী, সংস্কৃত, পালি, ফ্রেঞ্চ ও স্প্যানিশ বাধ্যতামূলক করা হোক। এতে মানুষ কিছু ভাষা শিখবে। দেশে রবীন্দ্র বিরোধিতা বাড়ছে, শিগগিরই জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের দাবি উঠবে। ‘কাজীর বিচার’ প্রতিষ্ঠার দাবি উঠাও সম্ভব। কার জানি একটি লেখা পড়লাম, যিনি বর্তমান সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির জন্যে বিএনপি-জাতীয় পার্টিকে দায়ী করে তার দায়িত্ব শেষ করেছেন। দেশে-প্রবাসে তথাকথিত প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীরা তাই করে থাকেন। এবং এদের জন্যেই আজকে বাংলাদেশের চেহারাটি মৌলবাদী। এঁরা ভুলে থাকতে পছন্দ করেন যে, বাহাত্তরের সংবিধান প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ আমরা পেয়েছিলাম, করিনি।
দেশ এখন শান্ত, চলছে সুন্দরভাবে। অযথা রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে চিল্লাচিল্লির দরকার কি? রাষ্ট্রধর্ম থাকুক, যাতে মরণের পর রাষ্ট্রটি ‘বেহেস্তে’ যেতে পারে। এশিয়ার ৩শ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের কোন একটি’র স্থান হয়নি। আমি যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, সেই ঢাকা ভার্সিটি নাকি এখন দেশের সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা। দেশে আরো বড়বড় মাদ্রাসা গড়ে উঠুক। দু’দিনের এ দুনিয়ায় একটু কষ্ট হলেও পরকালে ভাল থাকার ব্যবস্থাটা পাকা হোক। ইসলামের বিজয় কেতন উড়াতে বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী পাকিস্তানের চেয়েও সক্রিয়। দেশে এবার অনেক গরম পড়েছে, দেশটা সৌদি আরবের দিকে ধাইছে, রাষ্ট্র ব্যবস্থা সৌদি’র মতই হবে, সেটাই তো স্বাভাবিক!
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সায়েন্সল্যাব এলাকা থেকে সিটি কলেজ সরিয়ে নেওয়ার দাবি ঢাকা কলেজের
ঢাকার সায়েন্সল্যাব মোড় এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূস: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে, এটি ত্রুটিপূর্ণ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “মানুষ জন্মগতভাবে উদ্যোক্তা।বিস্তারিত পড়ুন
আইসিটি অধ্যাদেশ অনুমোদন, ধারণ করা যাবে বিচার প্রক্রিয়ার অডিও-ভিডিও
‘‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪’’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনবিস্তারিত পড়ুন