রুদ্ধশ্বাস অভিযানের সমাপ্তি প্রায় ৮৮ ঘণ্টার পর
রাজধানীর মিরপুরের মাজার রোডের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে র্যাব। গত সোমবার রাত ১২টা থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান চলে শুক্রবার বিকাল চারটা পর্যন্ত। প্রায় ৮৮ ঘণ্টার এই রুদ্ধশ্বাস অভিযানের নেতৃত্বে ছিল র্যাব। সঙ্গে সহযোগিতা করেছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। দীর্ঘ এই অভিযানে দেশীয় ধারালো অস্ত্র, তাজা বোমা, বোমা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম এবং অনেকগুলো ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার বিকালে জঙ্গি আস্তানার পাশে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান মুফতি মাহমুদ খান এই অভিযান সমাপ্তির কথা জানান।
উদ্ধার অভিযান সমাপ্তি ঘোষণাকালে মুফতি মাহমুদ বলেন, ‘আমরা তিনটি সাইজের শক্তিশালী ১৭টি বোমা উদ্ধার করেছি। যার মধ্যে সাতটি বোমা ছিল ধ্বংসাত্মক সক্রিয়। ‘জঙ্গি’ আবদুল্লার একটি ফ্ল্যাটে পাওয়া ২৩টি ফ্রিজের দুইটিতে দুটি শক্তিশালী বোমার সংযোগ ছিল। আমরা ইম্প্রোভাইসড ওয়েতে সেগুলো উদ্ধার করি।’
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলেন, ‘আমরা এখনো পর্যন্ত যতগুলো অভিযান করেছি সেখানে ক্যামিকেল ছিল না। এখানেই এক কন্টেইনার বোমা তৈরির ক্যামিকেল পেয়েছি। আর বাকি ৮-১০টি কন্টেইনার বিভিন্ন দাহ্য পদার্থের। ৫০টি ক্যামিকেল বোম ছিল, যার মধ্যে সক্রিয় ২০টি। এখানে মোট ৩০টি হ্যান্ড গ্রেনেড, বিশাল আকৃতির বোমার কেসিং ৯টি উদ্ধার করা হয়েছে, যেগুলোতে বিস্ফোরক দ্রব্য দেয়া হলেই বোমা তৈরি হয়ে যাবে।’
র্যাব কর্মকর্তা জানান, বোমা তৈরির সরঞ্জামের উদ্ধার করা হয়েছে চারকোল ১২ কেজি, বিভিন্ন সাইজের স্প্রিন্টার ১৫ কেজি, ২টি মাস্ক যেগুলো আগুন বা ধোঁয়ায় পরা হয়। গান পাউডার ১০ কেজি, এসিড এক কন্টেইনার, সালফার তিন কেজি। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ধারালো ৬১টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলে তিনি জানান।
মুফতি মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের ধারণা আবদুল্লাহর সাথে আরও ছয়জনের মতো কাজ করতো। তার সাথের দুইজন মারা গেলেও বাকিরা রয়ে গেছে। এখনই কিছু বলা যাবে না। আমরা তাদেরকে ধরার চেষ্টা করছি।’
বাড়িটির অন্যান্য ফ্লাটের ভাড়াটিয়াদের থাকার ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে মুফতি মাহমুদ বলেন, ‘ভাড়াটিয়ারা তাদের আত্মীয়দের বাড়িতে আপাতত উঠেছে। আমার সাথে তাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ হচ্ছে। এখনই তাদের এই বাড়িতে উঠতে দেয়া যাবে না। বুঝতেই পারছেন বাড়িটি বিস্ফোরণে ডেমেজ হয়েছে। আমরা বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করে এই বাড়িটি নিরাপদ মনে করলে তাদের উঠতে দেব।’
কোনো এলাকায় সন্দেহভাজন কাউকে দেখা মাত্রই র্যাব অথবা কাছে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর পরামর্শ দেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখা এই প্রধান।
মিরপুরের মাজার রোডের ‘কমলপ্রভা’ নামের ওই বাড়িটিতে গত সোমবার রাতে জঙ্গি সন্দেহে অভিযান চালায় র্যাব। মঙ্গলবার ওই বাড়িতে ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহ সপরিবারে আছেন বলে শনাক্ত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার সঙ্গে মোবাইলে র্যাবের দফায় দফায় কথাও হয়। আবদুল্লাহ জানিয়েছিলেন তিনি আত্মসমর্পণ করবেন। র্যাব তাকে আত্মসমর্পণের সময়ও দিয়েছিল।
কিন্তু রাত ১০টার কিছু আগে পরপর তিনটি বড় ধরনের শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কক্ষে থাকা অন্যান্য বিস্ফোরক দ্রব্য চারিদিকে ছিটকে পড়ে আগুন ধরে যায়। বিস্ফোরণের পর ওই কেমিক্যালে আগুন লেগে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বুধবার সেখান থেকে পুড়ে বিবর্ণ হয়ে যাওয়া সাতটি খুলি ও কঙ্কাল উদ্ধার করে র্যাব। ধারণা করা হচ্ছে, ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহ বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সপরিবারে আত্মহত্যা করেন। আবদুল্লাহর সঙ্গে তার দুই সহযোগী, দুই স্ত্রী ও দুই সন্তানও পুড়ে কয়লা হয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরেনসিক রিপোর্ট পেলে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যাবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন