রেমিট্যান্সে নেতিবাচক ধারার কারণ ‘মধ্যপ্রাচ্য’
প্রবাসী আয় ধারাবাহিকভাবে কমছে। এর প্রধান কারণ গত কয়েক মাস ধরে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রাবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স কমতে শুরু করেছে। আর এখান থেকেই দুই-তৃতীয়াংশ রেমিট্যান্স অর্জন করে বাংলাদেশ।
জনশক্তি রফতানিতে মন্দাবস্থা, তেলের দরপতন, বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিকদের ফেরত আসা, মার্কিন ডলারের অবনমন এবং হুন্ডির মাধ্যমে টাকা আদান প্রদান বেড়ে যাওয়াই এর কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রেমিট্যান্স সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এ বছরের জানুয়ারি মাসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৭ কোটি ডলার। যা আগের মাসে (গত বছরের ডিসেম্বর) ছিল ৭৪ কোটি ডলার।
এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে ৬৬ কোটি ডলার, মার্চে ৭৪ কোটি, এপ্রিলে ৬৭ কোটি, মে তে ৬৯ কোটি, জুনে ৮২ কোটি, জুলাইতে ৫৯ কোটি, আগস্টে ৬৭ কোটি এবং সর্বশেষ সেপ্টেম্বরে মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ এ বছরের প্রথম নয় মাসে ৬১১ কোটি ৯৪ লাখ ডলার।
তবে মধ্যপ্রাচ্যের যে দেশটি থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসে সেটি সৌদি আরব। এখন পর্যন্ত দেশটি রেমিট্যান্সে শীর্ষস্থানে থাকলেও ধারবাহিকভাবে তা কমছে। চলতি বছরের জানায়ারিতে ২২ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৩ কোটি, মার্চে ২৬ কোটি, এপ্রিলে ২২ কোটি, মে তে ২২ কোটি এবং জুনে ২৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে আসে। কিন্তু জুলাই মাসেই ২৬ থেকে নেমে আসে ১৯ কোটি ডলারে। ঈদের আগের মাস হওয়ায় আগস্টে সেটি ২৩ কোটি ডলারে পৌছালেও সেপ্টেম্বরে তা নেমে এসেছে ১৭ কোটি ডলারে।
একইভাবে রেমিট্যান্স ধারাবাহিকভাবে কমছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেও।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয় ইউরোপের দেশগুলো থেকেও কমেছে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ। এ দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৭ কোটি ডলার। যা আগের মাস অক্টোবরে ছিল ৫১ কোটি ডলার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া, মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দরপতনে প্রবাসীদের মজুরি কমেছে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন জনশক্তি রফতানিতে একটা দৃশ্যমান স্থবিরতা রয়েছে।
তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন বর্তমানে অবৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ বেড়ে গেছে। যে কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আহরণে একটি প্রভাব পড়ছে। কারণ অবৈধ যদি টাকা পাঠানো হয়, সেখানে বাধাগ্রস্ত হয় বৈদেশিক মুদ্রার আহরণ।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র শুভংকর সাহা বলেন, ডলারের মান অবনমন, মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দামের পতন ও শ্রমশক্তি রফতানিতে ধীরগতিটাই প্রধান কারণ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্টের পর সেপ্টেম্বরেও কমে গেছে প্রবাসী আয়। এ মাসে প্রবাসীরা যে পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন তা আগস্ট মাসের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ এবং আগের অর্থবছরের একই মাসের চেয়ে প্রায় সাড়ে ২২ শতাংশ কম। এছাড়াও চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) হিসাবে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় ১৮ শতাংশ।
এদিকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
যে কারণে নতুন বছরের প্রথম দিনেও বিশ্ববাজারে বাড়লো স্বর্ণের দাম
নতুন বছরের প্রথম দিনেও স্বর্ণের দাম বেড়েছে আউন্সপ্রতি ১৮.২৫ ডলার।বিস্তারিত পড়ুন
অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে ২ ভারতীয় নাগরিক আটক
অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে ২ জন ভারতীয়বিস্তারিত পড়ুন
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এলো ডিসেম্বরে
একক মাস হিসেবে সদ্যবিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৬৩বিস্তারিত পড়ুন