রোজার দ্বিতীয় দিনেও বাজারে নেই সয়াবিন তেল

রোজার মাসখানেক আগে থেকেই বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দেয়, যা এখনও রয়েছে। রমজানের দ্বিতীয় দিনে এসেও সুপারশপ ও দোকানগুলোতে মিলছে না চাহিদামতো সয়াবিন তেল। এতে অনেক ক্রেতাকে হতাশা ব্যক্ত করতে দেখা গেছে। এ নিয়ে সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন সময়ে আশ্বাস দিলেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে ঢাকার বনশ্রী এলাকায় কথা হয় শফিকুল আলম (৪৫) নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবীর সঙ্গে। সারা এলাকা ঘুরেও এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতল খুঁজে পাননি তিনি।
শফিকুল বলেন, “এক বোতল সয়াবিন তেলের জন্য সারা বনশ্রী হন্যে হয়ে খুঁজেছি। শেষে উপায় না পেয়ে সরিষার তেল কিনে বাসায় যাচ্ছি।”
সরেজমিনে ঢাকার কারওয়ান বাজার, মালিবাগ, উত্তর বাড্ডা এবং শান্তিনগর বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ দোকানে নেই কোনো সয়াবিন তেল। দোকানের তাকগুলোতে পাম, সরিষা, তুষ এবং সূর্যমুখী তেল সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মালিবাগ বাজারের মুদি ব্যবসায়ী ইকবাল বলেন, “ডিলাররা চাহিদামতো তেল দিচ্ছে না। বারবার বলার পরেও তারা বলছেন যে কোম্পানি তাদের তেল সরবরাহ করছে না। আবার কোনো কোনো কোম্পানির থেকে শুধু তেল নিলে হবে না, তেলের পাশাপাশি সেসব কোম্পানির অন্যান্য পণ্য কিনতেও বাধ্য করা হচ্ছে।”
মালিবাগ বাজারে সয়াবিন তেলের খোঁজে আসা ক্রেতা সামিনা বলেন, “গলির দোকান থেকে সুপারশপ সব জায়গায় খুঁজেও সয়াবিন তেল পাওয়া যায়নি। এখন বাজারে এসেও মিলছে না তেল।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উত্তর বাড্ডা বাজারের এক মুদি ব্যবসায়ী জানান, বেশিরভাগ দোকানেই সয়াবিন তেল আছে। কিন্তু অনেকেই দাম বাড়ার আশায় তেল বিক্রি না করে মজুত করেছেন। এতে করে ক্রেতারা পড়ছেন বিপদে।
সত্যতার প্রমাণ মেলে মালিবাগের মেসার্স খোরশেদ স্টোরের সত্ত্বাধিকারী খোরশেদ হোসেনের থেকে। তিনি বলেন, “তেলের চলমান সংকট কৃত্রিম। যে যার মতো তেল ধরে রাখছে। অনেক দোকানদার অল্প অল্প করে তেল বিক্রি করলেও বাধ্যতামূলকভাবে সঙ্গে অন্যান্য পণ্য বিক্রি করছেন।”
নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে তেল কিনতে আসা ক্রেতা হাবিব জানান, পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেল কিনতে গেলে তার সঙ্গে বাধ্যতামূলক দুই কেজির আটা এবং আধা কেজির সুজি কিনতে হচ্ছে। অনেকে আবার সুযোগ পেয়ে মোড়কের দামের থেকে বেশি দামে তেল বিক্রি করছে।
অবস্থাসম্পন্ন অনেক ক্রেতা সয়াবিন না পেয়ে ১,৬০০ টাকা দরে পাঁচ লিটারের সূর্যমুখী কিংবা ১,৪০০ টাকা দরে পাঁচ লিটারের সরিষার তেল কিনছেন। যাদের সামর্থ্যে কুলাচ্ছে না তারা ৮৫০ টাকা দরে কিনছেন পাঁচ লিটার বোতলের পাম ওয়েল।
এদিকে সোমবার মোহাম্মদপুর টাউনহল কাঁচাবাজার পরিদর্শন শেষে সয়াবিন তেলের সংকট স্বাভাবিক না হওয়া প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানান, আগামী দুই দিনের মধ্যে সয়াবিন তেলের সরবারাহ স্বাভাবিক হবে। এছাড়া বাজারে পাম তেল সরকার নির্ধারিত দামের থেকেও কম দামে বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেলের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যের দামও ক’দিনের মধ্যে স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসবে বলে প্রত্যাশা করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এ উপদেষ্টা।
এর আগে গেল ১ মার্চ রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, “খোলা সয়াবিন তেলের দাম একটু কমতে শুরু করেছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ যাতে ঠিক পর্যায়ে থাকে, সেটার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।”
সয়াবিন তেলের সংকট নিয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, “আমরা প্রতিনিয়ত সয়াবিন তেলের সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। খোলা ও বোতলজাত দুই ধরনের সয়াবিন তেলেরই। ইতোমধ্যে খোলা সয়াবিন তেলের দাম একটু কমা শুরু হয়েছে। আশা করছি, সামনে সরবরাহ পরিস্থিতি আরও ভালো হলে দামও একটা ভালো যায়গায় যাবে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে, মার্কেট থেকে এটা উধাও হয়ে গেছে বলে কেউ কেউ অভিযোগ করছেন। আমরা চেষ্টা করছি সরবরাহ যাতে ঠিক পর্যায়ে আসে, সবার জন্য যাতে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকে।”
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

টানা ৩ দিন কমতে পারে দিন ও রাতের তাপমাত্রা
সারাদেশে আগামী ৩ দিন টানা দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমতেবিস্তারিত পড়ুন

ফেনীতে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ
ফেনীতে একটি হাসপাতালে রোগীর জরায়ুতে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায়বিস্তারিত পড়ুন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: ট্রাম্পের ২৯ মিলিয়ন ডলার নিয়ে করা দাবি সত্য নয়
ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাংলাদেশের দুই ব্যক্তির মালিকানাধীন কোনোবিস্তারিত পড়ুন