রোহিঙ্গাদের ওপরে হত্যা-গণধর্ষণ চালিয়েছে মিয়ানমার আর্মি: জাতিসংঘ
মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের উপর গণহত্যা এবং গণধর্ষণ চালিয়েছে এবং তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। গত বছরের অক্টোবর মাস থেকেই ‘জাতিগতভাবে নির্মুলের’ উদ্দেশ্যে চলে আসা এই বর্বরতা মানবতাবিরোধী অপরাধ বলেও বিবেচিত হতে পারে।
শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে শিশু, নারী এবং বয়োবৃদ্ধদের হত্যা, পলায়নরতদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ, সম্পূর্ণ গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া, ব্যাপকহারে আটক, ব্যাপক ও পরিকল্পিত ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা, ইচ্ছাকৃতভাবে খাদ্য ও খাদ্য উৎসের ধ্বংসসাধনের মতো অপরাধের বর্ণনা পাওয়া যায় বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়।
জাতিসংঘের চারজন তদন্তকারী কর্মকর্তা গত মাসে ২২০ জন আক্রান্ত রোহিঙ্গার এভং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করে, যারা রাখাইন থেকে কক্সবাজার পালিয়ে এসেছে।
সরাকরি বাহিনী হেলিকপ্টার থেকে গুলি ও বোমাবর্ষণ করে এলাকাটি (রাখাইন) খালি করার মতো ঘটনাও ঘটে, যাতে শত শত নিহত হয় বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
মানবাধিকার বিষয়ক ইউএন হাইকমিশনার জেইদ রাদ আল হুসেইন এক বিবৃতিতে বলেন, রোহিঙ্গা শিশুদের প্রতি যে মারাত্মক নির্মমতা সংঘটিত হয়েছে তা অসহনীয়।
গত বছরের অক্টোবরের ৯ তারিখে মিয়ানমার সীমান্তে পুলিশ চৌকিতে হামলার পর থেকেই রাখাইনে অভিযান চালায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এর ফলে রাখাইন রাজ্যের ৬৬ হাজারের মতো মুসলিম প্রধান রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। সম্প্রতি ইউএন মানবাধিকার সংক্রান্ত অফিস সংখ্যাটি ৬৯ হাজার বলে জানায়।
রাষ্ট্রহীন এই রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ১১ লাখের মতো মানুষ রাখাইনে বসবাস করে, এদের প্রতি বৈরিতা মায়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যকার দীর্ঘ বিরোধের বিষয়।
মিয়ানমারের প্রভাবশালী নেতা নোবেল জয়ী অং সান সু কি এবং দেশটির সরকারও এই সকল অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। জঙ্গিবাদ বা বিদ্রোহ দমন করতেই মিয়ানমার সরকার অভিযান চালাচ্ছে বলে তাদের দাবি।
জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এই প্রতিবেদনের বিষয়ে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। দেশটির প্রেসিডেন্ট তিন কিয়াও এর মুখপাত্র জানান, সাম্প্রতিক এই প্রতিবেদনটি তারা এখনও দেখেননি। আমরা এই প্রতিবেদন পড়ে দেখবো এবং পরে জবাব দেবো।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতন সাম্প্রতিক সময়ের বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর একটি। ড. মোহাম্মদ ইউনূস সহ বেশ কয়েকজন নোবেল জয়ী এর বিরুদ্ধে তাদের বিবৃতি দিয়েছেন। বেশকয়েকটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনও রোহিঙ্গাদের উপর সরকারি বাহিনীর বর্বর নির্যাতনের প্রমাণ হাজির করে। সেখানে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত থাকাও সরেজমিনে সেখানকার মূল অবস্থা পর্যবেক্ষন করাও সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতেও মিয়ানমার সরকারের প্রতি সম্প্রতি আবারও আহ্বান জানায় বাংলাদেশ সরকার।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন