লালন উৎসবে নজরদারিতে গাঁজা সেবন ও নারী-পুরুষের একত্রে রাতযাপন

লালন স্মরণোৎসব অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন বা বিক্রি সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। এছাড়া নারী ও পুরুষেরা এক সঙ্গে দিন-রাত্রি যাপন করতে পারবেন না। এ দুই বিষয় নজরদারিতে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসককেও এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার লালন স্মরণোৎসবকে নিয়ে দেশের শীর্ষ এক গোয়েন্দা সংস্থা গেল মাসে অগ্রিম প্রতিবেদন পাঠায়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, লালনের স্মরণোৎসব অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন, বিক্রি এবং নারী- পুরুষ এক সঙ্গে দিন-রাত্রি যাপন করায় প্রকৃত লালন ভক্তদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়ে যেকোনো সময় সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অনুষ্ঠানে জঙ্গি সংগঠনগুলো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে।
বিশেষ সংস্থার এমন মন্তব্যের ভিত্তিতে লালনের স্মরণোৎসব নজরদারিতে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১১ থেকে ১৩ই মার্চ পর্যন্ত লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বাউল সম্রাট লালন শাহ স্মরণে প্রতি বছর লালন স্মরণোৎসব এবং লালন তিরোধান দিবস উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করা হয়। লালন ভক্তরা মনে করে, লালনের জীবদ্দশায় লালন ফকির তার আখড়ায় ফাল্গুনের শেষে বা চৈত্রের শুরুতে দোল পূর্ণিমায় সাধুসঙ্গ করতেন।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর দোল পূর্ণিমাতে ‘লালন স্মরণোৎসব’ নামে ৩ থেকে ৫ দিনের একটি অনুষ্ঠান পালিত হয়। এবারের লালন স্মরণোৎসব অনুষ্ঠানটি হবে তিন দিনব্যাপী এবং ১লা কার্তিক লালনের পরলোকগমন দিবস উপলক্ষে ৫ দিনব্যাপী লালন তিরোধান দিবস পালিত হবে। এ দুই অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া জেলাসহ সারা দেশ এবং পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে লালন ভক্ত, শিল্পী, আলোচক ও বিশিষ্ট গবেষকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা লালন একাডেমিতে আসেন। প্রতিটি অনুষ্ঠানে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। এসব অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের বরেণ্য আলোচক, ব্যক্তি, শিল্পীরা লালনের উপর আলোচনা ও লালন সংগীতসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকেন।
বিশেষ প্রতিবেদনে এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলা হয়, এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে লালন অনুসারীদের মধ্যে অনেকেই গাঁজা সেবন ও গাঁজা বিক্রি করে থাকে। প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন এবং গাঁজা বিক্রি করায় স্থানীয় এলাকাবাসী এবং প্রকৃত লালন ভক্তদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ‘লালন স্মরণোৎসব’ এবং ‘লালন তিরোধান দিবস’ অনুষ্ঠানে লালনের অনুসারী মহিলা ও পুরুষ এক সঙ্গে লালন একাডেমি প্রাঙ্গণে দিন-রাত্রি যাপন করে থাকে। বাংলাদেশ একটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হওয়ায় নারী-পুরুষ এক সঙ্গে থাকার বিষয়টি স্থানীয় জনগণসহ একশ্রেণির লালন ভক্তরা নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন।
এর আগে ২০০০ সালে লালন একাডেমির পরিচালনা পর্ষদের হস্তক্ষেপে গাঁজা সেবন নিষিদ্ধ করা হলে কিছু সংখ্যক লালন অনুসারী লালন মেলা প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় মেলা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। পরে লালন একাডেমি কর্তৃপক্ষ গাঁজা সেবন নিষিদ্ধ প্রত্যাহার করে নেন। এছাড়া ২০১১ সালে সাবেক জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি বনমালী ভৌমিক লালন স্মরণোৎসব অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন এবং গাঁজা বিক্রি নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এমজমিন
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ব্যাংকক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদবিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকবির ম্যুরাল থেকে কালি মুছে দিল উপজেলা প্রশাসন
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরালে কালি দিয়ে মুখবিস্তারিত পড়ুন

ফখরুল: ইউনূস–মোদির বৈঠক আশার আলো দেখাচ্ছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন