লিভার সংক্রান্ত জটিলতা কমে যে ফলের কষে!
আমাদের দেশে পেঁপে খুবই জনপ্রিয় ফল। শুধুমাত্র ফল নয় সবজি হিসেবেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এর প্রচলিত নাম পেঁপে। ইউনানীতে বলা হয় পাপিতা, আরানড খরবূযা। আয়ুর্বেদিক নাম অমৃততুম্বী। পেঁপে একটি সব্জি (Carica papaya) যা সারাবছর পাওয়া যায়।
পরিচর্যা করলে সব ধরনের মাটিতেই পেঁপে চাষ করা যায়। সাধারণত এক বছরের মাথায় পেঁপে গাছে ফল ধরে। একটি গাছে বছরে ২০ থেকে ৫০টি ফল ধরে।
গবেষকের মতে, পেঁপে কাঁচা হোক বা পাকা, দুটোতেই এর উপকারের মাত্রা সীমাহীন। কাঁচা পেঁপের কষ বাতাসার সঙ্গে খেলে লিভার সংক্রান্ত নানা সমস্যা দূর হয়। এর সঙ্গে খিদে বাড়ে। জন্ডিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
অপরদিকে পেঁপের রসে এমন কিছু উপাদান আছে যা আমাশয়, অশ্ব, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সক্ষম।
পেঁপে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ একটি ফল। কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে পেপেইন নামক হজমকারী দ্রব্য থাকে। অজীর্ণ, কৃমি সংক্রমণ, আলসার, ত্বকে ঘা, কিডনি ও ক্যান্সার নিরাময়ে কাজ করে। লিভারের জটিল সমস্যা দূর করে। পাচন শক্তি বাড়ায়।
অপরদিকে ত্বকে যত্নেও আপনি পাকা পেঁপের প্রলেপও মুখে লাগাতে পারেন। কাঁচা পেঁপের কষ ঘা শুকাতে সাহায্য করে। এছাড়া পেঁপে খেলে শরীর থেকে দূষিত বায়ু সহজেই বেরিয়ে যায়।
চিকিৎসকের মতে, পেঁপেতে ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘বি’ এবং ভিটামিন ‘সি’ আছে। এ ছাড়া কাঁচা বা পাকা পেঁপেতে লৌহ ও ক্যালসিয়াম আছে। হজমে সহায়ক পেঁপে কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থাতেই শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। শুধু পেঁপে খেলেই হবে না, এ ফলের কষ ও আঠায় রয়েছে নানা ওষুধি গুণ। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :
লিভার বড় হলে : এ অবস্থা হলে ৩০ ফোঁটা পেঁপের আঠাতে এক চামচ চিনি মিশিয়ে এক কাপ পানিতে ভালো করে নেড়ে মিশ্রণটি সারাদিনে ৩ বার খেতে হবে। ৪/৫ দিন পর থেকে লিভারের বৃদ্ধিটা কমতে থাকবে। এটা সপ্তাহে ২ দিন খাওয়াই ভালো। এভাবে ১ মাস খেলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
একজিমায়: যে একজিমা শুকনা অথবা রস গড়ায় না, সেখানে ১ দিন অথবা ২ দিন অন্তর পেঁপের আঠা লাগালে ওটার চামড়া উঠে পাতলা হয়ে যায় ও রোগ সেরে যায়।
ক্ষুধা ও হজম শক্তিতে : প্রতিদিন সকালে ২/৩ ফোঁটা পেঁপের আঠা পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। এতে ক্ষুধাও বেড়ে যাবে এবং হজম শক্তি বাড়বে।
পেট ফাঁপায় : কয়েক টুকরো পাকা পেঁপে, আর সামান্য লবণ এবং একটু গোলমরিচের গুড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। এতে পেট ফাঁপা কমে যাবে।
জ্বরে : দেড় চামচ পেঁপে পাতার রস এক কাপ পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। এতে জ্বর, বমি, মাথার যন্ত্রনা, শরীরে দাহ কমে যাবে। জ্বর কমে গেলে আর খাওয়ার প্রয়োজন নেই।
রক্ত আমাশয় : প্রতিদিন সকালে কাঁচা পেঁপের ৫/৭ ফোঁটা আঠা ৫/৬ টি বাতাসার সঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে নিন। ২/৩ দিন খাওয়ার পর রক্তপড়া কমতে থাকবে।
ক্রিমি হলে : যে কোনো প্রকারের ক্রিমি হলে, পেঁপের আঠা ১৫ ফোঁটা ও মধু ১চা চামুচ একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। এরপর আধা ঘণ্টা পরে উঞ্চ পানি আধ কাপ খেয়ে তারপরে ১ চামুচ বাখারি চুনের পানি খেতে হয়। এভাবে ২ দিন খেলে ক্রিমির উপদ্রব কমে যাবে।
দাদ রোগ : কাঁচা পেঁপের আঠা দাদে লাগাতে হবে। পেঁপের আঠা পর পর তিন দিন ব্যবহার করলই দাদ সেরে যাবে।
উকুন হলে : ১ চামুচ পেঁপের আঠার সঙ্গে ৭/৮ চামচ পানি মিশিয়ে ফেটিয়ে নিতে হবে। তারপর ওই পানি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর মাথা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে ২ দিন ব্যবহার করলে উকুন মরে যায়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন