শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

‘শঙ্খচিল’ : র‍্য্যাডক্লিফ রেখার দায় আর গৌতম ঘোষের মেলোড্রামা

“তেলের শিশি ভাঙলো বলে খুকুর ‘পরে রাগ করো
তোমরা যে সব বুড়ো খোকা, ভারত ভেঙে ভাগ করো
তার বেলা?”

অন্নদাশঙ্করের বুড়ো খোকারা যেই হোন না কেন, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র ‘শঙ্খচিল’-এ গৌতম ঘোষের সমস্ত রাগ যেন এক র‍্য্যাডক্লিফ সাহেবের ওপর। সার্বভৌম রাষ্ট্র দুটির কোনো দায় নেই। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্তাটির মুখে শুরুর প্রায় মুখবন্ধের মতো অংশটিতে বলিয়ে নিলেন, ‘ইটস আ ফোর্সড এলওসি’। ফেলানির আদলে কাঁটাতারে মরে থাকা এক বাংলাদেশি কিশোরের মরদেহ নিয়ে জবাবদিহিতায় এও বলতে শোনা গেল, ছেলেটিকে সীমান্তরক্ষীরা মারেনি। মেরেছে র‍্য্যাডক্লিফ সাহেবের এই চাপিয়ে দেওয়া ‘বর্ডার’।

ফেলানি বা তার মতো আরো অসংখ্য সীমান্তহত্যা নিয়ে মনে কিছু ক্ষোভ যদি এখনো বেঁচেবর্তে থাকে, এই ব্যাখ্যার পর ভুলেই যান। নির্জীব কাঁটাতারের বেড়া আর শুষ্ক ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নেওয়া র‍্য্যাডক্লিফ সাহেবের মুণ্ডুপাতে আর কি আসবে যাবে বলুন!

কিন্তু যত ‘ফোর্সড’ই হোক, এই এলওসিই যে এখন সত্য। গৌতমও বাকি পুরোটা ছবিতে তাই দেখাতে চাইলেন অবশ্য। রীতিমতো কাঁদুনি গেয়েই।

আর তা করতে শুরুতেই ঋত্বিক ঘটককে স্মরণে নিয়ে দেশভাগের উত্তরাধিকার স্বীকারের সাথে সাথে মেলোড্রামার ডিসক্লেইমারও দিয়ে নিলেন কি?

মুশকিল হলো, ঋত্বিকের মেলোড্রামা যেখানে সত্যের অভিঘাতটাকে মর্মমূলে গেঁথে দিতে মোক্ষম হাতিয়ার হয়ে ওঠে, গৌতমেরটা সেখানে স্রেফ সেন্টিমেন্টাল ‘উইপি’ হয়ে থেকে যায়।

এইখানটায় ভারতীয় বাংলা চ্যানেলে দেখানো টিভি সিরিয়ালের উপাদানগুলোকেই একটু গড়েপিটে নিয়ে হাজির করলেন পরিচালক। আর মেলোড্রামার যে পশ্চিমা ফর্মুলাটা আছে; যেখানে পপুলার ফিল্মের অন্যতম উপাদান হিসেবে মেলোড্রামাকে জরুরি মানা হয়, চরিত্রগুলোর ওপর প্রত্যাশিত নৈতিকতা আরোপ করা হয়, ছবির বয়ানেও সেই নৈতিকতারই জয়গান গাওয়া হয় শেষ অব্দি; মোটা দাগে তার ওপরই ‘শঙ্খচিল’-এর চিত্রনাট্য দাঁড়িয়ে – চরিত্রায়ন থেকে শুরু করে ন্যারেটিভের চলন, আবেগীয় নির্মাণ ও উত্তরণে।
ছবির কাহিনি এগোয় বাংলাদেশের সাতক্ষীরা অঞ্চলের ইছামতি নদীর তীরের এক মুসলমান স্কুল শিক্ষক মুনতাসির চৌধুরী বাদল, তার স্ত্রী লায়লা আর একমাত্র কন্যা রূপসাকে ভর করে। নদীর ওপারটায় ভারতের টাকি শহর। স্থল আর নৌ সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ। সবাই একেক করে জড়াতে থাকে গল্পের সঙ্গে। নদীর এপার আর ওপারও তাতে যুক্ত হয়। কিন্তু ‘শঙ্খচিল’ আর পরিযায়ী পাখির সারি সীমান্ত পেরোয় যে মুক্ত ডানায়, সীমান্ত রেখার দুপারের মানুষের জন্য তো বিষয়টি তেমন নয়। আর সেটি নিয়েই ঘনিয়ে ওঠে গৌতম ঘোষ আর সায়ন্তনী পূততুণ্ডের যৌথ কলমে ‘শঙ্খচিল’-এর গল্প।

দুপারের মৈত্রী দেখাতে কিন্তু সম্ভবপর সবই করলেন পরিচালক। পুরো ছবিতে তাই ভাল মানুষ আর ভালমানুষীর ছড়াছড়ি। দেখতে দেখতে আবেগে বুক ভারি হয়ে আসে যেন। বাকিটুকু সারেন খুব সরল প্রত্যাশিত পথে এগুনো প্যাথোস দিয়ে। সবশেষে চূড়ান্ত সংক্রান্তি। চোখ মুছে ক্যাথারসিসের হৃষ্টতা নিয়ে ঘরে ফেরেন দর্শক।

কিন্তু খটকা একটু থেকে যায়। এই ইনিয়ে বিনিয়ে গল্প বলায় ছবি ঝুলে যেতে থাকে প্রথমার্ধেই। মধ্য বিরতিতে এসে মনে হতেই পারে, সবে অর্ধেকটা! (সামনে ও পেছনের সারির একাধিক দর্শককে কাছাকাছি মন্তব্য করতে শুনেছিও)। নেহাত টিকেট কেটে ঢোকা, তাই!
আদতে দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই ছবির মূল নাটকীয়তা শুরু। কাহিনি গতিও পায় এখান থেকেই। পপুলার ছবির মেলোড্রামার কাঁধেই যখন ভর করতে হলো, দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত দর্শক ধরে রাখাটাই তখন পরিচালকের একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে, বলাই যায়।

ভারতীয় জনপ্রিয় ধারার ছবির ফর্মুলা মূল্যবোধের ঢাকটাও ঠিকঠাক পেটালেন পরিচালক, যাতে করে দর্শকের আজন্ম লালিত মূল্যবোধে স্বস্তির হাওয়াটা লাগে। সাময়িক বিচ্যুতি থেকে শেষবেলায় বেশ পিঠ সোজা করে দাঁড়ানো। নীতি গদগদ কণ্ঠে নায়কের মূল্যবোধের ধ্বজা ঊর্ধ্বে তুলে ধরা। আর হ্যাঁ, যেহেতু সীমান্ত ইস্যু, অবশ্যই ‘পলিটিক্যালি কারেক্ট’ থাকা। আইনকে নিজের গতিতে চলতে দেওয়া।

শিথিল চিত্রনাট্যের পর অভিনয়েও ‘শঙ্খচিল’ অস্বস্তিকররকম ভারসাম্যহীনতায় ভুগেছে। বাংলাদেশ আর ভারতের অভিনয়শিল্পীদের অভিনয়ে একটা স্পষ্ট পার্থক্য, শেষবিচারে যেটা অসঙ্গতিই হয়ে দাড়ায়। কলকাতার প্রসেনজিৎ থেকে শুরু করে বাকি প্রায় সবারই অভিনয়ে অতি নাটকীয়তা প্রবল, যা ‘শঙ্খচিল’- এর মেলোড্রামাকে সঙ্গত করছে ভালোভাবেই। তুলনায় বাংলাদেশের কুসুম সিকদার বা মামুনুর রশিদের অভিনয় সহজ, স্বাভাবিক। রূপসা চরিত্রে সাঝবাতির (টাইটেল কার্ডে এভাবেই লেখা, চন্দ্রবিন্দু ছাড়া) ‘ল’ এর উচ্চারণ বড়ই ইংরেজি প্রভাবযুক্ত।

সংলাপও গোল পাকিয়েছে বেশ। ইছামতির এপারে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা অঞ্চলের ভাষা আর উচ্চারণ কোনোটাই ঠিকঠাক আসেনি। বরং বেশ একটা বিভ্রান্তি তৈরি হয় একেক সময় একেক রকম বাচনভঙ্গিতে। সেই সঙ্গে এদেশীয় মুসলিম নাম আর প্রচলিত আরবি-ফার্সি শব্দগুলো পশ্চিমবঙ্গের ঊর্দুকরণে পাল্টে নেয়ার ‘বিখ্যাত’ প্রবণতাটি তো আছেই। সেকারণেই বাদল চরিত্র রূপায়নকারী প্রসেনজিৎকে তার স্ত্রী লায়লার নাম উচ্চারণ করতে শোনা যায় ‘লেয়লা’। এক্ষেত্রে এদেশীয় সংলাপ অংশে এখান থেকে একজন উপদেষ্টা নেয়াই হয়তো সঙ্গত হতো।
সঙ্গীত করেছেন পরিচালক নিজেই। একেবারেই উতরোয়নি। সিনেমাটোগ্রাফি সাধারণ, আলাদাভাবে চোখে পড়ে না। শিল্পনির্দেশনা ভালো।

ছবির শুরুতে প্রিল্যুডের মতো যে অংশটিতে বিজিবি একজন সাংবাদিককে (শাহেদ আলী) ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে মিলেমিশে থাকা ঘরবাড়িগুলো দেখায়, সব মিলিয়ে সে অংশটিই সম্ভবত দর্শকের অবচেতনে টিকে যাবে কিছু সময়।

শেষকথায়, কেউ যদি ‘পার’ এর গৌতম ঘোষকে খুঁজতেই হলে যান, নিদেনপক্ষে ‘পদ্মা নদীর মাঝির’ পরিচালককে, নির্ভেজাল হতাশা জুটবে। আর সাম্প্রতিক অতীতে এই ধারাবাহিক হতাশার দৃষ্টান্ত থেকে আরেকটা কথা বলতে ইচ্ছে করে, ঠিক সময়ে অবসরে যাওয়ার বিষয়টা কিন্তু ‘বুড়ো খোকা’রা গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখতে পারেন।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবা

শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, বিশেষ ধর্মীয় দিন উপলক্ষে ফটোশুটেবিস্তারিত পড়ুন

শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাস করেছেন সাকিব-ফেরদৌস, পারেননি সুমনসহ অনেকে

আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করাবিস্তারিত পড়ুন

আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?

গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন

  • বাবা দিবসে কাজলের মেয়ে শৈশবের ছবি পোস্ট করলেন
  • চলে গেলেন অভিনেত্রী সীমানা
  • শাকিবের সঙ্গে আমার বিয়ের সম্ভাবনা থাকতেই পারে: মিষ্টি জান্নাত
  • এবার পরিবারের পছন্দে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন শাকিব খান
  • বুবলী আগে থেকেই বিবাহিত, সেখানে একটি মেয়েও আছে: সুরুজ বাঙালি
  • এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা
  • অভিনেতা ওয়ালিউল হক রুমি মারা গেছেন
  • এক রোমাঞ্চকর অসমাপ্ত ভ্রমণ গল্প
  • পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন
  • শাকিব ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পুরুষের জায়গা নেই: বুবলী
  • সিনেমা মুক্তি দিতে হল না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নায়ক
  • বিশাখাপত্তনমে কয়েকদিন